হায়দরাবাদ, 30 অক্টোবর: সম্প্রতি এশিয়ান প্যারা গেমসে পদক জয়ের হ্য়াটট্রিক করে ইতিহাস গড়েছেন জম্মু কাশ্মীরের শীতল দেবী ৷ জীবন মানেই বাধার প্রাচীর পেরিয়ে জয়ের আনন্দ খুঁজে নেওয়া ৷ ঠিক সেটাই করে দেখিয়েছেন শীতল ৷ ইতিহাস গড়েছেন প্যারা এশিয়াডে ভারতের প্রথম মহিলা প্যারা অ্যাথলিট হিসাবে দু'টি স্বর্ণপদক জয় করে ৷ সঙ্গে একটি রূপোও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে ৷ শীতল দেবী প্রকৃত অর্থেই যেন রূপকথার নায়িকা ৷ তিনি এমন এক তিরন্দাজ জন্ম থেকেই যাঁর দু'টি হাত নেই ৷
দ্রোনাচার্য 'মহভারত'-এ একলব্যর আঙুল চেয়েছিলেন গুরুদক্ষিণা হিসাবে ৷ হাসতে হাসতে গুরুর আদেশ পালন করেছিলেন দ্রোনের বীর শিষ্য ৷ কিন্তু একলব্যের পরবর্তী জীবনের কাহিনি আর সামনে আসেনি ৷ কিন্তু শীতল দেবীকে বোধহয় বলাই যায় 'আজকের একলব্য' ৷ তাঁর জীবনের গল্পটাও মোটেই সহজ ছিল না ৷ শীতলের জন্ম জম্মু কাশ্মীরের কিশতওয়ার জেলার লোই ধর গ্রামে ৷ জন্ম থেকেই দু'টি হাত ছিল না তাঁর ৷ বাবার জীবিকা চাষবাস আর মা পরিবারের দিন গুজরানের ব্যবস্থা করতেন ছাগল চড়িয়ে ৷
জন্ম থেকেই ফোকোমেলিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন শীতল ৷ এই রোগের কারণে শরীরের বেশকিছু অঙ্গ সঠিকভাবে বিকশিত হয় না ৷ আজকের দিনে খুব সহজেই পা দিয়ে তীর সংযোজন করে ঠোঁট ও পা দিয়ে ছিলা টেনে লক্ষ্যভেদ করেন শীতল ৷ কিন্তু শুরুতে পা দিয়ে তীর তুলে ধনুকে লাগানোটাই বিরাট পরিশ্রমের কাজ ছিল তাঁর জন্য় ৷ সারা বিশ্বের হিসাবে দেখলে মাত্র ছ'জন ধনুর্বিদ আছেন তাঁর মতো ৷ বোঝাই যায় বিষয়টা ঠিক কতটা জটিল ৷