পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sports

Habib-Pele Encounter: ‘ইউ পেলে, আই হাবিব’ ! ফুটবল সম্রাটকেও রেয়াত করেননি ‘বড়ে মিঞা’

প্রতিভা ও ডিসিপ্লিনের মেলবন্ধনে হাবিব হয়ে উঠেছিলেন একমেবাদ্বিতীয়ম ৷ তাঁর নাছোড়বান্দা মনোভাবেই বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাবকে রুখে দিয়েছিল মোহনবাগান ৷ পেলের কসমসের বিরুদ্ধে স্কোর লেভেল রেখে মাঠ ছেড়েছিলেন বড়ে মিঞা-ছোটে মিঞা ৷

Etv Bharat
Etv Bharat

By

Published : Aug 15, 2023, 11:03 PM IST

Updated : Aug 16, 2023, 9:40 PM IST

হায়দরাবাদ, 15 অগস্ট: এডসন আরান্তেস ডো নাসিমেন্তো, ওরফে পেলে ৷ নামের পাশে বিশ্বের সেরা ফুটবলারের তকমা, যাকে দেখলে নতজানু হয়ে পড়ত বিশ্বের সেরা ডিফেন্ডার ৷ স্বয়ং সেই পেলেকেই রেয়াত করেননি হাবিব ৷ ফুটবলবোদ্ধারা বলেন, তিনি দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ মিডফিল্ড জেনারেল, ওরকম প্রতিভা ৷ সতীর্থরা বলেন, নিয়মানুবর্তিতাই তাঁর কাছে শেষ কথা ৷ এই প্রতিভা ও ডিসিপ্লিনের মেলবন্ধনে হাবিব হয়ে উঠেছিলেন একমেবাদ্বিতীয়ম ৷

1966 সালে কলকাতায় এসেছিলেন সুদূর হায়দরাবাদ থেকে, অন্ধ্রপ্রদেশকে সন্তোষ ট্রফি জিতিয়ে ৷ দক্ষিণের বিরল প্রতিভাকে স্পট করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের জ্যোতিষ গুহ ৷ জহুরির চোখ বুঝেছিল, নিজামের শহরের ভাঙা চেহারার ছেলেটাই একদিন ময়দান শাসন করবে, হয়ে উঠবে সবুজ গালিচার বেতাজ বাদশা ৷

যদিও দু’বছর পরেই লাল-হলুদ ছেড়ে দেন ৷ যোগ দেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানে ৷ সেখান থেকে মহমেডান, ইস্টবেঙ্গলে প্রত্যাবর্তন সেরে 1976 সালে ফের মোহনবাগানে ফেরা ৷ একা নন, মোহনবাগানে একসঙ্গে এসেছিলেন দুই ভাই । 1975 সালের 5 গোলের লজ্জার পরেই হাবিব-আকবরকে একসঙ্গে গঙ্গাপাড়ে এনেছিলেন কর্তারা ৷ বড়ে মিঞা-ছোটে মিঞা জাদুতে মুগ্ধ হয়েছিল আপামর কলকাতা ৷ ওই বছর তাঁদের দাপটেই দীর্ঘদিন পর কলকাতা লিগ জিতেছিল মোহনবাগান । ফলে গঙ্গাপাড়ের তাঁবুতে সেবছর উৎসবের আমেজ ।

‘ফুটবল সম্রাট’কেও রেয়াত করেননি ‘বড়ে মিঞা’

ঠিক সে সময়েই বাগানের তৎকালীন সচিব ধীরেন দে জানান, কসমসকে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে । সবকিছু ঠিক থাকলে আর একমাসের মধ্যে পেলের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হবে । ব্রাজিলের বিখ্যাত ক্লাবে তখন অবসরের আগে মাঠ মাতাচ্ছেন ফুটবল সম্রাট ৷ কেরিয়ারের সায়াহ্নে চলে আসা পেলে আসছেন কলকাতায়, জাতীয় ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলতে ৷ কিন্তু, পড়ন্ত সূর্য তো সূর্যই ৷ তাঁর সঙ্গে কার্লোস আলবোর্তো, ফ্র্যাঙ্ক বেকেনবাওয়ার, জুয়ান কান্তিলিয়া, জর্জিয়ো চিনাগলিয়া এবং সর্বোপরি পেলে । 1977-এর কসমসে তখন আক্ষরিক অর্থেই চাঁদের হাট । ফলে ফুটবলারদের কেউ কেউ ভেবেছিলেন, ভাল খেললেও পাঁচ গোল খাব । মাঠে নেমে সেই শরীরি ভাষাটা বদলে দিয়েছিলেন হাবিবই ৷

আরও পড়ুন: 'বড়ে মিঞা'কে দেখেই 'ছোটে মিঞা' হয়ে ওঠার গল্প শোনালেন আকবর

24 সেপ্টেম্বর ওই ম্যাচের কয়েকদিন আগে পেলে-সহ কসমস দল কলকাতায় এসে গিয়েছিল । ব্রাজিলের নামকরা ক্লাবের খেলোয়াড়দের রাখা হয়েছে গ্র্যান্ডে । অন্যদিকে জোরকদমে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে মোহনবাগান । হোক না প্রস্তুতি ম্যাচ, বিশ্বসেরাদের বিরুদ্ধে তো নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে । কিন্তু তাতে বাধ সাধল বৃষ্টি । ম্যাচে তিনদিন আগে থেকে লাগাতার বৃষ্টিতে ইডেন গার্ডেন্সে তখন এক হাঁটু কাদা । মাঠের অবস্থা দেখে বেঁকে বসলেন কসমসের অফিসিয়ালরা ।"

যদিও ধীরেন দে’র অনুরোধেই শেষ পর্যন্ত মাঠে নামেন পেলে । কিন্তু কসমসকে রুখে দেওয়া । এর রহস্য কী ? মাঠে নেমেই সব ভুলে গেছিলেন মোহনবাগান খেলোয়াড়েরা । পেলে, কসমস, প্রদর্শনী ম্যাচ সব কিছুই । বলা হয়েছিল, কসমসের কাউকে জোরে ট্যাকল করা যাবে না । আর হাবিব নেমেই পেলেকে 'টাফ' ট্যাকল করে বসল ।" ফুটবল সম্রাট কটমট করে তাকাতেই সেই বিখ্যাত সংলাপ, 'ইউ পেলে, আই হাবিব' । বড়ে মিঞার ফুটবল শৈলী এবং সতীর্থদের নাছোড়বান্দা মনোভাবের ফল ? বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাবকে রুখে দিয়েছিল মোহনবাগান ৷ স্কোর লেভেল রেখে মাঠ ছেড়েছিলেন বড়ে মিঞা-ছোটে মিঞা ৷

আরও পড়ুন: জীবনের ময়দান থেকে অবসরে হাবিব, প্রয়াত ভারতীয় ফুটবলের 'বড়ে মিঞা'

Last Updated : Aug 16, 2023, 9:40 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details