পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : May 10, 2020, 7:27 PM IST

ETV Bharat / sports

নিনথৈয়ের অনুশীলনে সাহায্য ভলিবলার মায়ের, কুর্নিশ ফুটবল দুনিয়ার

নিনথৈয়ের মা মিনা লিমা প্রথম জীবনে নিয়মিত ভলিবল খেলতেন । সেই অভ্যাস ছেলের ফুটবল চর্চায় কাজে লাগালেন মধ্যবয়সী মণিপুরী মহিলা ।

Ninthoi
Ninthoi

মণিপুর, 10 মে: লকডাউনে ঘরবন্দী দুনিয়া । মাঠে নেমে বল নিয়ে অনুশীলন ক‍রার সুযোগ নেই । ঘরের সামনের এক ফালি জায়গায় হালকা ফিটনেস ট্রেনিং হতে পারে । কিন্তু বল নিয়ে অনুশীলন নৈব নৈব চ । অথচ বল নিয়ে মাঠে নামা জরুরি । উপায় কিছুতেই বের করতে পারছিলেন না বছর আঠারোর মণিপুরী ফুটবলার নিনথৈ মিতেই । অগত্যা দ্বারস্থ হলেন সব মুশকিল আসান মায়ের কাছে । আর তাতেই হল কাজ ।

নিনথৈয়ের মা মিনা লিমা প্রথম জীবনে নিয়মিত ভলিবল খেলতেন । সেই অভ্যাস ছেলের ফুটবল চর্চায় কাজে লাগালেন মধ্যবয়সী মণিপুরী মহিলা । ঘরের সামনের জায়গায় বেঞ্চ পাতা হল । বেঞ্চের দুদিকে দাঁড়ালেন ছেলে এবং মা । ফুটবলার ছেলে পা দিয়ে বল পাঠাচ্ছেন আর তা ভলিবলের কায়দায় ফিরিয়ে দিচ্ছেন মা । প্রায় দশটি শটের রালিতে ছেলের ফুটবল চর্চায় সাহায্যে এই অভিনব প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছে ফুটবল দুনিয়া ।

মায়ের সঙ্গে
অনূর্ধ্ব-17 বিশ্বকাপ খেলা নিনথৈ বলেছেন,"দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকতে পারি না । আমি মাঠে ফিরতে চেয়েছিলাম । তখন আমার মা সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন । জানতাম মা ফুটবল খেলতে পারেন না । কিন্তু দুজনে মিলে প্র্যাকটিসের উপায় বের করেছি ।" একইসঙ্গে এই কিশোর ফুটবল প্রতিভা বলেছেন, "মা তাঁর সময়ে ভলিবল খেলতেন । খেলাটির প্রাথমিক জ্ঞান জানা আছে । তাই দুজনে মিলে ফুট টেনিস খেলার চেষ্টা করেছি । আমি পা দিয়ে বল মেরেছি আর মা ভলিবলের মতো করে তা হাত দিয়ে পাঠিয়েছে। এতে দারুণ ওয়ার্কআউট হয়েছে আমাদের ।"
সতীর্থদের সঙ্গে নিনথৈ
2013 সালে ফেডারেশনের অ্যাকাডেমিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে নিনথৈয়ের খেলায় উন্নতি হয়েছে । অনূর্ধ্ব-17 বিশ্বকাপের প্রাথমিক পর্বে নিয়মিত খেলেছিলেন । কিন্তু খেলোয়াড়ি জীবনের সেরা মুহূর্তের সময় পরিবারে নেমে এসেছিল দুঃখ । নিনথৈয়ের বাবার ক্যানসার ধরা পড়েছিল । পেশায় দুধওয়ালা নিনথৈ-এর বাবা তারপর বেশিদিন বাঁচেননি । এই অবস্থায় সংসার চালাতে তার মা মিনা লিমা বাজারে শুকনো মাছ বিক্রি শুরু করেন । সেদিনের সেই কঠিন সময় আর মনে করতে চায় না নিনথৈ । বিশ্বকাপের পরে ইন্ডিয়ান অ্যারোজ দলের সঙ্গে চুক্তি বদ্ধ হয়েছেন তিনি । পরিবারে অভাব আর নেই । মা এখন আর বাজারে মাছ বিক্রি করতে যান না । দুই বোন আর মায়ের মুখের হাসি বজায় রাখতে নিনথৈ আরও কঠোর পরিশ্রম করতে চান । মা তাঁকে আদর করে লিটল বডিগার্ড নামে ডাকেন । ফুটবলে ভর দিয়ে লিটল বর্ডিগার্ড আরও বড় হতে চায় ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details