আলিপুরদুয়ার, 20 ফেব্রুয়ারি : সেচ দপ্তর, খাদ্য দপ্তর ও প্রাইমারি স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে ১০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে এক প্রাইমারি স্কুল শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে কুমারগ্রাম থানার পুলিশ৷ গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষকের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাবা এবং মাকে । আজ ধৃত তিনজনকে আলিপুরদুয়ার আদালতে নিয়ে আসে কুমারগ্রাম থানার পুলিশ । বিচারক অভিযুক্ত বাবা-ছেলেকে সাতদিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেন । অভিযুক্ত শিক্ষকের মাকে সাতদিনের জেল হেপাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক । কুমারগ্রাম থানার IC বাসুদেব সরকার জানিয়েছেন, অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষকের নাম পার্থ সরকার, তাঁর বাবা আনন্দময় সরকার, অভিযুক্তের মা রত্না সরকার । অভিযুক্ত তিনজনকেই গতকাল রাতে বারোবিশার সুভাষপল্লি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ।
বারোবিশার স্থানীয় ২৫ জন প্রতারিত বেকার যুবকদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একই পরিবারের আট জন আত্মীয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয় । 3 জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও আরও 5 জন অভিযুক্ত প্রতারক এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে । অভিযুক্ত শিক্ষক রায়ডাক ফরেস্ট ভিলেজ BFP প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক । প্রতারিত যুবকদের অভিযোগ, তাঁদের সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওযার প্রলোভন দেখিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক পার্থ সরকার এবং তার পরিবারের লোকেরা প্রায় ১০০ জনের থেকে নগদ ১০ কোটি টাকা প্রতারণা করেছে ।
ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত শিক্ষক বেশ কিছু যুবককে চাকরির ভুয়ো কাগজপত্র দিয়ে কলকাতায় ট্রেনিং এ পাঠান । চাকরিতে যোগদানের সময় যুবকরা বুঝতে পারেন তাঁদের সাথে প্রতারণা করেছেন ওই শিক্ষক । এরপর পার্থ সরকারকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন তাঁরা । স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিয়ে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেন অভিযুক্ত শিক্ষক । প্রতারিত যুবকরা বলেন, অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক এবং তার পরিবার কোচবিহার, অসম, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ১০০ জনের থেকে ১০ কোটি টাকা প্রতারণা করেছে । বারোবিশার প্রতারিত যুবক গোপাল দত্ত বলেন, ভূমি দপ্তরের চাকরির জন্য আমার থেকে 9 লাখ টাকা নিয়েছিল ওই শিক্ষক। আর এক প্রতারিত দেবর্ষি ঘোষ বলেন, "প্রাইমারি স্কুলের চাকরির জন্য আমি দিয়েছিলাম 12 লাখ টাকা৷" প্রণব সাধ্য নামে আর একজন বলেন, "পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য আমার থেকে নিয়েছে ১৮ লাখ টাকা ৷" অপর এক যুবক সুবোধ সরকার বলেন, "আবগারি দপ্তরে চাকরির জন্য দিয়েছিলাম 16 লাখ টাকা।"