ফাইনালে হারের পর সাংবাদিক বৈঠকে মনোজ তিওয়ারি কলকাতা, 19 ফেব্রুয়ারি: সাড়ে তিনদিনে ট্রফির লড়াই শেষ । 24 ঘণ্টা আগেও যাদের দেখে মনে হয়েছিল ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে তারাই রঞ্জি ট্রফি ফাইনালের চতুর্থ দিনে প্রথম দু'ঘণ্টার মধ্যে সাজঘরে (Bengal Losses Ranji Trophy 2022 2023)। শেষ উইকেটে মুকেশ কুমার এবং ঈশান পোড়েল জুটিতে 38 রান না-করলে ইনিংস হারের লজ্জায় পড়তে হত । নয় উইকেটে রঞ্জি ফাইনালে হারের পরে বাংলার ড্রেসিংরুমে কান্নার রোল । হারের ধাক্কা সামলে সাংবাদিকদের সামনে অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি রবিবাসরীয় সকালের বিপর্যয়ের দায় নিলেন । মানছেন শাহবাজ আহমেদের রান আউটের জন্য অন্য কেউ নন, তিনিই দায়ী ।
ফাইনাল শেষের পরেও বেশ কিছুক্ষণ সাজঘরের দরজা বন্ধ করে আলোচনা । মনোজের কথায়, "সবাই দুঃখিত । হতাশ । কাছে এসেও ট্রফিটা দূরে সরে যাচ্ছে । প্রথম দিনে টসে হার ৷ দ্বিতীয় দিনে আর্দ্রতার অভাব, ক্যাচ ধরতে না-পারা, ব্যাটারদের ব্যর্থতার সঙ্গে বোলারদের খারাপ বোলিং, সবকিছু মিলিয়ে ফাইনালে এত খারাপ পারফরম্যান্স হবে আশা করিনি । দলের কোনও ক্রিকেটারের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার জায়গা নেই । তাই এই পরাজয় স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণার সমান ।"
টস জিতলে পরিস্থিতি বাংলার দিকে ঝুঁকে থাকত বলে ম্যাচ শেষেও দাবি করেন মনোজ । রঞ্জি অভিযান এই মরশুমের জন্য শেষ । অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি কি তবে ব্যাট তুলে রাখছেন ? এই প্রশ্নের উত্তরেও বাংলার অধিনায়ক জল্পনা জিইয়ে রাখলেন । বলছেন, "জানি না । ঠিক করিনি । পরের মরশুমে বিষয়টি নিয়ে ভাবব । তবে নির্বাচকরা ইতিমধ্যে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন ।"
আরও পড়ুন :ঘরের মাঠে লজ্জা! বাংলার রঞ্জি ট্রফি জয়ের স্বপ্ন অধরাই; ভারত সেরা সৌরাষ্ট্র
বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লার গলায় ট্রফি হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপ । ইডেন ছাড়ার আগেও তাঁর গলায় ব্যর্থতার জন্য আক্ষেপ । তাঁর মতে, "রান আউট, ক্যাচ ধরতে না-পারা সবকিছুই খেলার অঙ্গ । প্রথম দিন থেকে আমরা ফিরে আসার চেষ্টা করেছিলাম । রঞ্জিতে প্রতিটি দলই সমান । এখানে কোনও ছোট বড় দল হয় না । সবাই মিলে চেষ্টা করেছিল । প্রতিটি ম্যাচ থেকেই আমরা শিখেছি ৷ এই ম্যাচও তার ব্যতিক্রম নয় । বাংলা ফিরবে । আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরবে ।"
পুরো মরশুমজুড়ে ওপেনারদের সমস্যায় ভুগতে হয়েছে বাংলাকে । ফাইনালে সুমন্ত গুপ্তর মতো ওপেন করার অভিজ্ঞতা না-থাকা ক্রিকেটারকে ইনিংস শুরু করতে পাঠিয়েছিল বাংলা টিম ম্যানেজমেন্ট । একই কথা বলতে হয় আকাশ ঘটককে নিয়েও । বারবার সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ । যদিও তাঁদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে নারাজ লক্ষ্মীরতন শুক্লা । হেডস্যর বলছেন, "রোহিত শর্মা, কেএল রাহুল, ভিভিএস লক্ষ্মণ এদের সবাইকে বোর্ড পাশে দাঁড়িয়ে সুযোগ দিয়েছে । তারপরেই তাঁরা সাফল্য পেয়েছে । ক্লাব ক্রিকেটে সিএবি জোর দিয়েছে । সেখানে যারা রান করবে তারা সুযোগ পাবে । পারফর্মার এবং ম্যাচ উইনার আলাদা । আমি কোচ হিসেবে ভুল সংশোধন করার চেষ্টা করব ।" অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির প্রশংসায় কোচ লক্ষ্মীরতন । বলছেন,"মনোজ-অনুষ্টুপরা অমূল্য ক্রিকেটার । ওদের পরিবর্তে অন্য কাউকে পাওয়া সহজ নয় । যেভাবে মনোজ হাঁটুর চোট নিয়ে খেলে গেল তা ওর দায়বদ্ধতা প্রমাণ করে ।"
আরও পড়ুন :প্রত্যাঘাতে অধিনায়ক মনোজের ফিরে আসার লড়াই, ব্যাটিং ব্যর্থতাতেও লড়ছে বাংলা