পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sports

লকডাউনে বন্ধ খেপ ফুটবল, বাড়ছে আশঙ্কা - Corona virus

লকডাউনের ধাক্কায় খেপ ফুটবল এখন বন্ধ । আর তাতে সমস্যায় পড়েছেন দেশি বিদেশি ফুটবলাররা ।

foreign footballers of khep are in problem due to lockdown
ব্রাত্যজনের রুদ্ধ ফুটবল

By

Published : Apr 10, 2020, 3:46 PM IST

Updated : Apr 10, 2020, 9:03 PM IST

কলকাতা, 10এপ্রিল : এ যেন ব্রাত্য জনের রুদ্ধ ফুটবলের উপাখ্যান । লকডাউনের বাজারে বিশ্বজুড়ে ক্রীড়াদুনিয়ার কলড অফ । বিখ্যাত ক্রীড়াবিদরা সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন । সময়োচিত কাজ নিসন্দেহে । কিন্তু প্রদীপের তলার অন্ধকার যে চোখ এড়িয়ে যায় । ফুটবল দুনিয়ায় ভারত তৃতীয় বিশ্ব হলেও ফুটবল আবেগে এই দেশের মানুষ প্রথম শ্রেণির দেশগুলোকে টেক্কা দিতে পারে । তাই পাড়ার ফুটবল টুর্নামেন্ট এখনও এদেশে বিশেষ করে এই বাংলায় আকর্ষণের কেন্দ্রে । আই লিগ এবং ISL-র পাশে কার্যত সমান্তরাল ভাবে চলে এই টুর্নামেন্ট । যার মেঠো নাম খেপ ফুটবল । লকডাউনের ধাক্কায় খেপ ফুটবল এখন বন্ধ । আর তাতে সমস্যায় পড়েছেন দেশি বিদেশি ফুটবলাররা । কলকাতা মাঠে বিদেশি ফুটবলারদের বিজ্ঞাপনে দুই প্রধানের স্প্যানিশরা যদি মুখ হন তাহলে নাইজেরিয়া, আইভরি কোস্ট, লাইবেরিয়া থেকে আগত ফুটবলাররা গুরুত্বপূর্ণ প্বার্শ চরিত্র । এবং কলকাতা ফুটবলে বিদেশিদের সমাদরের আতসকাচে এরা ব্রাত্যজন । ক্রোমা, কামো, ওয়াইডি ওরক ওরক কলকাতা ক্লাব ফুটবলে গায়েগতরের ফুটবলার হিসেবে পরিচিত । কিন্তু খেপ ফুটবলে এরা মুকুটহীন বাদশা ।

খেপের ফুটবলের সঙ্গে জড়িত উল্টোডাঙার বান্টি দে বলছিলেন, ‘‘লকডাউনের বাজারে বড় ধাক্কা লেগেছে খেপের মরশুমে । উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলেই খেপের টুর্নামেন্ট শুরু । চলত পূজোর আগে পর্যন্ত । নভেম্বর মাসে ফের খেপ ফুটবল শুরু হয়ে শেষ হত ফেব্রুয়ারি মাসে । সাতজন ফুটবলারকে নিয়ে দল গঠিত হয় । কৃষ্ণনগর, বর্ধমান, ধুবুলিয়া, বারুইপুর, কাকদ্বীপ, উল্টোডাঙা, বেলঘড়িয়া, দমদমে এই খেপ ফুটবলে রমরমা ।’’

‘‘খেপের জন্য যারা দল তৈরি করে তার পেছনে ফুটবলকে ঘিরে আবেগ থাকে । সেই কারণে স্থানীয় ফুটবলারদের পাশাপাশি বিদেশিদের নিয়ে দল গড়তেও এরা দুবার চিন্তা করে না ৷’’, বলছিলেন বান্টি । একই সঙ্গে জানিয়েছেন, খেপের মাঠে সবচেয়ে বেশি টাকা নিয়ে থাকে ওয়াইডি এবং ক্রোমা । ছোট আয়োজক হলে ম্যাচ প্রতি 12 হাজার টাকা নিয়ে থাকে এই দুই ফুটবলার । টুর্নামেন্ট বড় হলে ম্যাচ প্রতি 15হাজার টাকা দর হাকে এই দুই ফুটবলার ।

দেশীয় ফুটবলারদের মধ্যে ভাস্কর লাহিড়ী, কাশী, কৌশিকদের ম্যাচ প্রতি দর তিন হাজার টাকা । এত গেল খেপ ফুটবলের ইতিবৃত্ত । তাতে ব্রাত্যজনের রুদ্ধ ফুটবল হল কোথায়?‘‘ অঙ্কটা বুঝছেন না ? ’’ বান্টি সমস্যার আরও বিশ্লেষণে । উইকএন্ডে এই খেপ ফুটবল হয় । ক্রোমা, ওয়াইডিরা মাসে প্রায় 80হাজার টাকা উপার্জন করে খেপ খেলে । ওয়াইডি এখন তার দেশ নাইজেরিয়াতে । কামো রয়েছেন আইভরি কোস্টে । লকডাউনের ফলে ফিরতে পারছেন না । খেপের মরশুম শুরু হওয়ার আগে ভারতে আসার কথা ছিল । লকডাউনের জন্যে মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়েও লাইবেরিয়া যেতে পারেননি ক্রোমা । কেইটা, যোশেফ, ওরক ওরক এই দেশে পড়ে রয়েছেন । আইভরি কোস্টের চার্লস, একইভাবে ঘরবন্দী । এদিকে লকডাউনে খেপ টুর্নামেন্ট কবে শুরু হবে কেউ বলতে পারছে না । জমানো টাকা কমছে । "

দেশীয় ফুটবলারদের তুলনায় বিদেশিদের জীবনযাপন বিলাসবহুল । ফলে বছরে আট-দশ লাখ টাকা উপার্জন করলেও গচ্ছিত বেশি নেই । তাছাড়া দেশে টাকা পাঠাতে হয়।তাই লকডাউনের বাজারে পকেটে টান পড়ছে,"বলছেন বান্টি । সমস্যা এখানেই শেষ নয় । বরং একটু জটিল । কি সেই সমস্যা?

"এদের সবার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। প্রশাসন তো ছাড়বে না। লকডাউনে বাইরে বেরনো যাচ্ছে না।খাওয়ার টাকা ফুরোচ্ছে,তারওপর ভিসা সমস্যা দেখা দিলে বিপদ বাড়বে," বলছিলেন বান্টি । মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ ফুটবলারদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে স্পেন উদ্যোগ নিয়েছে । কিন্তু ক্রোমা, চার্লসদের মত খেপের ফুটবলারদের খবর কে রাখে । লকডাউনে ব্রাত্যজনের রুদ্ধ ফুটবল ।

Last Updated : Apr 10, 2020, 9:03 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details