কলকাতা, 24 এপ্রিল : চারিদিকে মহামারির হাহাকার ৷ তার মধ্যে শোকের ছায়া কলকাতা ময়দানে ৷ চলে গেলেন মোহনবাগানের প্রাক্তন ফুটবলার প্রণব গঙ্গোপাধ্যায় । বয়স হয়েছিল 75 । পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে কিছু বলা হয়নি । তবে গত কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন । প্রণববাবুর লন্ডন নিবাসী পুত্র প্রদীপ্ত গঙ্গোপাধ্যায় মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন । প্রণববাবুর মেয়েও লন্ডনে থাকেন ।
গতবছর মোহনবাগান ক্লাবের পক্ষ থেকে তাঁকে জীবনকৃতি সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছিল । টানা 12 বছর সবুজ মেরুন জার্সিতে খেলেছেন প্রণব গঙ্গোপাধ্যায় ৷ একবছর অধিনায়কের দায়িত্বও সামলেছিলেন তিনি । ফুটবলের পাশাপাশি মোহনবাগানের হয়ে হকি খেলতেন সুদর্শন এই ফুটবলার ৷ পার্কসার্কাসের বেনিয়াপুকুর অঞ্চলে থাকতেন ৷ তবে তাঁর আদি বাড়ি হাওড়ায় । সাহেবদের মতো টুকটুকে গায়ের রংয়ের কারণে ভালোবেসে মোহনবাগান সমর্থকরা তাঁকে 'সাহেব ফুটবলার' বলে ডাকতেন ৷ দাপুটে ফুটবলের কারণে সমর্থকদের মনে সহজেই জায়গা করে নিয়েছিলেন ।
আরও পড়ুন : প্রাণ কেড়েছে করোনা, অগোচরেই রয়ে গেলেন ভারতীয় ফুটবলের লালা
লেফট আউটে খেলতেন । চুনী গোস্বামী, জার্নেল সিংদের ফুটবল জীবনের শেষ দিকে প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়ের মোহনবাগানের হয়ে খেলতে আসা । সেইসময় নইমুদ্দিন, সুধীর কর্মকার, সুভাষ ভৌমিকরা ছিলেন সমসাময়িক । বহু অসাধারণ ম্যাচে দুরন্ত পারফরম্যান্স করা প্রণব গঙ্গোপাধ্যায় 1969 সালের শিল্ড ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোল করেছিলেন । ফুটবল জীবনে অমল দত্তর কোচিংয়ে বেড়ে উঠেছিলেন ৷ নানাভাবে তাঁকে ব্যবহার করে সেরা খেলাটা বের করে নিয়ে আসতেন অমল দত্ত । রবি রবসনের কাছে কোচিং ডিপ্লোমা করা প্রণববাবু কৃতজ্ঞ ছিলেন প্রিয় অমলদার প্রতি ।
ফর্সা চেহারা, মাথায় কাঁচাপাকা চুল, চোখে সোনালি ফ্রেমের চশমা ৷ প্রণব গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন স্বতন্ত্র । ফিয়াট গাড়ি চালিয়ে ময়দানে যাতায়াত ছিল তাঁর ৷ সকলের সঙ্গে অমায়িক ব্যবহার তাঁকে ছোটবড় সকলের প্রিয় করে তুলেছিল । মোহনবাগানের হয়ে খেললেও সিসিএফসি ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । মোহনবাগান দিবসে ভেটারেন্স ফুটবলারদের ম্যাচে তাঁকে খেলতে দেখা যেত । তাঁর প্রয়াণে ময়দানে শোকের ছায়া ।