কলকাতা, 29 নভেম্বর : ফিজি থেকে স্কোরিং বুটটা সঙ্গে করেই ISL-এ নিয়ে এসেছেন রয় কৃষ্ণ । 15টি গোল করে গত মরশুমে এটিকের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মূল কারিগর ছিলেন ফিজির এই স্ট্রাইকার । চলতি ISL-এ এটিকে-মোহনবাগানের দুটো জয়ের কারিগরও তিনি । প্রতিপক্ষ রক্ষণের ক্ষণিকের ভুল কাজে লাগিয়ে বাজিমাত করে চলেছেন কৃষ্ণ ।
এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে মর্যাদার ডার্বিতেও ত্রাতা সেই কৃষ্ণ । স্কট নেভিল এবং ড্যানিয়েল ফক্সের বজ্র আঁটুনিতে যখন মোহনবাগান ফুটবলাররা আটকে পড়েছেন, তখনই অসাধারণ গোল করে বাজিগর হয়ে উঠলেন । ইতিমধ্যে ভারতীয় ফুটবল দর্শন এবং সংস্কৃতি বুঝতে হিন্দিতে সড়গড় হওয়ার চেষ্টা করছেন । সাজঘরে তারকা ইমেজ ছেড়ে পরিবারের বড়দাদা হয়ে ওঠার চেষ্টায় তিনি । এমনকি নিজের গোলোর থেকেও মনবীরের গোলটি আগিয়ে রাখলেন ৷
"মনবীরের গোলটা বিশ্বমানের । প্রায় পঁচিশ গজ দৌড়ে লাল-হলুদ রক্ষণের জটলার মধ্যে থেকে জালে বল রেখেছে । নিসন্দেহে পরিশ্রম এবং বুদ্ধির মিশেল ওই গোল । এই গোলের পরেই ডার্বি জয় নিশ্চিত হয়ে যায়," মনবীরের প্রাণখোলা প্রশংসা রয় কৃষ্ণের । দলের সিনিয়র ফুটবলারের ভূয়সী প্রশংসায় অনুপ্রানিত মনবীর সিং । জলন্ধরের দূর্ফ গ্রামের ছেলে বাংলার বিরুদ্ধে খেলেছেন । সাফ কাপে দেশের হয়ে তিনটি গোল করেছেন । কলকাতার ক্লাব দলেও খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে । কিন্তু ডার্বিতে নামা হয়নি । তাই ISL-র মঞ্চে প্রথম ডার্বিতে গোল করে নায়ক হওয়ার আনন্দ মনবীরের ।
"ক্লাব এবং দেশের হয়ে গোল রয়েছে আমার । উইং বরাবর দৌড়ে বল জালে পাঠানো আমার প্রিয় । তবুও শুক্রবারের রাত সবার আগে রাখব । কারণ এক গোলে এগিয়ে থাকলেও জয় সুনিশ্চিত হয়নি । তাই আমার গোল করা সেই নিশ্চয়তায় সিলমোহর দিয়েছে । কলকাতার মহমেডান ক্লাবের হয়ে খেলেছি । তবে ডার্বিতে নামার স্বপ্ন ছিল । এখন তা পূরণ হয়েছে," উচ্ছ্বাস তরুণ স্ট্রাইকারের গলায় । পরপর দুটো ম্যাচ দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বলে মনে করেন ।
ডার্বিতে মনবীরের পারফরম্যান্স কোচ আন্তেনিও লোপেজ হাবাসের প্রশংসা কুড়িয়েছে । সতীর্থদের অভিনন্দনের হাত এগিয়ে এসেছে । জেসিটি এবং মিনার্ভা পঞ্জাবের অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা মনবীর বলছেন গোল স্ট্রাইকারের গুরুত্ব বাড়িয়ে দেয় । এখন থেকে সুযোগ পেলেই গোল করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন । প্রথম ম্যাচে তাঁর পাস থেকে রয় কৃষ্ণ জয়সূচক গোল করেছিলেন । ডার্বিতে তাঁর গোলকে বিশ্বমানের বলেছেন রয় কৃষ্ণ । প্রাক্তন ফুটবলার কুলদীপ সিংয়ের পুত্র মনবীর সিং ইতিমধ্যে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে শুভেচ্ছা ফোন পেয়েছেন । বাবা তাঁর ছোটবেলার প্রথম কোচ । তাই গোল করার পরে বাবার কথাই মনে পড়েছিল মনবীরের । এদিকে রয় কৃষ্ণ বলেছেন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সদস্য সমর্থকদের সামনে ডার্বি জিততে পারলে খুশি হতেন । তবে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে সদস্য সমর্থকদের মন ভরাতে পেরে তৃপ্ত তিনি ।