বাঁকুড়া, 6 মে : কথিত আছে রাবণের স্ত্রী মন্দোদরী প্রথম দাবা খেলার সূচনা করেছিলেন । তা নিয়ে অবশ্য মতভেদও কম নেই । যাঁর হাত ধরেই দাবা খেলার সূচনা হোক না কেন যুদ্ধ যুদ্ধ এই খেলা যে দীর্ঘ সময় ধরে রাজপ্রাসাদের চার দেওয়ালে বন্দি ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না । এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজতন্ত্র যত দুর্বল হয়েছে ততই দাবা নেমে এসেছে মাটির কাছাকাছি । এবার সুপারসনিক যুগেও 64 ঘরের প্রাচীন সেই সমরাঙ্গণে মিশে গেল মাটির গন্ধ । টেরাকোটার দাবা ।
বাঁকুড়ার পাঁচমুড়ায় এমন দাবা তৈরি হতেই তা হয়ে উঠল হটকেক । বাঁকুড়ার পাঁচমুড়াকে টেরাকোটা শিল্পের আঁতুড় বললে কম বলা হয় । পাঁচমুড়ার শিল্পীদের দশ আঙুলের কারিকুরিতে তৈরি পোড়ামাটির হাতি-ঘোড়া শুধু এদেশে নয় বিদেশের বাজারেও সমাদৃত । কিন্তু কুমোরের চাকায় ঘুরতে থাকা সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে দ্রুত রূপ বদলাচ্ছিল পাঁচমুড়ার টেরাকোটা শিল্প । শুধু পোড়ামাটির হাতি-ঘোড়া নয়, ক্রেতার বদলে যাওয়া পছন্দ অনুযায়ী পাঁচমুড়ার কুমোরপাড়ায় শুরু হয় বিভিন্ন মডেল তৈরির কাজ । শুরু হয় আর্টের দুর্গা তৈরির কাজও ।
কিন্তু আচমকাই ছন্দপতন । বছর খানেক আগে করোনা মহামারীর জেরে আর পাঁচটা কুটিরশিল্পের মতোই ধাক্কা লাগে টেরাকোটা শিল্পেও । তলানিতে ঠেকে বিক্রিবাটা । একের পর এক আর্টের দুর্গা তৈরির বরাত বাতিল হয়ে যায় । অগত্যা শিল্পীর হাতে জমতে থাকে অফুরন্ত অবসর সময় । আর এই অবসর সময়কে উদ্ভাবনী কাজে লাগিয়েই পাচমুড়ার টেরাকোটা শিল্পী শিবু কুম্ভকার ও তাঁর ভাই তাপস কুম্ভকার তৈরি করে ফেললেন টেরাকোটার দাবা । শুধু হাতি, ঘোড়া , নৌকা, রাজা , মন্ত্রী , সৈন্য সামন্তই নয় তৈরি হল পোড়ামাটির বোর্ডও ।