কলকাতা, 5 অগাস্ট : কলকাতা লিগে হার দিয়ে শুরু করল মোহনবাগান । লিগের প্রথম ম্যাচেই মোহনবাগান 0-3 গোলে হারল পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে ৷ কিবু ভিকুনার স্বপ্নের দৌড় শুরুতেই থামিয়ে দিলেন আনসুয়ামা ক্রোমা । কলকাতা লিগের ইতিহাসে তিন বড় দল পরাজয় দিয়ে খেতাবি দৌড় শুরু করছে তা অনেক উদাহরণ আছে । কিন্তু তিন গোলে লজ্জার হারার উদাহরণ বিরল ।
ক্রোমার জোড়া গোলের সঙ্গে সুপার সাব লক্ষ্মী মান্ডির সৌজন্যে তিন গোলে মোহনবাগানকে হারিয়ে দিল মোহনবাগান ৷ আজ গঙ্গা পাড়ের ক্লাবের মাঠে প্রিয় দলের জয় দেখতে ভিড় জমিয়েছিল বাগান সমর্থকরা । ডুরান্ড কাপে মহামেডানের বিরুদ্ধে দুই গোলে জয় তাদের স্বপ্ন দেখিয়েছিল । কিন্তু ডুরান্ড ও কলকাতা লিগের ব্যস্ত সূচির ভারসাম্য রাখতে দল গঠনে রোটেশন পদ্ধতি প্রয়োগ করেছিলেন কিবু ভিকুনা । আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে প্রথম একাদশে চারটে বদল ।
এই বদল বাগানের ভিত নড়বড়ে করে দিয়েছিল । আজ মোহনবাগানের খেলা দানা বাঁধেনি । দুই মিনিটে বেইটা-সালভো চামারো-ফ্রান গঞ্জালেসের ত্রিফলা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখে আশায় বুক বেঁধেছিল সবুজ মেরুন জনতা । আশা ছিল গোল সময়ের অপেক্ষা । কিন্তু সময় যত এগিয়েছে ততই পিয়ারলেসের পাতা ফাঁদে মোহনবাগান পথ হারিয়েছে । প্রতিপক্ষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ম্যাচে জাঁকিয়ে বসেছেন ক্রোমা । সতীর্থ অ্যান্টনি উলফের সঙ্গে জুটি বেঁধে মোহনবাগান রক্ষণকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন ক্রোমা ।
ক্রোমা-উলফ জুটির কোনও উত্তর গুরজিন্দার, সুখদেব ফ্রান গঞ্জালেসের সামনে ছিল না । 21 মিনিটে পঙ্কজ মৌলার সঙ্গে পাস খেলে গোল করেন ক্রোমা । সেসময় গুরজিন্দর কী করছিলেন তা বড় প্রশ্ন । পিছিয়ে পড়ে সমতায় ফেরার চেষ্টা করে মোহনবাগান । কিন্তু ফ্রান গঞ্জালেস ও সালভো চামারোর শট আটকে যায় পোস্টে । বিপক্ষের বক্সে বার বার ব্যর্থ হওয়ায় ছন্দ হারায় মোহনবাগান । এদিকে প্রচণ্ড গরম এবং আর্দ্রতায় মোহনবাগানের স্প্যানিশ ফুটবলাররা দাঁড়িয়ে পড়ছিলেন ।
কলকাতা ময়দানে পোড় খাওয়া ক্রোমা আন্টনি উলফরা পাল্টা আক্রমণে মোহনবাগানকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন । পিয়ারলেসে সাতজন সবুজ মেরুন প্রাক্তনী রয়েছেন । তাঁরা পুরানো দলের উপেক্ষার জবাব দিতে আজকের ম্যাচকেই বেছে নিয়েছিলেন । বিরতির পরেও তাঁরা রাশ আলগা করেননি ৷
ম্যাচের সাতাত্তর মিনিটে অ্যান্টনি উলফের বুক দিয়ে বল নামিয়ে দেন ক্রোমাকে ৷ ক্রোমা বল ঠেলে দেন পিছনে থাকা লক্ষ্মী মান্ডিকে ৷ সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি পিয়ারলেসের সুপার সাব ৷ পিয়ারলেসের দ্বিতীয় গোল যদি ম্যাচের সেরা আক্রমণের ফসল হয় তাহলে ক্রোমার দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোলটি ফানিয়েস্ট গোল অব দা কলকাতা লিগ । বক্সের বাইরে শিলটন পাল ও ক্রোমার সংঘর্ষে ছিটকে যাওয়া বল ব্যাক স্পিন করে ক্রোমার কাছে চলে যায় । বল পেয়ে গোল করতে ভুল করেননি ক্রোমা ।
তিন গোলের ধাক্কায় মোহনবাগান এতটাই বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল যে শেষ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি চামারো । ডুরান্ডে ভালো খেলার পর লিগের ম্যাচে তাঁর দল হতশ্রী ফুটবল খেলেছে বলে জানিয়েছেন কিবু ভিকুনা । প্রথমার্ধেই সবজ-মেরুন শিবির ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল বলে মনে করেন বাগান কোচ । একই সঙ্গে তিরিশ পয়েন্টেই কলকাতা লিগ ধরে রাখা সম্ভব বলে জানিয়েছেন কিবু ভিকুনা ৷