কলকাতা, 30 মার্চ: জামশেদপুরকে বলা হয় বাঙালির দ্বিতীয় ঘর। একদা বিহার, বর্তমানে ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত বাঙালির প্রিয় টাটানগর ওরফে জামশেদপুর এখন ভারতীয় ফুটবলের আঁতুড়ঘর। টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে বেরোনো গ্র্যাজুয়েট ফুটবলাররা দেশীয় ফুটবলে রং ছড়াচ্ছেন বহুদিন ধরে। এবার সেই তালিকায় নতুন নাম ঋত্বিক দাস। টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমির গ্র্যাজুয়েট তিনি নন। বলা যায়, বাংলার বংশোদ্ভূত তিনি। বার্নপুরের উচ্চমধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলে এখন আইএসএলে জামশেদপুর এফসি'র ফুটবলার। বর্তমানে ইস্পাত নগরীর ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে দুরন্ত ফুটবল খেলার পরে ভারতীয় দলে নির্বাচিত হয়েছেন।
ঋত্বিক কলকাতার দুই বড় ক্লাবে কোনওদিন খেলেননি। ময়দানের তথাকথিত ছোট ক্লাবে খেলে দুই প্রধানের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে ধাপে ধাপে উঠেছেন তিনি। পৌঁছে গিয়েছেন দেশের একনম্বর লিগ আইএসএলে। জাতীয় টিমেও তাঁর অভিষেক ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। মণিপুরের ইম্ফলে সদ্য-সমাপ্ত ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে মায়ানমারের বিরুদ্ধে ভারতীয় টিমের জার্সিতে নেমেছিলেন তিনি। অর্থাৎ, বলাই যায় চ্যাম্পিয়নের আলো তাঁর গায়ে।
জামশেদপুরে খেললেও ঋত্বিকের জন্ম বার্নপুরে। স্কুল দল থেকেই ফুটবল শিক্ষার প্রথম পাঠ। তাঁর প্রতিষ্ঠার পিছনে বিরাট অবদান বাবা-মায়ের। ঋত্বিক বলেন, "যেখানে জন্ম, সেখানে ফুটবলের জনপ্রিয়তা সেভাবে ছিল না। ফুটবলার হবই, এটা ঠিক করে নিয়েছিলাম। বাবা প্ল্যান্টে কাজ করত। রাতে ডিউটি থাকত। তা সত্ত্বেও আমাকে ফুটবল শেখাতে নিয়ে যেত। স্কুলের হয়েও খেলেছি। প্রথমে ট্রায়ালে সুযোগ পেতাম না। বড়রাই প্রাধান্য পেত। তার পরে একদিন নির্বাচিত হয়ে গেলাম।" শুধু অক্লান্ত বাবা নন, ফুটবলার ঋত্বিকের উত্থানে মায়ের অবদানও রয়েছে বড় জায়গাজুড়ে। বাঙালির ফুটবল চর্চায় ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের যোগ থাকবেই। দুই প্রধানে না-খেললেও যোগসূত্র থাকবেই। ঋত্বিকের মা মিতা দাস সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন দেখে মোহনবাগান স্কুলের জন্য ট্রায়ালে নিয়ে গিয়েছিলেন ছেলেকে। সেদিনের যাতায়াতের কষ্ট আজ সাফল্যের হাসিতে ভরা। প্রায় দু'বছর ছিলেন মোহনবাগান স্কুলে। কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা?