কলকাতা, 3 অগাস্ট : মোহনবাগানের জার্সিতে প্রথম ম্যাচ ৷ তাঁকে ঘিরে জয়ের ছক কষেছিলেন কোচ ৷ আর সেই সালভো চামারোর সৌজন্যেই ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচে জয় পেল মোহনবাগান । যুবভারতীতে মহামেডানকে হারিয়ে অভিযান শুরু করল সবুজ-মেরুন শিবির ৷ ম্যাচের ফল 2-0 । দুটি গোলই করেছেন চামারো ৷
ম্যাচের দু'মিনিটে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার বেইটার ফ্রি কিক থেকে হেডে গোল করেন চামারো । 22 মিনিটে ফের মহামেডানের জালে বল ঢোকান স্প্যানিশ এই স্ট্রাইকার । আশুতোষ মেহতার সেন্টারে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন বাগানের নতুন নয় নম্বর । পা তুলনায় কম চললেও তাঁর হেড যথেষ্ট শক্তিশালী । তবে, জোড়া গোল করে চামারো ম্যাচের নায়ক হলেও মাঝমাঠে নজর কাড়লেন বেইটা । তাঁর বল নিয়ন্ত্রণ যথেষ্ট ভালো ৷ ম্যাচের প্রথমার্ধে বাগানের যাবতীয় দাপটের কারণ তিনিই ।
এই সংক্রান্ত আরও খবর :অনেক স্প্যানিশ-রাশিয়ান দেখেছি, সাফল্য তো 3 ভারতীয় কোচের : সুব্রত
ম্যাচের আগের দিন প্রতিপক্ষকে মেপে নিয়ে প্ল্যান বি'তে যাওয়ার কথা বলেছিলেন মহামেডান কোচ সুব্রত ভট্টাচার্য । প্রথম 22 মিনিটেই দল দু'গোলে পিছিয়ে পড়ায় তাঁর পরিকল্পনা সফল হয়নি । তবে বেইটাকে জ়োনাল মার্কিং করতেই মোহনবাগান ছন্দহীন হতে থাকে । তবে সুযোগ এসেছিল মহামেডানের কাছেও ৷ বিরতির এক মিনিট আগে বাগান গোলকিপার শিলটন পালকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন আর্থার । সেইসময় গোলটা হলে ম্যাচের ছবিটা অন্যরকম হতেই পারত ।
গোল করে উচ্ছ্বাস বাগান খেলোয়াড়দের বিরতির পর ধীরে ধীরে ম্যাচের উপর আধিপত্য বিস্তার করে মহামেডান । শুধুমাত্র পাল্লা দিয়ে প্রতিপক্ষকে রুখে দেওয়াই নয়, অন্তত দু'বার গোলের মুখ খুলেছিল তারা । আর্থার ও তীর্থঙ্কর সুযোগ নষ্ট না করলে মহামেডান হয়ত এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পারত ।
এই সংক্রান্ত আরও খবর :সুব্রতর শব্দব্রহ্ম থামাতে চামারোই ভরসা মোহনবাগানে !
মরশুমের প্রথম ম্যাচে নতুন স্প্যানিশ ঘরানার সঙ্গে কতটা আত্মস্থ হলেন ফুটবলাররা তা দেখতে যুবভারতীতে ভিড় জমিয়েছিলেন মোহনবাগান সমর্থকরা । ম্যাচ শেষে আশার আলো নিয়ে মাঠ ছাড়লেন । প্রথম ম্যাচের পরে সর্বোচ্চ বিশেষণ জুড়ে দেওয়া ঠিক হবে না । তা সত্ত্বেও বলা যায়, প্রথম পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ কিবু ভিকুনা । তবে আগামীদিনে দলের বেশ কিছু সমস্যা সমাধানে বসতে হবে বাগান কোচকে ৷ বিশেষত, বেইটাকে মার্কিং করার পর যেভাবে বাগান ছন্দহীন হলে গেল তা নিশ্চয়ই স্প্যানিশ কোচের নোটবুকে লেখা রয়েছে ৷ তাঁর ছেলেদের মধ্যে আশার আলো থাকলেও কিছু ফাঁকফোকর রয়েছে । অন্যদিকে, মহামেডানের খেলায় বারেবারে গুণগত মানের অভাব ফুটে উঠল ৷
ভারতীয় ফুটবলাররাই দলের চালিকাশক্তি, দলের জয়ে তৃপ্ত ভিকুনা
জয় দিয়ে ভারতীয় ফুটবলে কোচিং ইনিংস শুরু করেছেন । দলের চার স্প্যানিশ ফুটবলারের মধ্যে তিনজনকে নামিয়েছিলেন । স্প্যানিশ ত্রিফলায় জয় এসেছে ৷ তবুও মোহনবাগান কোচ বলছেন, "ভারতীয় ফুটবলাররাই তাঁর দলের চালিকাশক্তি । বিদেশিরা তাঁদের সাহায্য করেন মাত্র ।" সমর্থকদের নিরন্তর সমর্থন পেয়েও খুশি ভিকুনা । তবে পরের ম্যাচে খেলোয়াড়দের শারীরিকভাবে আরও ফিট দলকে চান । দলের জয়ে তৃপ্ত ভিকুনা বলছেন, "বিশ্বের সেরা দলও উন্নতি করতে চায় । (শেষপর্যন্ত) ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে রাখতে চাই ৷ এই জয় দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে ।"
ম্যাচ শেষে বাগান কোচ কিবু ভিকুনা সতীর্থ ও সমর্থকদের গোল উৎসর্গ চামারোর
শুধু সবুজ মেরুন জার্সিতে নয়, ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে গতকাল অভিষেক হল চামারোর ৷ আর প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করে সবুজ-মেরুন জনতার নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন চামারো । সমর্থকদের সমর্থনের কথা তাঁর মুখেও । স্পেন-পর্তুগালের ক্লাব ম্যাচে ভালো খেলা চামারো ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে থিতু হওয়ার জন্য গোল করতে চেয়েছিলেন । প্রথম ম্যাচে লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় আরও গোলের স্বপ্ন স্প্যানিশ স্ট্রাইকারের মুখে । দুটো গোল সতীর্থদের উৎসর্গ করলেন । একইসঙ্গে নিজের পরিবার ও বাগান সমর্থকরা রয়েছেন উৎসর্গের তালিকায় ।