ম্যানচেস্টার, 10 জুলাই : 72 বলে 50 রান । একটি চার ও একটি ছয় । আস্কিং রানরেট যখন ক্রমশ বাড়ছে, তখন মহেন্দ্র সিং ধোনির এরকম ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । এক মহলের কথায়, যে ধোনির নামের সঙ্গে ফিনিশার তকমা সমার্থক হয়ে গেছিল, সেই ধোনিই আজ পারলেন না ম্যাচ শেষ করতে । চাপের মুখে স্ট্রাইক রোটেট করতে পারছিলেন না । অন্য মহলের দাবি, টপ অর্ডারের ব্যর্থতার জন্যই ধোনি নিজের ছন্দে খেলতে পারেননি । পাশাপাশি, ব্যাটিং অর্ডারে তাঁকে পিছনে নামানোয় বিরাট কোহলির অধিনায়কত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন ধোনি-ভক্তরা ।
বিশ্বকাপে প্রথম থেকেই সেভাবে ফর্মে ছিলেন না । ব্যাটে রান এলেও তা একেবারেই ধোনি সুলভ ছিল না । অসংখ্য ডট বল খেলছিলেন । স্পিনারদের বিরুদ্ধে রীতিমতো সমস্যায় পড়ছিলেন । স্ট্রাইক রোটেট করতে পারছিলেন না । সেজন্য প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন । বিশেষত, ইংল্যান্ড ম্যাচে রান তাড়া করার সময় যেভাবে ধোনি শর্ট রান নিচ্ছিলেন তা নিয়েও সমালোচনা হয় । খেলার মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খোদ সচিন তেন্ডুলকর । যিনি সচরাচর মুখ খোলেন না । বাইরে থেকে ফুরফুরে লাগলেও ভিতরে যে চাপটা বাড়ছিল তা প্র্যাকটিসে ধোনিকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছিল । যে ধোনি বরাবর সুইপ এড়িয়ে চলতেন, তিনি স্লগ সুইপ প্র্যাকটিস করছিলেন । টিম ম্যানেজমেন্ট অবশ্য তাঁর পাশে ছিল । কিন্তু, বন্ধ হয়নি সমালোচনার ঝড় ।
এদিকে, আজ সেমিফাইনালে 240 রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে ছিল ভারত । একসময় ভারতের স্কোর ছিল 22.5 ওভারে 5 উইকেটে 71 রান । এই অবস্থায় ক্রিজ়ে আসেন ধোনি । জেতার জন্য 163 বলে তখন 169 রান দরকার । ধোনি যখন আসেন তখন বল করছিলেন মিচেল স্যান্টনার । স্পিনারদের বিরুদ্ধে তাঁর দুর্বলতা ফের প্রকট হয় । রীতিমতো বেকায়দায় ছিলেন । যে ধোনি স্ট্রাইক রোটেট করতে না পারায় একসময় সৌরভ গাঙ্গুলি থেকে রাহুল দ্রাবিড়কে দল থেকে ছেঁটে ফেলার পক্ষপাতী ছিলেন সেই ধোনিই আজ নিজে ছিলেন অসহায় । ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল আস্কিং রেট । কিন্তু, বড় শট খেলতে পারছিলেন না । একাংশের মত, আগেকার ধোনির সঙ্গে এই ধোনির এটাই ফারাক । শত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও স্ট্রাইকটা রোটেট করতে পারতেন । ফলে স্কোরবোর্ড সচল থাকত । কিন্তু, এখন সেটাই ধোনির কাছে সবচেয়ে সমস্যার । বলের পর বল খেলছিলেন, কিন্তু রান বাড়ছিল না । ফলে তাঁর উপর তো চাপ বাড়ছিলই, অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানের উপরও চাপ বাড়ছিল । একদিকে রবীন্দ্র জাদেজা মেরে খেলতে থাকলেও তিনি একা হয়ে গেছিলেন । পুরো চাপটা তাঁর উপর পড়ছিল । ধোনি আর একটু সহায়তা করলে ভারত ম্যাচ বের করে নিতে পারত । একটি মহলের মত, ধোনির USP ছিল নিজের উপর অগাধ বিশ্বাস । সেই বিশ্বাস এখনও রয়েছে । কিন্তু, কমে গেছে রিফ্লেক্স । ফলে যেটা ভাবছেন, সেটা মাঠে করে দেখাতে পারছেন না ।
এই সংক্রান্ত আরও খবর :