কলকাতা, 11 জুলাই : সেবার প্রথমবার কলকাতায় পা পড়েছিল লিওনেল মেসির । বছর দশেক আগে তাঁর খেলায় ছিল মধ্যদুপুরের রোদের তেজ । ভারতীয় ফুটবলের মক্কা তার আগেও বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তিদের দেখেছে । কিন্তু তাঁরা প্রায় সবাই এসেছিলেন বুটজোড়া তুলে রাখার পর । একমাত্র ফুটবল সম্রাট পেলে কলকাতায় খেলেছিলেন তাঁর ফুটবল জীবনের বেলাশেষে । অলিভার কান জীবনের শেষ ক্লাব ম্যাচ খেলেছিলেন তিলোত্তমায় । কিন্তু লিওনেল মেসির মতো কেউ জাতীয় দলের জার্সিতে ফুটবল জীবনের মধ্যগগনে আসেননি ।
28 বছর পরে কোপা আমেরিকা জিতল আর্জেন্টিনা । তাও আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে । অধিনায়ক মেসি প্রথমবার দেশের জার্সিতে সিনিয়র পর্যায়ে বিজয় মঞ্চে পা রাখলেন । তাঁর ফুটবল জীবনের অপূর্ণ স্বাদ পূরণ হল ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে ।
মারাকানা থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, ভৌগোলিক দূরত্বটা কত ? চটজলদি বলাটা শক্ত । কিন্তু রবিবাসরীয় ভোরে নীল সাদা জার্সির দশ নম্বর মিলিয়ে দিল দুটো স্টেডিয়ামকে । কলকাতায় অধিনায়ক মেসির অভিষেক হয়েছিল যে । শুনেই প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য বলে উঠলেন, "ঠিকই বলেছেন । আর্মব্যান্ড হাতে চড়িয়ে মেসি দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেছিলেন এই কলকাতাতেই । ফুটবলার হিসেবে লা জবাব । ক্লাব ফুটবলের সমস্ত ট্রফি জিতলেও দেশের জার্সিতে ফাঁড়া কাটছিল না । মারাকানা সেটাই কাটিয়ে দিল । 2014 সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা এই স্টেডিয়ামে জার্মানির কাছে হেরেছিল । সেদিনের ছবি আজও চোখে ভাসে । আজ মেসিকে এত উচ্ছ্বসিত হতে প্রথমবার দেখলাম । বোধহয় শাপমুক্তির আনন্দে ৷" প্রতিপক্ষ ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে প্রথমবার আর্মব্যান্ড হাতে জড়িয়ে মাঠে নেমেছিলেন এলএম টেন ।
আরও পড়ুন : Copa America final : মারাকানায় শাপমুক্তি, মেসির হাতে উঠল ট্রফি ; কোপা জয় আর্জেন্টিনার
উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া লিওনেল মেসির ছবি সেভাবে দেখা যায় না । তাঁর নিয়ন্ত্রিত পাসের মতই আবেগও নিয়ন্ত্রিত । কিন্তু ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ট্রফি ছোঁয়ার পরে মেসিও যেন বল্গাহীন ।
বিশ্ব ফুটবলে লিওনেল মেসি বনাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর অদৃশ্য দ্বৈরথ রয়েছে । ব্যালন ডি'অর জয় থেকে দেশের জার্সি, সবেতেই পরস্পর পরস্পরকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেন । ইউরো কাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পরে সিআর সেভেন নিশ্চিতভাবে কোপা ফাইনালে চোখ রেখেছিলেন । কারণ 2016 সালের দশ জুলাই রোনাল্ডো ইউরো জিতেছিলেন দেশের জার্সিতে। প্রিয় প্রতিপক্ষ দেশের জার্সিতে ট্রফি জয়ের অপূর্ণ স্বাদে স্পর্শ করতে পারেন কি না তা দেখার আগ্রহ ছিল । মেসি পাল্টা জবাব দিলেন সেই 11 জুলাই ।