হায়দেরাবাদ, 30 অক্টোবর : ভাল নেই ভারতীয় ফুটবলের 'বড়ে মিঞা' । প্রাক্তন ফুটবল-তারকা মহম্মদ হাবিব স্নায়ু রোগে ভুগছেন । স্মৃতি শক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে । কাউকে সেভাবে চিনতেও পারেন না । অসংলগ্ন কথা বলেন । চলাফেরার শক্তিও ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে । দিন যত এগোচ্ছে একটু একটু করে 'বড়ে মিঞা' যেন আরও অথর্ব হয়ে পড়ছেন ।
ছ‘মাস আগেও যে ফুটবলারটি ফোনে কিছুটা হলেও কথা বলতে পারতেন, এখন তাঁর কথা আরও অস্পষ্ট । হায়দরাবাদে নিজের বাড়িতেই কার্যত শয্যাশায়ী একসময়ের ময়দান কাঁপানো তারকা । কিন্তু কেন এত অসুস্থতা ? দীর্ঘদিনের হৃদরোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্নায়ুর রোগ । ফলে চলৎশক্তি হারানোর সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তিও বিশ্বাসঘাতকতা শুরু করেছে । অনেক ঘটনাই মনে করতে পারেন না । 22 অক্টোবরের পর থেকে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে । চিকিৎসা চললেও উন্নতি যে হচ্ছে তা বলতে পারলেন না ভাই আকবর ।
আরও পড়ুন : SC East Bengal : আইএসএল প্রস্তুতির মাঝেই ইস্টবেঙ্গলে ফের অন্তর্কলহ প্রকাশ্যে
বছর দেড়েক আগে মোহনবাগান ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন দু'জন । সেদিন অশ্রুসজল চোখে দাদার আরোগ্য কামনায় সবাইকে প্রার্থনা করতে বলেছিলেন । এবারও একই কথা বললেন । ইতিমধ্যেই মহম্মদ হাবিবের অসুস্থতার খবর পৌঁছেছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে । কিংবদন্তী ভারতীয় ফুটবলারের চিকিৎসার জন্য পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাব তাঁর প্রাণপ্রিয় ক্লাব ।
কসমসের বিরুদ্ধে সেই বিখ্যাত ম্যাচে কিংবদন্তী পেলেকে আটকাচ্ছেন হাবিব এবং শ্যাম থাপা ৷ 1966 সালে প্রথমবার নিজামের শহর থেকে কলকাতায় পা দিয়েছিলেন মহম্মদ হাবিব । একমাত্র পুঁজি ছিল ফুটবল দক্ষতা । প্রথমে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে সই করেন । চুটিয়ে খেলেছেন মোহনবাগান এবং মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়েও ৷ টানা 19 বছর বাংলার ক্লাব ফুটবলে রাজত্ব করেছেন লাল-হলুদের 'সত্তরের স্বর্ণযুগের' অন্যতম মুখ । বাংলার হয়ে একাধিকবার সন্তোষ ট্রফি জয়, ভারতের হয়ে টানা এগারো বছর প্রতিনিধিত্ব করা হাবিবের ইউএসপি ছিল শৃঙ্খলা, হার না মানা মনোভাব ।
আরও পড়ুন : কোহলির নজির ভাঙলেন বাবর, আফগানদের হারিয়ে সেমিফাইনালের পথে পাকিস্তান
প্রাক্তন ফুটবলার সমরেশ চৌধুরী বলছেন, "হাবিবের তুলনা হাবিবই । ওর অসুস্থ হওয়ার খবর শুনে খারাপ লাগছে । আগেই শুনেছিলাম ও অসুস্থ, তবে এতটা বাড়াবাড়ি হয়েছে জানতাম না । ফুটবলের জন্য জান কবুল ছিল ওর । আশা করব ও অন্তত বিপদটা কাটিয়ে উঠবে ।" হাবিবের অসুস্থতার খবরে চিন্তিত সুব্রত ভট্টাচার্যও । মোহনবাগানের ঘরের ছেলে বলছেন, "ওই মানের ফুটবলার ভারতে কম এসেছে । ফুটবলের প্রতি ওর ডেডিকেশন চিন্তা করা যায় না । কয়েকবছর আগে মোহনবাগান মাঠের অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল । ওর মত মানুষকে ওইরকম অবস্থায় দেখব আশা করিনি । আশা করি ওর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হবে ।"