CFL 2022: কলকাতা লিগে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে টালবাহানা জারি ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের, দুই প্রধানের পাশে সৃঞ্জয় বসু

কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানকে দেখা যাবে কিনা, সেই প্রশ্নই এখন ময়দানে (Question Over Participation of East Bengal-Mohun Bagan in Calcutta Football League) ৷ কারণ, দু’পক্ষই কলকাতা লিগে খেলার বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখেছে ৷ আর ময়দানের দুই প্রধানের অপেক্ষায় বসে থেকে আইএফএ কলকাতা লিগের (CFL 2022) সূচি এখনও তৈরি করেনি ৷ এই পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গ ও মোহনবাগানের মতো বড় ক্লাবগুলির পাশেই দাঁড়ালেন প্রাক্তন বাগান সচিব সৃঞ্জয় বসু ৷

কলকাতা, 15 জুলাই: কলকাতা লিগে (CFL 2022) ইস্টবেঙ্গল বনাম এটিকে মোহনবাগানের চিরাচরিত লড়াই দেখা যাবে কিনা, তা স্পষ্ট নয় ৷ সবুজ-মেরুন কথার জাল ফেলে আইএফএ এর সামনে প্রকৃত সত্যটা বলছেন না। ইস্টবেঙ্গল কর্তারাও পরিস্থিতি বিচার করে কলকাতা লিগে অংশগ্রহণের ব্যাপারে সময় নেওয়ার খেলায় নেমেছেন ৷ দুই প্রধানের এই টালবাহানার জেরে সমস্যায় পড়েছে আইএফএ (Question Over Participation of East Bengal-Mohun Bagan in Calcutta Football League) ৷ বৃহস্পতিবার স্কুল ফুটবলের সাংবাদিক সম্মেলনে আইএফএ সচিব এ নিয়ে জানান, বিষয়টি নিয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে রাজি নয় তাঁরা ৷ অন্যদিকে, মোহনবাগানের প্রাক্তন সচিব সৃঞ্জয় বসু তাঁর ক্লাবের বর্তমান অবস্থানের পক্ষেই সওয়াল করলেন ৷

এ নিয়ে সৃঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘আইএফএ-কে বছরের শুরুতেই সূচি ঠিক করে ফেলতে হবে। তা হলেই কলকাতা লিগ নিয়ে প্রতি বছর যে জটিলতা তৈরি হচ্ছে তা মিটে যেতে পারে। শুধু শুধু ক্লাব কর্তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই।’’ কলকাতা লিগ প্রসঙ্গে বর্তমান মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্তের পাশে এভাবেই দাঁড়ালেন সৃঞ্জয় বসু। কলকাতা লিগে দুই বড় দলের খেলা নিয়ে তৈরি হওয়া ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি ৷ 7 সেপ্টেম্বর কলকাতায় এএফসি কাপের ম্যাচ রয়েছে এটিকে মোহনবাগানের ৷ সঙ্গে রয়েছে ডুরান্ড কাপ। এর মধ্যে কলকাতা লিগ। ফলে এটিকে মোহনবাগানের পক্ষে দল নামান মুশকিল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল ৷

বৃহস্পতিবার কলকাতা স্কুল ফুটবল লিগের অনুষ্ঠানে এসে সৃঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গল কখনওই হারার জন্য খেলতে নামে না ৷ সমর্থক হিসেবে আমি সবসময় চাইব সেরা দল মাঠে নামুক। তাই যেমন তেমন দল কলকাতা লিগে নামিয়ে দেওয়ার পক্ষে আমি নই। ইস্টবেঙ্গলের অন্য সমস্যা রয়েছে। সেই বিষয় আমি কিছু বলব না। তবে আইএফএ কলকাতা লিগ চালু করতে দেরি করেছে। তাদের কিছু সমস্যা ছিল। এর সঙ্গেই এটাও মাথায় রাখতে হবে, আইএফএ নিজেদের সমস্যার জন্য লিগ পিছতে পারে ৷ তবে, ক্লাবের সমস্যাটাও আইএফএ-কে বুঝতে হবে ৷’’

রবিবার এটিকে মোহনবাগান কর্তা দেবাশিস দত্তের সঙ্গে কথা বলেছেন আইএফএ সহ-সচিব স্বরূপ বিশ্বাস। তবে, চারদিন কেটে গেলেও তারা আইএফএ-কে রিপোর্ট জমা দেননি। অন্যদিকে, কিছুটা সময় চেয়েছে ইস্টবেঙ্গলও। তবে, সময় খুব বেশি নেই। এই অবস্থায় নতুন করে সময় দেওয়া সম্ভব কিনা, তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি সচিব অনির্বাণ দত্ত ৷ আইএফএ সচিব যদিও তাঁর সহকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সময় পাচ্ছেন না কেউই। আসলে পরপর ম্যাচ চলছে। দারুণ ব্যস্ততা। এর মধ্যেই সিএফএল নিয়ে ক্লাবগুলোর সঙ্গে ফের বসবে আইএফএ। কথা বলে সমস্যার সমাধান করতে হবে ৷’’

আইএসএল-এর ক্লাবগুলি ডুরান্ডের মত টুর্নামেন্টে ভালো টিম মাঠে নামায়। ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগানের কলকাতা লিগে তেমনটা করতে সমস্যা কোথায়? উত্তরে সৃঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘দেখুন মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গলের ব্যাপারটা একেবারেই আলাদা। কারণ, অন্য কোনও দলের ক্ষেত্রে টিম হারলে শুধু টিমের মালিকের কষ্ট হয়। কিন্তু, এই দুই দল হেরে গেলে লক্ষ কোটি সমর্থক আহত হয়। তাই সাধারণ মানের দল গড়ে খেলার কোনও অর্থ নেই ৷’’

তবে, একটা উপায়ের কথা বলেছেন সৃঞ্জয় বসু ৷ তিনি বলেন, ‘‘ভালো দল নয়, অনূর্ধ্ব-19 দল গড়ে কলকাতা লিগে খেলতে পারে দুই বড় দল ৷ তবে, আইএফএ তা মেনে নেবে তো ?’’ সব মিলিয়ে এখনও মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গলের লিগে খেলা নিয়ে জটিলতা কাটেনি ৷ তাই মহমেডান স্পোর্টিং সহ অন্যান্য দলগুলি যখন কলকাতা লিগে অংশগ্রহণের জন্য অনুশীলন শুরু করতে চলেছে, তখন দুই প্রধান যুক্তির যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ৷ তাই অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন না হলে, ময়দানের দুই প্রধানকে ছাড়াই এ বছরের কলকাতা লিগ হতে পারে ৷