শুশুনিয়া, 17 অক্টোবর : কাজের অভাবে যখন দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে তখন বাঁকুড়ায় কর্মসংস্থান জোগাচ্ছে শুশুনিয়ার পাথর শিল্প । আর তাই এলাকার অনেকেই এই কাজ শেখার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে । এই কাজের সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের বক্তব্য, যদি সরকার সাহায্য করে তাহলে এই শিল্পের প্রসারের পাশাপাশি অনুন্নত এলাকার অনেক বেকার মানুষকে এই কাজে যুক্ত করা যাবে ।
শুশুনিয়া পাহাড় থেকে পাথর নিয়ে তাতে নানারকম কারুকার্য করতেন শিল্পীরা । তাদের হাতের কাজের দক্ষতায় এক একটা পাথর রূপ পেত সুন্দর স্থাপত্যের । তার মধ্যে দেব দেবীর মূর্তি থেকে ঘর সাজানোর জিনিস সবই থাকত । প্রথমদিকে এই শিল্পের প্রসার ও জনপ্রিয়তা ছিল না ঠিকই । কিন্তু এখন এই শিল্প থেকেই মাসে প্রায় 15 হাজার টাকা করে রোজগার করেন এই শিল্পীরা ।
কিন্তু হঠাৎ করে এই শিল্পের প্রসার হল কী করে ?
শিল্পীরা জানাচ্ছেন, ষাটের দশকে সরকারের তরফে এই শিল্পের প্রতি আগ্রহী ও এই কাজে যুক্ত মানুষদের এক বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় । তারপর থেকেই শুরু হয় এই পাথর শিল্পের প্রসার । পাশাপাশি এই পাথর শিল্পের প্রসারের পিছনে কাজ করছে একটা বৃত্ত । কিন্তু সেটা কী রকম ? বর্তমানে শুশুনিয়া গ্রামে প্রায় একশো মানুষ এই পাথর শিল্পের সঙ্গে যুক্ত । যাদের মধ্য তিনজন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত । পাশাপাশি একাধিক শিল্পী রাজ্য সরকারের বিশেষ পুরস্কার প্রাপ্ত । এই শিল্পীদের থেকে বহু নবাগত কাজ শিখছে । তারপর নিজেরাই স্বতন্ত্রভাবে এই শিল্পের কাজ করছে । আবার তাদের থেকে অনেকে কাজ শিখছে । এইভাবেই মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে শুশুনিয়ার পাথর শিল্প ।
বর্তমানে শুশুনিয়া পাহাড়ের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেখান থেকে পাথর নেওয়া হয় না ঠিকই । তবে, ওড়িশা, তামিলনাড়ু ও রাজস্থান থেকে পাথর আমদানি করে তৈরি হয় নিখুঁত স্থাপত্য । এখন শিল্পীদের শুধু একটাই অনুরোধ । অনুন্নত এলাকার মানুষকে এই শিল্প নিয়ে ওয়াকিবহাল করতে সরকারি তরফে ফের একটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে তাহলে আগামী দিনে রাজ্যে আরও কর্মসংস্থান হতে পারে ।