আলিপুরদুয়ার, 5 জুন : কোরোনা আলাদা করে দিল মা-ছেলেকে। ভেঙে দিল গ্রামের বন্ধুত্বও । আলিপুরদুয়ার দুই নম্বর ব্লকের উত্তর শীবকাটা এবং মঙ্গলহাট গ্রামে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল একটি বাঁশের সাঁকো। সংক্রমণ রুখতে ভেঙে ফেলা হল সেই সাঁকো। ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক পাথর ছোড়াছুড়ি হয় বলে অভিযোগ।
মঙ্গলহাট গ্রামের অশীতিপর বৃদ্ধা রেনুকাবালা দাস বলেন, "আমার ছোটো ছেলে থাকে শীবকাটা গ্রামে। প্রতিদিন সে বাড়ি থেকে আমার জন্য রান্না করে খাবার এনে দেয়। সাঁকোটি কেটে ফেলায় এই ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে এখন কী করে আমার খাবার নিয়ে আসবে, তা ভেবে পাচ্ছি না।"
অন্যদিকে শীবকাটা গ্রামের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার ছেলে বলেন, " এই সাঁকো দিয়ে মাত্র দেড় কিলোমিটার গেলেই মার কাছে পৌছে যেতাম। এখন অন্তত ১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হবে।"
শুধু মা-ছেলে নয়, এই বাশের সাঁকো কেটে ফেলায় বিপাকে পড়েছেন মাঝেরডাবরি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
বৃহস্পতিবার শীবকাটার শ্রীনাথপুর চা বাগানের মহাবীর কলোনির এক বাসিন্দার দেহে কোরোনা সংক্রমণের হদিস মেলে । তারপর থেকেই উত্তর শীবকাটার মানুষদের বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে মঙ্গলহাটে যেতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয় মঙ্গলহাট গ্রামের মানুষ। সেই অনুযায়ী, শুক্রবার সকালে সেই সাঁকো কেটে দেওয়া হয়।
এইপরই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে পাথর ছোড়াছুড়ি শুরু হয় । যদিও পঞ্চায়েত প্রধানের মধ্যস্থতায় পরে শান্ত হয় দুই গ্রামের মানুষ।
মঙ্গলহাটের এই বাঁশের সাঁকো শুধু দুই গ্রামের মানুষই ব্যবহার করে না, এই সাঁকো দিয়ে পানবাড়ি, দুর্গাবাড়ি, উত্তর শীবকাটা সহ অনেকগুলি এলাকার মানুষ যাতায়াত করেন । এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে মাত্র তিন কিলমিটার পথ গেলেই গদাধর রেঞ্জ অফিস, গ্রামপঞ্চায়েত অফিস ও মাঝেরডাবরি চা বাগানে যাওয়া যায়। এই বাঁশের সাঁকো না থাকার ফলে শীবকাটা গ্রাম সহ অন্যান্য এলাকার মানুষকে প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হচ্ছে ।
আলিপুরদুয়ার দুই নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাস জানান, "দুই গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে দিতে হবে।" একই কথা বলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান বুবুন রায়।