কলকাতা, 24 এপ্রিল: ক্রিকেটার জীবনে অনেক তাবড় বোলারের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর ৷ সে কথা সকলেই জানে । কিন্তু কেউ যদি বলে সচিন তেন্ডুলকর এবং কার্টলি অ্যামব্রোস একমানের বোলার সেটা অবিশ্বাস্যই মনে হনে ৷ তবে মনে যাই হোক না কেন 24 বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারে একবার এমনটাও হয়েছিল বটে ৷ সেদিন সচিনের মধ্যে 'কার্টলি অ্যামব্রোস'কে দেখেছিলেন বান্টু সিং ৷ সচিনের বাউন্সারে সেদিন রক্তাক্ত হয়ে ছিলেন তিনি ৷ নাক থেকে রক্ত ঝরেছিল তাঁর ৷ এমনকী নাকের হাড় পর্যন্ত ভেঙে গিয়েছিল ৷ 1991 সালে দিল্লি বনাম মুম্বই রঞ্জি ম্যাচে এই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার ৷
আট-নয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে দিল্লির ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন এই বান্টু সিং ৷ 32টা গ্রীষ্ম পেরিয়ে যাওয়ার পর, 1991 সালের 20 এপ্রিলের সেই দিনের কথা স্মরণ করে আজও হাসেন তিনি ৷ সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে মজাই করেছিলেন দিল্লির প্রাক্তন ব্যাটার ৷ তিনি বলেন, "আমার নাকের নকশাই বদলে গিয়েছিল সচিনের ওই বাউন্সারে ৷ এখন আমার কাছে নতুন নাক রয়েছে ৷" কিন্তু, সচিনের সেই বাউন্সারে 4 বছরেই বান্টু সিং তাঁর কেরিয়ারে ইতি টেনে দিয়েছিলেন ৷
1980 এবং 1990-এর দশকে মুম্বই বনাম দিল্লির দ্বৈরথ ছিল মনে রাখার মতো ৷ সেখানে পঞ্জবি গালাগালির জবাব ফিরে আসত 'মুম্বইয়া টাপোরি' ভাষায় ৷ সেই দিনের স্মৃতি নিয়ে বান্টু সিং জানান, কোটলার পিচকে সেই ম্যাচে সবুজ রাখা হয়েছিল ৷ উদ্দেশ্য ছিল মুম্বইয়ের শক্তিশালী ব্যাটিংকে নাকানি-চোবানি খাওয়ানো ৷ তিনি বলেন, "ম্যাচের দিন দেখা গেল পিচ ব্যাটিং স্বর্গে পরিণত হয়েছে ৷ একটা উত্তপ্ত ম্যাচ ছিল ৷ দিল্লির সিমার সঞ্জীব শর্মা এবং অতুল ওয়াসান দিলীপ ভাইকে (দিলীপ বেঙ্গসরকর) কয়েকটা বাউন্সার মেরেছিলেন ৷ ওটাই দিলীপ ভাইয়ের শেষ রঞ্জি সিজন ছিল ৷"
আরও পড়ুন:এ টু জেড... সচিনের জীবনের সঙ্গে যেভাবে জড়িয়ে ইংরেজি বর্ণমালার সবক'টি অক্ষর
বান্টু সিং বলেন, "আমার মনে আছে অন্তত দু’বার অতুলের বাউন্সার দিলীপ ভাইয়ের পাঁজরে গিয়ে আঘাত করে ৷ আর সেখান থেকে স্লেজিং শুরু হয়ে যায় ৷" রঞ্জি কোয়ার্টার ফাইনালের সেই ম্যাচ দিল্লি মাত্র 1 রানে হেরেছিল ৷ তারা প্রথম ইনিংসে 389 রান করেছিল ৷ সেখানে মুম্বইয়ের প্রথম ইনিংসে রান ছিল 390 ৷ প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সুবাদে মুম্বই ম্যাচ জিতে যায় ৷
কিন্তু, দ্বিতীয় ইনিংসে মুম্বইয়ের ব্যাটাররা দিল্লির বোলারদের মাথায় চড়ে বসেছিল ৷ মুম্বই অধিনায়ক সঞ্জয় মঞ্জরেকর, সচিন তেন্ডুলকর এবং চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের সেঞ্চুরিতে ভর করে মুম্বই দ্বিতীয় ইনিংসে 719 রান করেছিল ৷ বান্টু জানান, ম্যাচের শেষদিনে মুম্বইয়ের ক্রিকেটাররা তাঁদের উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ৷ তার কারণ পুরো ম্যাচে শর্ট-পিচ বল তাদের জন্য সাজিয়ে দিয়েছিলেন দিল্লির বোলাররা ৷ সেই ম্যাচে বান্টু সিং প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন ৷ তাই দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি আত্মবিশ্বাসের চরমে ছিলেন ৷ আর সেই সময় সচিন অনেক বেশি সিম-আপ বোলিং করতেন ৷ তাঁকে দেখতে যতটা নির্বিষ মনে হত, তার থেকে অমেক বেশি ভয়ঙ্কর ছিলেন সচিন ৷