পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sports

Aussie Double Standards: অজি দৌরাত্ম্যের নতুন চেহারা, মূল্যহীন প্রতিপক্ষের জীবনও ! - কমনওয়েলথ গেমস

অস্ট্রেলিয়ার কাছে এবার মূল্যহীন প্রতিপক্ষের জীবনও (Aussie Double Standards Put Others Health in Jeopardy) ৷ তারই জ্বলন্ত উদারহণ উঠে এল কমনওয়েলথ গেমসের ফাইনালে ৷ করোনা আক্রান্ত তাহলিয়া ম্যাকগ্রাকে প্রথম একাদশে খেলাল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ৷ আর তাতে সহযোগিতা করল আইসিসি এবং আয়োজক কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশন ৷

Aussie Double Standards Put Others Health in Jeopardy
Aussie Double Standards Put Others Health in Jeopardy

By

Published : Aug 8, 2022, 7:00 PM IST

কলকাতা, 8 অগস্ট: কোভিড পজিটিভ জেনেও কমনওয়েলথ গেমসে মহিলাদের টি-20 ফাইনালে খেলানো হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার তাহলিয়া ম্যাকগ্রাকে (Tahlia McGrath) ৷ আর তার অনুমতি দিয়েছে, ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা আইসিসি এবং কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশন (Aussie Double Standards Put Others Health in Jeopardy) ৷ যা নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, টিম ম্যানেজমেন্ট এবং সিজিএফ-এর চিকিৎসক দল সবরকম সুরক্ষাবিধি মেনে তাহলিয়া ম্যাকগ্রাকে ম্যাচে খেলানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছে ৷

এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য 2022 সালের 16 জানুয়ারি কোভিডের প্রতিষেধক না-নেওয়ায় সাইবেরিয়ান টেনিস তারকা নোভাক জকোভিচকে অস্ট্রেলিয়ায় ঢুকতে দেয়নি ভিক্টোরিয়ান সরকার ৷ সেদেশের নাগরিকদের সুরক্ষার অজুহাতে, কোভিড না-থাকা সত্ত্বেও ৷ 3 বছরের জন্য তাঁকে নির্বাসন করা হয়েছে ৷

কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে আইসিসি এবং সিজিএফ কীভাবে এত বড় একটা ঝুঁকি নিল ! কারণ, এটা শুধু একটা দলের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রশ্ন নয় ৷ প্রতিপক্ষ ক্রিকেটার ও তাঁদের সাপোর্ট স্টাফ এবং মাঠে উপস্থিত আম্পায়ারদের স্বাস্থ্য-সুরক্ষাও এর সঙ্গে জড়িত ৷

প্রসঙ্গত, আইসিসি-র কোভিড সংক্রান্ত যে নিয়মাবলী রয়েছে, সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, কোনও ক্রিকেটার ম্যাচের আগে কোভিড পজিটিভ হলে, তাঁকে তৎক্ষণাত কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে হবে ৷ তাঁর সংস্পর্শে আসা সকলকে আইসোলেশনে পাঠাতে হবে ৷ তাঁদের আরটি-পিসিআর রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তবেই বাকি দলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন ৷ শুধু তাই নয়, আইসিসি-র নিয়ম মতে, প্রয়োজনে ওইদিনের ম্যাচ 24 ঘণ্টার জন্য পিছিয়ে দিতে হবে ৷

আরও পড়ুন:কমনওয়েলথে রুপো জয় ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের, অজিদের বিরুদ্ধে 9 রানে হার হরমনপ্রীতদের

এক্ষেত্রে ম্যাচ পিছনো সম্ভব নয় ৷ কারণ, কমনওয়েলথ গেমস সম্পূর্ণভাবে অন্য একটি স্বতন্ত্র সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয় ৷ কিন্তু, এক্ষেত্রে আইসিসি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে তাহলিয়া ম্যাকগ্রাকে খেলানোর অনুমতি কীভাবে দিল, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে ৷ কারণ, তাহলিয়া ম্যাকগ্রাকে খেলার অনুমতি না-দেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি আইসিসি-র হাতে ছিল ৷

