বাঁকুড়া, 20 এপ্রিল : খোয়াই । শব্দটা কানে এলে প্রথমেই মনে পড়ে শান্তিনিকেতনের কথা । মনে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের গনগনি ডাঙ্গার কথা । এই দু'জায়গাতেই খোয়াইয়ের চড়াই উতরাই দেখতে ফি বছর দেশ বিদেশের কত পর্যটকই না হাজির হয় । কিন্তু পর্যটকের দল জানেই না এ রাজ্যেই রয়েছে আরও এক বিখ্যাত খোয়াই । বাঁকুড়ার জয়পন্ডা নদীর তীরে থাকা সে যেন শিল্পীর হাতে আঁকা এক রঙিন ক্যানভাস ।
বাঁকুড়ার বিখ্যাত টেরাকোটা গ্রাম পাঁচমুড়াকে পিছনে ফেলে কখনও জঙ্গলে ঢাকা কালো পিচের রাস্তা আবার কখনো ইউক্যালিপটাসের ছায়ায় অলস অজগরের মতো পড়ে থাকা লাল মোরাম বিছানো রাস্তা ধরে কিলোমিটার সাতেক এগোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় ধাদকিডাঙ্গায় । শহুরে ব্যস্ততা নেই , নেই কোলাহল । সময় যেন থমকে দাঁড়িয়ে আছে এই উন্মুক্ত প্রান্তরে । সবুজ বনানীর মর্মর, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক আর পাখির মিষ্টি কলতান যেন এই প্রান্তরে ঘোষণা করে চলেছে প্রাণের অস্তিত্বটুকু । এই প্রান্তরেরই একদিকে রুপোলি ফিতের মতো বয়ে চলেছে জয়পন্ডা নদী ৷ ঠিক যেখানটায় বাঁক নিয়েছে জয়পন্ডা, সেখানে গেলেই দেখা মিলবে প্রকৃতির এক অপরূপ সৃষ্টির । এই প্রান্তরে মরচে ধরা লাল মোরামের মাঝে মাঝে কোনও এককালে অস্তিত্ব ছিল খড়িমাটির স্তরের । সেই খড়িমাটির স্তর জলের স্রোতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে তৈরি করেছে এক অপরূপ সৌন্দর্যের । চোখ জুড়ানো সেই রূপ, নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করাই কঠিন ।