শালতোড়া, 10 জুন : একটা নির্বাচন মানেই মানুষের প্রতিনিধি বাছাইয়ের প্রতিযোগিতা ৷ আর নির্বাচনের প্রার্থী মানেই ঝকঝকে পোশাক পরে, হুড খোলা গাড়ি থেকে নমস্কার করে ভোট চাওয়া ৷ অন্তত এমন একটা ছবি দেখতেই অভ্যস্ত আমজনতা। কিন্তু সব কিছুরই ব্যাতিক্রম থাকে ৷ এ ক্ষেত্রেও তাই ৷ ব্যতিক্রমী এই মানুষটি হলেন বাঁকুড়ার শালতোড়া বিধানসভা এলাকার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি ৷
পাকা বাড়ি, দামি গাড়ি বা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা, কোনওটাই নেই চন্দনার ৷ প্রত্যন্ত কেলাই গ্রামে তাঁর সম্বল শুধু একটা একচালা চটা-ফাটা বাড়ি আর কয়েকটা গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ৷ স্বামী পেশায় রাজমিস্ত্রি ৷ দিন আনা, দিন খাওয়া মানুষ ৷ অভাবের তাড়নায় বহুবার স্বামীর সঙ্গে জোগানের কাজে হাত লাগাতে হয়েছে চন্দনাকেও ৷ সেই চন্দনাই এবার বিধানসভায় কথা বলবেন শালতোড়ার মানুষের হয়ে ৷
দু’মাস আগে বাড়ি বাড়ি দৌড়ে বেড়িয়েছেন চন্দনা ৷ দুঁদে রাজনীতিকের মতোই চেয়েছেন ভোট ৷ বারবার মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আমি যে তোমাদেরই লোক ৷’’ মানুষও তাঁর উপর আস্থা রেখেছে ৷ আর তাই আজ তিনি মানুষের ভোটে জিতে বাংলার বিধানসভার একজন সৈনিক ৷
এত বড় একটা দায়িত্ব যখন কাঁধে এসে পড়েছে, তখন তো ব্যস্ততা বাড়বেই ৷ কিন্তু তা বলে তো আর ঘর, সংসার ফেলে রাখা যায় না ৷ বিধায়কের দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি চন্দনা তাই গৃহকর্ত্রীর কাজও সামলে যাচ্ছেন পুরোদস্তুর ৷ তিন সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে তাঁর সংসার ৷ সকাল হলেই স্বামীকে বেরিয়ে পড়তে হয় রুজির টানে ৷ তাই চন্দনাকে একা হাতেই সামলাতে হয় ঘরকন্না ৷
রাজনীতির শুরুটা হয়েছিল গত পঞ্চায়েতের ভোটের মধ্যে দিয়ে ৷ শুরুতেই অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল ৷ তবে হাল ছাড়েননি চন্দনা ৷ রাজনীতির পাঠ শিখেছেন একটু একটু করে ৷ সেই শেখা এখনও চলছে ৷ তিনি জানান, শালতোড়ার মানুষের অনেক ভালোবাসা পেয়েছেন ৷ সেই ভালবাসাকে পাথেয় করেই তিনি আজ বিধায়ক ৷ দায়িত্ব এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন :মুখোমুখি শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি
চন্দনা জানিয়েছেন, বিধায়ক হিসেবে তাঁর প্রথম কাজ মানুষের ন্যায্য অধিকার পাইয়ে দেওয়া ৷ রাস্তাঘাট, পানীয় জলের ব্যবস্থা করা ৷ এলাকাবাসীর সমস্ত চাহিদা, আশা, আকাঙ্ক্ষা বিধানসভায় তুলে ধরতে চান চন্দনা ৷ জোর গলায় তুলতে চান মেহনতি মানুষের দাবি ৷ কারণ, তিনি সমাজের সেই খেটে খাওয়া শ্রেণিরই প্রতিনিধি ৷