কলকাতা, 21 এপ্রিল : 1996 সালের অলিম্পিকস টেনিসে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন লিয়েন্ডার পেজ । সেই দলের কোচ ছিলেন জয়দীপ মুখোপাধ্যায় । “লিয়েন্ডারের অলিম্পিকস পদকের জন্য আমার নাম দ্রোণাচার্যের জন্য বিবেচিত হওয়া উচিত ছিল । কিন্তু হয়নি । অর্জুন পেলেও পদ্মশ্রী পাইনি । অথচ রামনাথন পেয়েছে । আমি ডেভিড কাপে ভারতীয় দলের নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেন থাকার সময়ে মহেশ ভূপতি-লিয়েন্ডার পেজকে জুটি করে ডাবলস খেলিয়েছিলাম । তারপর ওরা বিশ্বের এক নম্বর জুটি হয়েছে । আমাকে আর্ন্তজাতিক সংস্থা সেরার মনোনয়ন দিয়েছে । কিন্তু দেশে সেভাবে পাইনি ।’’ আক্ষেপ যাচ্ছে না সদ্য 80 বছরে পা দেওয়া বঙ্গীয় টেনিসের সাদা-কালো যুগের শেষ কিংবদন্তি জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের (Tennis Star Jaidip Mukerjea on his Birthday) ।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলার খেলাধুলা ফুটবল-হকি-টেনিসের কৃতীদের কৃতিত্বে ছিল রঙিন । আজ যখন অলিম্পিকসে যোগ্যতা অর্জন বিশেষ কৃতিত্বের সঙ্গে সংবর্ধিত হয়, তখন পাঁচ-ছয়ের দশকে বাংলার ক্রীড়াক্ষেত্র অলিম্পিয়ানের অভাবে ভোগেনি । শুনতে আশ্চর্য লাগলেও ক্রিকেটাররাই ছিলেন পিছনের সারিতে । ফুটবলে বাংলার দাপটের দিনেও সোনা ঝরা বিকেল উপহার দিতেন হকি এবং টেনিসের তারকারা । সেই অনেক তারার মাঝে উজ্জ্বল ধ্রুবতারা অবশ্যই জয়দীপ মুখোপাধ্যায় । দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের নাতি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের নিকট আত্মীয় জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ছিলেন বাংলার টেনিসের ‘পোস্টার বয়’ । শুধু টেনিস খেলোয়াড় হিসেবেই নন, ডেভিস কাপের নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন, কোচ এবং সংগঠক হিসেবেও যথেষ্ট সফল জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ।
বৃহস্পতিবার তাঁর আশি বছরের জন্মদিনে নিজের অ্যাকাডেমিতে ছুটি । ফলে গত দু'দিন ধরে দক্ষিণ কলকাতার একটি অভিজাত ক্লাবে রয়েছেন টেনিস কিংবদন্তি । জন্মদিনের অভিনন্দন বার্তার পরেই ‘ডাউন দ্য মেমোরি লেনে’ হাঁটলেন তিনি । জয়দীপ বলেন, “দেখো পিছনের দিকে তাকালে মনে হয় সুখ-দুঃখ, পাওয়া-না পাওয়া সবকিছু মিলিয়েই আজকের আমি । কি পেয়েছি, কি পাইনি তার হিসেব না করাই বোধহয় ভাল । দিনের শেষে আমি সুখী, একথা বলতে পারি ৷”