হায়দরাবাদ, 15 অগস্ট: এডসন আরান্তেস ডো নাসিমেন্তো, ওরফে পেলে ৷ নামের পাশে বিশ্বের সেরা ফুটবলারের তকমা, যাকে দেখলে নতজানু হয়ে পড়ত বিশ্বের সেরা ডিফেন্ডার ৷ স্বয়ং সেই পেলেকেই রেয়াত করেননি হাবিব ৷ ফুটবলবোদ্ধারা বলেন, তিনি দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ মিডফিল্ড জেনারেল, ওরকম প্রতিভা ৷ সতীর্থরা বলেন, নিয়মানুবর্তিতাই তাঁর কাছে শেষ কথা ৷ এই প্রতিভা ও ডিসিপ্লিনের মেলবন্ধনে হাবিব হয়ে উঠেছিলেন একমেবাদ্বিতীয়ম ৷
1966 সালে কলকাতায় এসেছিলেন সুদূর হায়দরাবাদ থেকে, অন্ধ্রপ্রদেশকে সন্তোষ ট্রফি জিতিয়ে ৷ দক্ষিণের বিরল প্রতিভাকে স্পট করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের জ্যোতিষ গুহ ৷ জহুরির চোখ বুঝেছিল, নিজামের শহরের ভাঙা চেহারার ছেলেটাই একদিন ময়দান শাসন করবে, হয়ে উঠবে সবুজ গালিচার বেতাজ বাদশা ৷
যদিও দু’বছর পরেই লাল-হলুদ ছেড়ে দেন ৷ যোগ দেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানে ৷ সেখান থেকে মহমেডান, ইস্টবেঙ্গলে প্রত্যাবর্তন সেরে 1976 সালে ফের মোহনবাগানে ফেরা ৷ একা নন, মোহনবাগানে একসঙ্গে এসেছিলেন দুই ভাই । 1975 সালের 5 গোলের লজ্জার পরেই হাবিব-আকবরকে একসঙ্গে গঙ্গাপাড়ে এনেছিলেন কর্তারা ৷ বড়ে মিঞা-ছোটে মিঞা জাদুতে মুগ্ধ হয়েছিল আপামর কলকাতা ৷ ওই বছর তাঁদের দাপটেই দীর্ঘদিন পর কলকাতা লিগ জিতেছিল মোহনবাগান । ফলে গঙ্গাপাড়ের তাঁবুতে সেবছর উৎসবের আমেজ ।
ঠিক সে সময়েই বাগানের তৎকালীন সচিব ধীরেন দে জানান, কসমসকে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে । সবকিছু ঠিক থাকলে আর একমাসের মধ্যে পেলের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হবে । ব্রাজিলের বিখ্যাত ক্লাবে তখন অবসরের আগে মাঠ মাতাচ্ছেন ফুটবল সম্রাট ৷ কেরিয়ারের সায়াহ্নে চলে আসা পেলে আসছেন কলকাতায়, জাতীয় ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলতে ৷ কিন্তু, পড়ন্ত সূর্য তো সূর্যই ৷ তাঁর সঙ্গে কার্লোস আলবোর্তো, ফ্র্যাঙ্ক বেকেনবাওয়ার, জুয়ান কান্তিলিয়া, জর্জিয়ো চিনাগলিয়া এবং সর্বোপরি পেলে । 1977-এর কসমসে তখন আক্ষরিক অর্থেই চাঁদের হাট । ফলে ফুটবলারদের কেউ কেউ ভেবেছিলেন, ভাল খেললেও পাঁচ গোল খাব । মাঠে নেমে সেই শরীরি ভাষাটা বদলে দিয়েছিলেন হাবিবই ৷