কলকাতা, 27 অক্টোবর : কলকাতা লিগের শেষ পর্বে এসে সংঘাতে জড়াল রাজ্য ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা এবং ক্যালকাটা রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন ৷ এই সময়টা ময়দানে বিজয়া সম্মিলনীর আবহ থাকে ৷ কিন্তু, সেখানে পারস্পরিক সৌহার্দ্য বিনিময় ছেড়ে রীতিমত যুযুধান দুই পক্ষ ৷ আইএফএ বনাম রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে চলা বিতর্ক ময়দানের উত্তাপ ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে ৷ সুতারকিন স্ট্রিট এবং রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের পদাধিকারীদের বেলাগাম আচরণেই এই বিতর্ক শুরু হয়েছে বলে মনে করছে ময়দানের সঙ্গে জড়িত লোকজন ৷
বলা হচ্ছে , আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের কিছি আচরণ বিরক্তি বাড়িয়েছে বাংলার রেফারিদের একাংশের মধ্যে ৷ আবার বাংলার প্রথম সারির বেশ কয়েকজন রেফারি আছেন, যাঁরা কলকাতা রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সচিব সুকৃতি দত্তের আচরণেও ক্ষুব্ধ । এ নিয়ে এক প্রাক্তন ফিফা রেফারি জানান, ‘‘রেফারি হল মাঠের বিচারক ৷ তাঁকে যদি রাজ্য ফুটবল নিয়ামক সংস্থা নিজের দফতরে ডেকে সমঝে চলার কথা বলে ৷ তাহলে সে মাঠে নেমে স্বাধীনভাবে বাঁশি বাজাতে পারবে ? যা ঘটেছে তা বাংলা রেফারিদের পক্ষে অনভিপ্রেত এবং এটা একটা কালো অধ্যায় হয়ে থেকে যাবে ৷ অতীতে এমন হয়নি ৷ কিছুদিন অপেক্ষা করুন ৷ সব জানতে পারবেন ৷’’
এখানেই প্রশ্ন, কী এমন ঘটল ? যে রেফারির একটা অংশ রাজ্যের ফুটবল নিয়ামক সংস্থার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছেন ৷ আর সেই ক্ষোভ এখন সামনেও চলে এসেছে ৷ এই ঘটনার সূত্রপাত, কলকাতা লিগের একটি ম্যাচকে ঘিরে ৷ চলতি মরসুমে লিগের নকআউট পর্বে কোয়ালিফাইয়ারে মহমেডান ও টালিগঞ্জ ম্যাচ রেফারি তন্ময় ধরের একটি সিদ্ধান্ত যাবতীয় গন্ডগোলের নেপথ্যে ৷ মহমেডানের বিদেশি ডিফেন্ডার হ্যান্ডবল করায়, তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়েছিলেন রেফারি ৷ সেই থেকেই যত বিতর্ক ৷
আরও পড়ুন : Sourav Ganguly : স্বার্থের সংঘাত, এটিকে-মোহনবাগানের পদ ছাড়ছেন সৌরভ
এই ঘটনার পর সবাইকে অবাক করে রেফারিদের বিরুদ্ধে কিছু মন্তব্য করেন আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ৷ আর সেটাও তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় ৷ সেখানে তিনি বলেছিলেন, 1. রেফারিং নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠছে 2. রেফারিদের মান উন্নত হচ্ছে না 3. রেফারিরা পোস্টিং নিয়ে ভাবছেন 4. মান যদি না বাড়ে তাহলে রেফারিজ বোর্ড গঠন নিয়ে ভাবতে হবে ৷ প্রয়োজন হলে 9 ওয়াই ধারা অনুযায়ী সিআরএ ভেঙে দিতে পারে আইএফএ 5. রেফারিদের মধ্যে অন্তর্কলহ বেশি এবং 6. এই ভাবে চলতে থাকলে আসন্ন আইএফএ শিল্ডে বাইরের রেফারি দিয়ে ম্যাচ খেলানো হবে ৷
আরও পড়ুন : CFL : ডুরান্ডের পর কলকাতা লিগ, ভবানীপুরের বিরুদ্ধে হার মহমেডানের
সোশ্যাল মিডিয়ায় আইএফএ সচিব ওই পোস্ট করার পরেই ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে ডাক পড়ে মহমেডান বনাম টালিগঞ্জ ম্যাচ রেফারি তন্ময় ধরের ৷ সেই ম্যাচের বিতর্কিত অংশ অর্থাৎ, হ্যান্ডবল ও লাল কার্ডের ভিডিয়ো ফুটেজ দেখিয়ে সেদিন তন্ময় ধরকে নাকি বলা হয়েছিল, তাঁর অবস্থান ঠিক ছিল না ৷ তিনি ঘটনাস্থল থেকে দূরে ছিলেন ৷ আর বল মহমেডানের ফুটবলারটির হাতে লেগেছে কি না, তা স্পষ্ট নয় ৷ সূত্রের খবর, এর পর আত্মপক্ষ সমর্থনের যথাযথ সুযোগ পাননি তন্ময় ধর ৷ এখানেও প্রশ্ন রয়েছে ৷ লিগের মাঝপথে মডালিটি বদল করে আইএফএ । জানিয়ে দেয়, গ্রুপ লিগের (নকআউট কোয়ালিফাইয়ের ম্যাচও এর মধ্যে পড়ছে) লাল কার্ড বা হলুদ কার্ড নকআউট পর্বে অর্থাৎ, কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে গ্রাহ্য হবে না ৷ তাহলে নতুন মডালিটি অনুযায়ী, রেফারি তন্ময় ধরের দেখানো লাল কার্ড এমনিতেই পরের ম্যাচে গ্রাহ্য হত না ৷ তাহলে রেফারি তন্ময়কে ডেকে সমঝে দেওয়া হল কেন ? প্রকাশ্যে এই ভাবে রেফারিদের সমালোচনা আইএফএ-তে হয়তো প্রথম ঘটল ৷ এই ঘটনার কয়েকদিন পরেই ছিল মহমেডানের ম্যাচ ৷ তার আগে আইএফএর এই অতি সক্রিয়তায় সকলেই বিস্মিত করে এবং ক্ষোভের সূত্রপাত এখান থেকে শুরু হয় ৷
আরও পড়ুন : Sunil Chhetri: সতীর্থদের পরিশ্রমেই কাপ জয় সম্ভব হয়েছে, প্রশংসা সুনীলের