করোনা আক্রান্ত অবস্থায় সতীর্থদের সঙ্গে মেডেল পোডিয়ামে তাহলিয়া ম্যাকগ্রা

এ তো গেল আইসিসি কী করতে পারত, আর কী পারত না ৷ এ বার বিষয়, কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশন কোন যুক্তিতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিল ৷ কারণ, সিজিএফ কোনও একটি বা দু’টি দেশকে নিয়ে টুর্নামেন্ট আয়োজন করেনি ৷ 72টি দেশের কয়েক হাজার প্রতিযোগী এই টুর্নামেন্টে খেলছে ৷ তাঁদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্বার্থরক্ষা করাও সিজিএফ এর দায়িত্ব ৷ সেখানে করোনা আক্রান্ত একজন ক্রিকেটারকে মাঠে নামার অনুমতি দেওয়ার অর্থ, সেই ক্রিকেটারের জীবন এবং মাঠে উপস্থিত প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় সকলের স্বাস্থ্য নিয়ে সমঝতা করা ৷ তা সে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল হোক বা বিশ্বের অন্য যে কোনও ক্রিকেট দল ৷

আরও পড়ুন:কোভিড নিয়েই অজি ক্রিকেটার তাহলিয়া ম্যাকগ্রাকে খেলার অনুমতি, আইসিসি ও সিজিএফ এর ভূমিকায় প্রশ্ন

এখানে আরও একটি প্রশ্ন উঠছে ৷ যা হল, সেমি-ফাইনালে ভারতের পরিবর্তে ইংল্যান্ড মহিলা ক্রিকেট দল জিতলে এবং তাঁরা ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হলে, কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশনের ভূমিকাটা কী হত ! আর এই প্রশ্ন ওঠার এক এবং অন্যতম কারণ, এই টুর্নামেন্টের জন্মই দিয়েছে ব্রিটিশরা ৷ বিশ্বের যেসব দেশে ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল, তাদের নিয়ে এই কমনওয়েলথ গেমস আয়োজন করা হয় ৷ ফলে, কমনওয়েলথের জনক ইংল্যান্ডের ক্রিকেট দল ভারতের জায়গায় থাকলে, এই দায়িত্বজ্ঞানহীনতার ছবি দেখা যেত না, তা বলাই বাহুল্য ৷

16 জানুয়ারি 2022, অস্ট্রেলিয়া ছাড়ছেন নোভাক জকোভিচ

এ বার আসা যাক, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কথায় ৷ তাঁরা এমন একটা দেশের প্রতিনিধিত্ব করে, যেখানকার বিশ্বের 1 নম্বর টেনিস তারকা নোভাক জকোভিচকে করোনার প্রতিষেধক না-নেওয়ায় ভিসা দেয়নি ৷ 2022 সালের 16 জানুয়ারি নোভাককে অস্ট্রেলিয়া ছাড়তে হয়েছিল ৷ শুধু তাই নয়, ভিক্টোরিয়ান প্রশাসন নোভাকের অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের উপর 3 বছরের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ৷ এমনকি ভিক্টোরিয়ান সরকারের তরফে উল্লেখ করা হয়েছিল, ‘‘নোভাক এমন একজন স্পোর্টসম্যান, যাকে তরুণ প্রজন্ম আদর্শ বলে মানে ৷ আর তাঁর কোভিডের প্রতিষেধক না-নেওয়া, আগামী প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দেবে ৷’’

আরও পড়ুন:বার্মিংহ্যামে সিন্ধু-গর্জন, কমনওয়েলথে প্রথম সোনা এল প্রাক্তন বিশ্বজয়ীর ঝুলিতে

যদিও, এখানে বলতে হবে, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড দু’টি আলাদা দেশ ৷ দু’টি পৃথক সরকার এবং তাদের আইন আলাদা ৷ তা সত্ত্বেও যে প্রশ্নটা উঠছে, তা হল- যে সরকার ভ্যাকসিন না-নেওয়ায় একজন তারকা স্পোর্টসপার্সনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, সেই দেশের ক্রিকেট বোর্ড কোভিড পজিটিভ হওয়া একজন ক্রিকেটারকে প্রথম একাদশে জায়গা দিচ্ছে ৷ শুধু তাই নয়, কোভিড পজিটিভ জেনেও, তাঁকে খেলানোর জন্য আইসিসি এবং সিজিএফ এর কাছে তদ্বির করেছে ৷ এখানেই প্রশ্ন, তবে কী কেবল অস্ট্রেলিয়ানদের জীবনেরই দাম আছে ! বাঁচার অধিকার কি কেবল তাঁদেরই রয়েছে ! যেখানে নিজেদের স্বার্থে বিদেশি কোনও খেলোয়াড়ের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে ৷ আর নিজেদের স্বার্থে কোভিড আক্রান্ত হওয়া খেলোয়াড়কে তদ্বির করে মাঠেও নামিয়ে দিতে পারে ৷ এতে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যের সঙ্গে সমঝতা করতে হলেও, ‘কুছ পরওয়া নেহি’, এমনই ঔদ্ধত্যপূর্ণ মানসিকতাই দেখাল ক্যাঙ্গারুরা ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details