বাঁকুড়া, 6 জুন : নির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়েছে মাসখানেক আগে ৷ তবে রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা থামার নাম নেই ৷ নারদ মামলায় সিবিআইয়ের সক্রিয় হওয়া থেকে শুরু করে মুখ্যসচিব বিতর্ক, কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত বারবার সামনে এনেছে ৷ এরই মধ্যে হেস্টিংসের বিজেপি কার্যালয়ের সামনে বোমা উদ্ধার, শুভেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ত্রিপল চুরির মামলা ৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজ্য বিজেপি ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছে ৷ এমনকী শুভেন্দু ঘনিষ্ঠকে সেচ দফতরে চাকরির নামে টাকা তোলার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ এছাড়া শীতলকুচি গুলি চালানোর ঘটনায় সিআইডি রিপোর্ট জমা দিয়েছে ৷ তাতে বুথের মধ্যে গুলি চালানোর কথা বলা হয়েছে ৷ যদিও সিআইডির সেই রিপোর্টে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷
গতকাল বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির কার্যকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন দিলীপ ঘোষ ৷ আজ রামপুরে একটি বেসরকারি লজে বাঁকুড়া সাংগঠনিক বিজেপি জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য সভাপতি । বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়ার সংসদ সুভাষ সরকার, বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা সহ বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার আরও চার বিধায়ক । বাঁকুড়া জেলা বিজেপির সভাপতি বিবেকানন্দ পত্র সহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরাও হাজির ছিলেন দিলীপ ঘোষের বৈঠকে ।
ত্রিপল চুরির মামলায় রাজ্য় সরকারকে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের বৈঠক শেষে গতকাল হেস্টিংসে বিজেপি সদর দফতরের বাইরে বোমা উদ্ধার হওয়ার প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গ বড় শিল্প বোমা শিল্প । তা সফল ভাবে চলছে । এতদিন জেলায় জেলায় চলছিল, এখন কলকাতাতেও । এতগুলো বোমা সেনসিটিভ জায়গায় কে রেখে গেল পুলিশ জানতে পারল না ।
দিলীপবাবু অভিযোগ করেন জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে । বোমা মারা হচ্ছে ৷ প্রশাসনিক ঢিলেমিতেই এইগুলি হচ্ছে । শুভেন্দু ও সৌমেন্দু অধিকারীর নামে ত্রিপল চুরির কেসের মামলা প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘এটা নতুন কিছু না । বিজেপি করতে গেলে কেস খেতে হবে ।’’ সেচ দফতরে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগে গতকাল মানিকতলা থানা শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরাকে গ্রেফতার করেছে । এ-প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘জানি না কার ঘনিষ্ঠ কে । তিনি যদি অপরাধ করে থাকেন, সে যেই হোক, শাস্তি পেতে হবে ৷ সে শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ হতেই পারেন । তবে এতদিন দুর্নীতি হয়েছে, টাকা নেওয়া হয়েছে চাকরির নাম করে । এমন কোনও সরকারি দফতর নেই যেখানে দুর্নীতি হয়নি । মুখ্যমন্ত্রী নিজে মেনে নিচ্ছেন তাঁর এমএলএ-রা সব টাকা নেন । ’’
আরও পড়ুন : গুরুদায়িত্ব পেয়ে গুরুজনদের আশীর্বাদ নিতে পার্থ-বক্সির বাড়িতে অভিষেক
নির্বাচনের দিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলি চালানোর ঘটনায় সিআইডির ফরেনসিক দল সরকারকে রিপোর্ট দিয়েছে ৷ তাতে বুথের মধ্যেই গুলি চালানো হয়েছিল বলে বলা হচ্ছে । এই প্রসঙ্গে দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষ । আমরা এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত দাবি করেছিলাম । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সিবিআই তদন্ত চাইতেন যখন তিনি বিরোধী ছিলেন । কিন্তু এখন সিআইডি দিয়ে ধামাচাপা দিচ্ছেন । সিআইডির উপর করোর ভরসা নেই । সিআইডি কী করে, আমরা সারদা মামলায় দেখেছি । সব তথ্য সামনে আনতে সিবিআই তদন্ত করা উচিত ৷ ’’