গর্ভবতী মা ও মুমূর্ষু রোগীদের ত্রাতা 'পালকি অ্যাম্বুলেন্স' আলিপুরদুয়ার, 12 ডিসেম্বর: আলিপুরদুয়ার জেলার প্রত্যন্ত বক্সা পাহাড় এলাকা। যেখানে গড়ে উঠেছে 14টি গ্রাম। সেখানে গর্ভবতী মায়েদের সমতলের হাসপাতালে আনতে এতদিন বাঁশের মাচা ব্যবহার করতেন পাহাড়ের মানুষজন। কিন্তু এখন রোগীদের সমতলে নামিয়ে আনতে চালু হয়েছে পালকি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা (Palki Ambulance Sevice at Buxa)। শীঘ্রই এই অ্যাম্বুলেন্সে আসছে নতুনত্বের ছোঁয়া ৷
পাহাড়ের ওপর থেকে কালচিনির লতাবাড়ি বা আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে (Alipurduar District Hospital) চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হত রোগীদের। এতে অনেক সময় রাস্তার মধ্যে প্রসব যন্ত্রণা উঠলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হত তাঁদের। গত বছর বাঁশের মাচায় করে গর্ভবতীকে নীচে নামানোর সময় এক সদ্যজাতের মৃত্যু পর্যন্ত হয়। অবশেষে আলিপুরদুয়ার জেলার স্বাস্থ্য দফতর (Alipurduar District Health Office) ও ফ্যামিলি প্লানিং অফ ইন্ডিয়ার যৌথ উদ্যোগে 'পালকি আম্বুলেন্স' পরিষেবা চালু হয়েছে। এবছর পালকি অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনজন গর্ভবতী মা ও একজন রোগীকে পরিষেবা দিয়ে সাফল্যের মুখ্য দেখছে পালকি অ্যাম্বুলেন্স।
আরও পড়ুন:পালকিতে বউ নয়, রোগী যাচ্ছে হাসপাতালে
ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার জেনারেল ম্যানেজার তুষার চক্রবর্তী বলেন, "আমরা ইতিমধ্যেই তিনজন গর্ভবতী মা ও একজন মুমূর্ষু রোগীকে পালকি অ্যাম্বুলেন্সে করে বক্সা পাহাড় থেকে সমতলে নামিয়েছি। পালকির ওজন বেশি হয়ে যাবার ফলে পালকিতে করে রোগীকে নামাতে সমস্যা হচ্ছে। আমরা পালকি ওজন কমিয়ে নতুন করে পালকি দেব। বেতের পালকির ব্যবস্থা করছি। এখন কাঠের পালকির ওজন 60-70 কেজি রয়েছে। বেতের পালকি 25-30 কেজি ওজনের হবে ফলে অনেকটাই ওজন কমে যাবে। এতে চারজনের পক্ষে পালকিতে করে রোগী নামাতে সুবিধা হবে।"
অন্যদিকে বক্সার বাসিন্দা ইন্দ্রশঙ্কর থাপা বলেন, "পালকি অ্যাম্বুলেন্সের ফলে আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে ৷ আগে বাঁশের মাচায় করে গর্ভবতী মা বা অন্যান্য রোগীদের সমতলে চিকিৎসার জন্য আনা হত। এতে ঝড়-বৃষ্টিতে অনেক সমস্যায় পড়তে হত। এখন পালকির ফলে অনেক সুবিধা হচ্ছে। চারজন করে পালকিতে লোক লাগছে। তারাই কাঁধে করে রোগী নামাচ্ছেন। পালকির ওজন কমিয়ে দেওয়া হলে আরও সুবিধা হবে।"
আরও পড়ুন:এনবিএসটিসি'র রায়গঞ্জ শাখায় বিনা ব্যবহারে পড়ে 50 লক্ষ টাকা মূল্যের অ্যাম্বুলেন্স
আলিপুরদুয়ার জেলার জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা বলেন, "আমরা বক্সা পাহাড়ের মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য এই পালকি অ্যাম্বুলেন্স চালু করেছি। আমরা চাই সবাইকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে। বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে একত্রে হয়ে এই পরিষেবা আমরা দিচ্ছি। তবে একটা সমস্যা রয়েছে এই পালকি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার জন্য। কারণ পালকি অ্যাম্বুলেন্সের ওজন অনেক ভারি হয়ে যাবার ফলে পাহাড় থেকে পালকি করে রোগীকে সমতলে নামাতে ও সমতল থেকে কাউকে ওঠাতে সমস্যা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি পালকির ওজন কমিয়ে দিতে। যাতে করে চারজন খুব সহজেই রোগীকে পালকিতে করে নামাতে পারেন।"