15 শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ অসম্ভব, জানিয়ে দিল উত্তরের চা বলয়
উত্তরবঙ্গের অর্থনীতি টি, ট্যুরিজম এবং টিম্বার, এই তিনটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে । কোরোনার জেরে দেশব্যাপী যে লকডাউন চলছে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির তিন স্তম্ভে । লকডাউনের জেরে বন্ধ পর্যটন শিল্প, বন্ধ চা বলয়ের কাজ, বন্ধ বৈধ কাঠ দিয়ে নির্মিত আসবাবপত্রের কারখানা ।
আলিপুরদুয়ার, 11 এপ্রিল: মাত্র 15 শতাংশ কর্মী দিয়ে চা বাগান চালানো অসম্ভব । জানিয়ে দিলে উত্তরের চা বলয় । লকডাউনে ভেঙে পড়া উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে 15 শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার । কিন্তু এতে সমাধান সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন চা বাগানের মালিক থেকে শ্রমিকরা ।
চা বাগান খোলার বিষয়ে রাজ্য সরকার উদ্যোগ না নিলে উত্তরবঙ্গের অর্থনীতি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছে উত্তরের চা বলয় কর্তৃপক্ষ । উত্তরবঙ্গের অর্থনীতি টি, ট্যুরিজম এবং টিম্বার, এই তিনটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে । কোরোনার জেরে দেশব্যাপী যে লকডাউন চলছে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির তিন স্তম্ভে । লকডাউনের জেরে বন্ধ পর্যটন শিল্প, বন্ধ চা বলয়ের কাজ, বন্ধ বৈধ কাঠ দিয়ে নির্মিত আসবাবপত্রের কারখানা । লকডাউনের জেরে উওরবঙ্গের কয়েক লাখ মানুষ পুরোপুরিভাবে কর্মহীন । টানা 21 দিনের লকডাউনের জেরে কার্যত ধুঁকছে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প । যার প্রভাব ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে শ্রমিক মহল্লায় । এই অবস্থায় চা শিল্পকে বাঁচাতে নবান্ন থেকে 15% শ্রমিক নিয়ে শুরু করার নির্দেশ গিয়েছে ।
নবান্নের এই নির্দেশিকায় চা বাগানের অর্থনৈতিক বিপর্যয় যে একেবারেই সমাধান করা সম্ভব নয় তা মানছেন মালিক থেকে শ্রমিক পক্ষ । ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা মেনে অসম, কর্ণাটক এবং কেরলের মত রাজ্যে সাবধানতা অবলম্বন করে চা বাগানগুলোকে সম্পূর্ণভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে । স্বাভাবিক কাজকর্মও শুরু হয়ে গিয়েছে । কিন্তু বাংলায় শুধুমাত্র 15% শ্রমিকদের দিয়ে কাজের নির্দেশিকায় উত্তরের চা বলয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । ইতিমধ্যেই চা বলয়ে পাতা তোলার মরশুম শুরু হয়ে গেছে । এই পাতা তোলা থেকেই নির্ধারিত হয় বছরে বাগানের অর্থনীতি । এই অবস্থায় 15% শ্রমিক দিয়ে চা বাগানের অর্থনীতি কতটা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন ।
এই বিষয়ে মাঝেরডাবরি চা বাগানের ম্যানেজার চিন্ময় ধর বলেন, "এতদিন চা বাগান বন্ধ থাকার ফলে যে ঝোপঝাড় হয়েছে তা পরিষ্কার করতেই 20 শতাংশের বেশি শ্রমিক লাগবে । তাহলে বাকি কাজ কে করবে ?" চিন্ময়বাবু আরও বলেন, "চা বাগানের কর্মীদের সঙ্গে বাইরের মানুষের কোনও যোগাযোগ থাকে না । বাগান থেকে কাউকে বাইরে যেতে দেওয়া হয় না । বাইরের কোনও মানুষকে বাগানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না । ফলে বাগানে কাজ করলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয় ।"
টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার উত্তরবঙ্গের সম্পাদক রাম অবতার শর্মা জানান, "আপাতত রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনেই বাগানে কাজ হবে ।" যদিও মাত্র 15 শতাংশ শ্রমিক দিয়ে কাজ চালানো অসম্ভব, মানছেন তিনি ।