বক্সা, 18 ডিসেম্বর :আলিপুরদুয়ার জেলার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের (Buxa Tiger Reserve) অন্তর্গত ভুটিয়া বস্তি ৷ বস্তির মোট পরিবার 53 টি ৷ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় থাকা এই ভুটিয়া বস্তি অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে (Bhutia Basti Relocation) ৷ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সেই প্রক্রিয়া ৷ সরকারের প্রস্তাবে বস্তিবাসীর দাবি ছিল, সঠিক পুনর্বাসন পেলে জঙ্গল লাগোয়া এলাকা ছেড়ে যেতে কোনও আপত্তি নেই তাঁদের ৷ সরকার সেই দাবি মেনে নিয়েছে ৷ জয়ন্তী থেকে ফাঁসখাওয়া যাওয়ার বিস্তীর্ণ জঙ্গলের মাঝেই রয়েছে এই ভুটিয়া বস্তি ৷
আরও পড়ুন :পেটের দায়ে প্রকাশ্যেই চলছে জঙ্গল ধ্বংসের কাজ
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভিতর ভুটিয়া বস্তি থাকার ফলে একদিকে বন্যপ্রাণের অবাধ বিচরণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে, অন্যদিক বাড়ছে মানুষ-বন্যপ্রাণ সংঘাত (Man Animal Conflict) ৷ তাছাড়া, প্রতি বর্ষাতেই ফুলে ফেঁপে ওঠে জয়ন্তী নদী ৷ সেই সময় বিপদ বাড়ে ভুটিয়া বস্তিরও ৷ বাণভাসীদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে গিয়ে বেগ পেতে হয় প্রশাসনকেও ৷ সেইসঙ্গে, প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন ভুটিয়া বস্তির বাসিন্দারা ৷
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে ভুটিয়া বস্তি সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারি তরফে তুরতুরি খণ্ড গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য সাজেন সোনার এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা এখান থেকে অন্যত্র চলে যেতে চাইছি ৷ কারণ, আমরা এখানে অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ৷ বর্ষাকালে তিনমাস আমাদের বাচ্চারা স্কুল যেতে পারে না ৷ এলাকার 53 টি পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে ৷ এই পরিবারগুলিতে ভোটার রয়েছেন 72 জন ৷ সরকার আমাদের ভিটে-মাটি ছাড়ার বদলে নতুন জমি-বাড়ি অথবা টাকা দিতে চেয়েছিল ৷ আমরা টাকা নিয়েই উঠে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷’’
আরও পড়ুন :নদীর গেঁড়ি-গুগলি ভরসা বনবস্তির মানুষের
এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেও অধিকাংশেরই জঙ্গল লাগোয়া এলাকা ছাড়তে কোনও আপত্তি নেই ৷ তাঁদের আশা, শহরের কাছাকাছি গিয়ে থাকলে কাজের সুযোগ বাড়বে ৷ অনেকে আবার ভাবছেন, সরকারের দেওয়া টাকায় জমি, বাড়ি কেনার পর আদৌ কিছু হাতে থাকবে তো ? নতুন জায়গায় সংসারই চলবে কীভাবে ? রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের মধ্যে থাকা ভুটিয়া বস্তির মানুষকে অন্যত্র সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৷ সেখানকার বাসিন্দারা পুর্নবাসনের বিনিময়ে জমি, বাড়ি ছাড়তে রাজি হয়েছেন ৷