পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sports

ফুটবল-হকি, কেমন কাটছে কিংবদন্তি প্রবীণ ক্রীড়াবিদদের লকডাউন

প্রত্যেকেরই বয়স আশির কোটা পেরিয়েছে । বয়সের কথা মাথায় রেখে সংযমী জীবনযাপন সকলেরই । কোরোনা ভাইরাসের আক্রমণে সেই অভ্যাসকে আরও নিয়মের বেড়াজালে বন্দী করেছেন চুনী গোস্বামী, কেশব দত্ত, গুরুবক্স সিং, বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়রা ।

চুনী গোস্বামী
চুনী গোস্বামী

By

Published : Apr 5, 2020, 6:51 PM IST

কলকাতা, 5 এপ্রিল: ভালো আছেন কলকাতা শহরের প্রবীণ ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা । এই কোরোনা হানায় চুনি গোস্বামী, কেশব দত্ত, গুরুবক্স সিং, বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়, তুলসীদাস বলরামদের মতো ভারতীয় ক্রীড়া জগতের জীবন্ত কিংবদন্তিরা নিজেদের লক্ষ্মণরেখায় বেঁধে ফেলেছেন । প্রত্যেকেরই বয়স আশির কোটা পেরিয়েছে । বয়সের কথা মাথায় রেখে সংযমী জীবনযাপন সকলেরই । কোরোনা ভাইরাসের আক্রমণে সেই অভ্যাসকে আরও নিয়মের বেড়াজালে বন্দী করেছেন ওঁরা ।

একসময় হকি স্টিক হাতে দাপিয়ে বেড়ানো কেশব দত্ত এখন 94 বছরের বৃদ্ধ । ইস্টার্ন বাইপাসের ধারে একটি আবাসনে থাকেন অলিম্পিকে দেশকে দুবার সোনার পদক জেতানো দলের সদস্য কেশব দত্ত। দুই ছেলে মেয়ে বাইরে থাকে । তাই সর্বক্ষণের কাজের লোক মায়া দেবীই ভরসা কেশব দত্তের । বাড়ি থেকে খুব একটা বেরোতে পারেন না । টিভিতে খেলা দেখেন । আজও মন দিয়ে হকি ম্যাচ দেখেন । সন্ধ্যায় ছেলে-মেয়েদের ফোনের অপেক্ষায় দিন কাটে কেশব দত্তের ।

বয়সজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ 82 বছরের চুনি গোস্বামী । এমনিতে ঘরবন্দী তিনি । তার উপর দোসর হয়েছে কোরোনা । 1962 সালের এশিয়াডে সোনাজয়ী ভারতীয় ফুটবল দলের নেতৃত্বের আর্মব্যান্ড ছিল চুনী গোস্বামীর হাতে । কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদকে নিয়মিত ইনসুলিন দিতে হয় । সঙ্গে খেতে হয় আরও 10 রকমের ওষুধ । পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় মারা যাওয়ার পর থেকে চুনি গোস্বামীর ফোনে কথা বলার উপর বিধিনিষেধ আরোপ হয়েছে । তাঁকে ফোন করলে সরাসরি পাওয়া যায় না । স্ত্রী বাসন্তী দেবীর কথায়, "লকডাউনে চিকিৎসক পাওয়া যাবে না তা জানি । তাই নিয়ম মেনে রাখা হচ্ছে ।"

অলিম্পিয়ান গুরুবক্স সিং । এইমুহূর্তে গুরগাঁওয়ে ছেলের বাড়িতে রয়েছেন । কলকাতায় থাকলে নিয়মিত নিজের অফিসে যান । চিরকাল শৃঙ্খলাপরায়ণ জীবন কাটিয়েছেন । এখন সাবধানতা আরও বেশি । তিনি বলছেন, "দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, দেশভাগ দেখেছি । কিন্তু এইরকম পরিস্থিতি দেখিনি । সেই সময় বাড়িতে আটকে থেকেছি নিরাপত্তার কারণে । কিন্তু পুরো দেশজুড়ে সবাইকে ঘরবন্দী থাকতে দেখিনি । এই অবস্থায় খেলা হওয়া সম্ভব নয় । জীবন সবার আগে । অলিম্পিক পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ।"

আগে নিয়মিত হাঁটতে বেরোতেন । এখন আর সে পরিস্থিতি নেই । ঘরবন্দী অবস্থাতেই শরীরচর্চা করছেন 1956 সালের হেলিসিঙ্কি অলিম্পিকে চতুর্থস্থান পাওয়া ভারতীয় দলের অধিনায়ক বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় । ফোনে সুস্থ আছেন বলে আশ্বস্ত করলেন ।

হুগলিতে গঙ্গার ধারের একটি আবাসনের থাকেন তুলসীদাস বলরাম । বরাবরই নিভৃতে থাকতে ভালোবাসেন । এখন একেবারেই ঘরে বন্দী । 1962 সালের সোনাজয়ী ভারতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বলরাম । ফোন করতেই বলছেন, "ভালো আছি । নিয়ম মেনে যতটা থাকা যায় সেভাবে রয়েছি । তোমরাও সাবধানে থেকো । সুস্থ থেকো ।" অভিভাবকসুলভ স্নেহ কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদের গলায় ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details