পানাজি, 11 ডিসেম্বর : ভালকিসের জোড়া গোলের ধাক্কার রেশ এটিকে-মোহনবাগানের এখনও কাটেনি । হায়দরাবাদ এফসির বিরুদ্ধে আন্তেনিও লোপেজ হাবাসের ছেলেদের পারফরম্যান্স দেখে মনে হয়নি এই দলটি জয়ের হ্যাটট্রিক দিয়ে আইএসএলে যাত্রা শুরু করেছে । মাঝমাঠের খেলায় প্রত্যাশিত বোঝাপড়া নেই । তবে আছে চোট আঘাতের ঝক্কি, হাবাসের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
হায়দরাবাদ এফসির বিরুদ্ধে 1-1গোলে ড্র করে দশ পয়েন্ট ঝুলিতে নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেল এটিকে-মোহনবাগান । সবুজ মেরুনের হয়ে গোল মনবীর সিংয়ের । হায়দরাবাদের হয়ে পেনাল্টি থেকে গোল জোয়াও ভিক্টরের । ম্যাচের সেরা নিজামের শহরের দলের লিস্টন কোলাসো । একজন কোচের ফুটবল বুদ্ধির প্রমাণ বিরতির পরে নেওয়া কৌশলে নির্ভর করে । সবুজ মেরুনের স্প্যানিশ এখানেই টেক্কা দিলেন । চোটের জন্য ডিফেন্ডার তিরিকে মাঠের বাইরে রাখতে হয়েছে । স্ট্রাইকার ডেভিড উইলিয়ামস চোট সারিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ বলা যাবে না । ফলে রয় কৃষ্ণের সঙ্গে মনবীর সিংকে জুড়ে দিয়েছিলেন তিনি ।
রয় কৃষ্ণ এই ম্যাচেও প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ছায়ায় নিষ্প্রভ থাকলেন । স্যানটানা না থাকায় হায়দরাবাদের অবস্থা দিগভ্রান্ত জাহাজের মতো । প্রথমার্ধে এটিকে-মোহনবাগানের যাবতীয় আক্রমণ রুখে দিলেও তা থেকে দ্রুত প্রতিআক্রমণে প্রতিপক্ষ রক্ষণ ভাঙতে তারাও ব্যর্থ । লিস্টন কোলাসো ম্যাচের সেরা হলেও তিনি বেশ কয়েকবার সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়েও তা থেকে ফায়দা তুলতে ব্যর্থ ।
প্রতিপক্ষের পায়ের জঙ্গল ভেদ করতে আক্রমণকেই সেরা অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন হাবাস । বিরতিতে ব্র্যাড ইনমানের বদলে ডেভিড উইলিয়ামসকে নামান। মনবীর সিংকে লেফট উইংয়ে ঠেলে দিয়েছিলেন । তাঁর এই সিদ্ধান্ত চমকপ্রদ । একজন স্ট্রাইকারের কাঁধে রক্ষণ সামলানোর দায়িত্ব বর্তালে তা অনেক সময় বুমেরাং হয়ে উঠতে পারে । শুক্রবার হাবাসের দলের ক্ষেত্রে সেটাই হল ।
54 মিনিটে হীতেশ শর্মার পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে চারজনকে টপকে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন মনবীর সিং । কলকাতা ময়দানে উপেক্ষিত মনবীর ডার্বির পরে ফের গোল করলেন। কিন্তু 11 মিনিট পরে মনবীর নায়ক থেকে খলনায়ক । 65 মিনিটে নিজেদের বক্সে নিখিল পূজারিকে ফাউল করে হায়দরাবাদকে পেনাল্টি উপহার দেন । পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরাতে ভুল করেননি জোয়াও ভিক্টর । হায়দরাবাদ এফসিতে প্রতিভাবান ভারতীয় ফুটবলারদের ভিড় । গোললাইনে সুব্রত পালের মতো গোলরক্ষকের উপস্থিতি পুরো দলের অনুপ্রেরণা । এই ম্যাচেও বাঙালি গোলরক্ষক একবার ছাড়া সবুজ মেরুনের যাবতীয় আক্রমণ অবিশ্বাস্য দক্ষতা এবং ক্ষিপ্রতায় আটকে দিলেন । তবে জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পরে হায়দরাবাদের সঙ্গে ড্র। হাবাসের দলের সোনালি দৌড়ে হঠাৎ করেই ছন্দহীন ।