হায়দরাবাদ, 25 নভেম্বর: বেদুইনের দেশে সব রয়েছে, নেই শুধু দিয়েগো । কাতারে যখন ফুটবলের 'গ্রেটেস্ট শো' হিট হওয়ার সমস্ত উপাদান মজুত, তখন মারাদোনাকেই বোধহয় সবচেয়ে বেশি মিস করছে বিশ্ব । 1982 থেকে 2018, ফুটবল বিশ্ব দেখেছে আর্জেন্তাইন ভগবানের দীপ্ত পদচারণা । কখনও নীল-সাদা জার্সিতে ইতিহাস লিখে কাঁদিয়েছেন দেশবাসীকে, কখনও ইতিহাস ভাঙতে দেখে নিজেই চোখের জলে ভেসেছেন । খেলোয়াড়ি জীবনে সবুজ গালিচায় আলপনা এঁকেছেন, কোচের চেয়ারে বসে ডাগ-আউট মাতিয়েছেন আবার সমর্থক হিসেবে স্ট্যান্ড থেকে চিৎকারে উজ্জীবিত করেছেন দেশের ছেলেদের । ফুটবলের সবচেয়ে উদযাপিত 'শিল্পী'কে ছাড়াই প্রথমবার ফুটবল উৎসবে মেতেছে বিশ্ব (FIFA World Cup 2022)।
1982 সালে শুরু হয়েছিল দিয়েগোর 'স্বপ্ন সফর' । খেলোয়াড়, কোচ বা স্রেফ সমর্থক । দিয়েগো ছিলেন লা আলবেসেলেস্তার অক্সিজেন । আর্জেন্তিনায় এখন ফুটবল আছে, ঈশ্বর নেই । 2020 সালের 25 নভেম্বর, বাড়িতে চিকিৎসারত অবস্থাতেই প্রয়াত হন দিয়েগো (FIFA World Cup 2022 without Maradona) ।
শুধু কি ফুটবল ? মারাদোনা ছিলেন বিপ্লবের মূর্ত প্রতীক । যার বাঁ-পায়ের জাদু স্বপ্ন দেখতে শেখাত, ঘুচিয়ে দিত সীমান্তের বেড়াজাল । ফুটবল পায়ে তিনি হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার চেয়ে কিছু কম ছিলেন না। সেই বাঁশিওয়ালার মহাপ্রস্থানে সুরটাই হারিয়ে ফেলেছে আর্জেন্তাইনরা ।
যদিও, নীল-সাদা জার্সির একজন লিও মেসি আছেন । ঘটনাচক্রে যারও জার্সি নম্বর 10 এবং ঝুলিতে একটিও বিশ্বকাপ না-থাকলেও যিনি প্রবলভাবে দিয়েগোর যোগ্য উত্তরসূরি ৷ কোপা আমেরিকার পর দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেও নীল-সাদা জার্সির ধ্বজা উড়িয়েছেন ইউরোপীয়ান ক্লাবদুনিয়ার অন্যতম সফল ৷ আর্তেমিয়ো ফ্রানসি কাপ ৷ বর্তমানের লা ফাইনালিসিমা ৷ যার পোশাকি নাম কনমেবল-উয়েফা কাপ অফ চ্যাম্পিয়ন্স ৷ এবং দুই সাফল্যই এসেছে দিয়েগোর অনুপস্থিতিতে । কিন্তু ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে প্রাক্তনের অভাবই বোধহয় সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে বর্তমানদের ।
স্বয়ং মেসি জানিয়ে দিয়েছেন, মারাদোনাকে ছাড়া বিশ্বকাপ কল্পনাই করা যায় না। তিনি আমাদের সঙ্গেই আছেন । বিশ্বকাপের আগে আর্জেন্তিনা ও কাতার, দুই দেশেই মারাদোনাকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে । মরু শহর ছেয়েছে মারাদোনার ম্যুরালে । শুক্রবার দিয়েগোর বাস্তব আকৃতির মূর্তি উন্মোচন করেছেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ।