বাঁকুড়া, 5 ডিসেম্বর: অ্যান্টেনা বলতে সাধারণত আমরা বুঝে থাকি বাড়ির ছাদে বড় মুখ করা বা সোজা সেঁটে থাকা একটি বস্তু । কিন্তু অ্যান্টেনা যে এত ছোট হতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস করা মুশকিল ৷ বিশ্বের এই ক্ষুদ্রতম অ্যান্টেনা আবিষ্কার করলেন বাঁকুড়া পৌরশহরের কেন্দুয়াডিহি এলাকার বাসিন্দা শ্রীকান্ত পাল(Bankura Scientist Srikanta Pal Discovered Worlds Smallest Antenna)৷
পেশায় রাঁচির মেসরার বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে অধ্যাপনার পাশাপাশি গবেষণার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি ৷ এর আগে দিল্লি এবং রুরকি আইআইটিতে অধ্যাপনার কাজও করেছেন । বাঁকুড়া জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজিয়েট স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর ওয়ারেঙ্গল আর.ই থেকে স্নাতক ৷ তারপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করে পাড়ি দেন অক্সফোর্ডে ।
দুই দশক আগে ব্লুটুথ আবিষ্কার তথ্য আদান-প্রদানে অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছিল ৷ এবার তাঁর তৈরি অ্যান্টেনা দিয়ে তার থেকেও কম সময়ে তথ্য আদান প্রদান করা সম্ভব বলে জানান শ্রীকান্তবাবু ৷ বিখ্যাত আমেরিকান সংস্থা তাঁর তৈরি এই বোতাম অ্যান্টেনাকে এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে ছোট অ্যান্টেনা বলে ঘোষণা করেছে ।
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট অ্যান্টেনা আবিষ্কার করে তাক লাগালেন বাঁকুড়ার বিজ্ঞানী আরও পড়ুন :দশকের বিজ্ঞান চর্চা
14 মিলিমিটার লম্বা এবং 11 মিলিমিটার চওড়া এই অ্যান্টেনার ফ্রিকোয়েন্সি 1.8 থেকে 18 গিগাহার্জ পর্যন্ত । বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে এই অ্যান্টেনার ব্র্যান্ডউইথ 10 অনুপাতের 1 ব্র্যান্ডউইথ । তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে যে কোনও স্মার্ট ফোন বা বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশে ব্যাবহার করা সম্ভব অনায়াসেই । 2013 সালে এই অ্যান্টেনাটি তৈরির পর পেটেন্টের জন্য আবেদন করা হয় ।
কিছুদিন আগেই যৌথভাবে সেই পেটেন্ট পেয়েছেন রাঁচির বিড়লা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক শ্রীকান্ত পাল এবং তার সহযোগী, তৎকালীন শ্রীকান্তবাবুর তত্ত্বাবধানে পিএইচডি করা ছাত্র মৃন্ময় চক্রবর্তী । ব্লুটুথের পর এই বোতাম অ্যান্টেনা তথ্য আদান-প্রদানের নব দিগন্ত খুলে দেবে বলেই মত শ্রীকান্তবাবুর(Bankura Scientist Srikanta Pal)৷ তাঁর কথায়,"ব্লুটুথের তুলনায় এই অ্যান্টেনার তথ্য আদান প্রদানের ক্ষমতা 100 গুণ বেশি ৷ আর ব্যবহার করাও সহজ ৷"
শুধু যে এই বোতাম অ্যান্টেনা আবিষ্কারই নয়, এর আগে তিনি নাসার গ্রীন ব্যান্ড টেলিস্কোপের সংকেত সংগ্রহ সংক্রান্ত সমস্যাটিরও সমাধান করেছেন । এছাড়াও আরও অনেক টেলিস্কোপের সংকেত সংক্রান্ত সমস্যাও দূর করেছেন । শ্রীকান্তবাবুর এই অভূতপূর্ব সাফল্য বেজায় খুশি তার পরিবার । খুশি তিনি নিজেও ৷ বরাবরই চাইতেন সমাজের জন্য কিছু করে যেতে ৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই এই আবিষ্কারে ভীষণ খুশি তিনি ৷
আরও পড়ুন :ভাইরাস মোকাবিলায় সুলভ পকেট ভেন্টিলেটর আবিষ্কার শিবপুরের করোনাজয়ী ইঞ্জিনিয়রের