ETV ভারত সিতারা : এবছর তো লকডাউন হয়ে গেল । 'ইন্দ্রানী দত্ত কলা নিকেতন'এ প্রতিবছর এই দিনে নানা অনুষ্ঠান হয় । নিশ্চয়ই খুব মিস করেছেন...
ইন্দ্রানী দত্ত : খুব মিস করছি । আমার ডান্স স্কুল 'ইন্দ্রানী দত্ত কলা নিকেতন'এ প্রতিবছরই আমি ছোটো করে রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপন করি । রবীন্দ্রনাথের ছবিতে মালা দিয়ে সাজানো হয় । ধুপ দেওয়া হয় । প্রত্যেকদিন তো প্রত্যেক স্টুডেন্টের ক্লাস থাকে না, যার ক্লাসই থাক না কেন, কত্থক, ভরতনাট্যম কিংবা ওয়েস্টার্ন কনটেম্পোরারি নাচ, রবীন্দ্রসংগীতের সঙ্গে সেই নাচের পারফরম্যান্স হয় । সেভাবেই সেলিব্রেট করি । আজ খুব মিস করছি । এখন তো সব অনলাইন ক্লাস হচ্ছে, স্টুডেন্টরা সবাই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে । সুতরাং, ওদের সঙ্গে নিয়ে কিছু করতে পারিনি । তাই আমি নিজেই আমার একটা প্রিয় গান সিলেক্ট করে পারফর্ম করলাম।
ETV : ছোটোবেলা থেকে বড়বেলা পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথকে কীভাবে পেলেন ?
ইন্দ্রানী : ছোটোবেলায় তো ফাংশন হত । আমার মনে আছে, ছোটোবেলায় একবার রবীন্দ্রনাথের 'প্রশ্ন' কবিতাটি বলে থার্ড প্রাইজ় পেয়েছিলাম । তখন সম্ভবত আমি ক্লাস টু'তে পড়ি । অনেক ছবিতে রবীন্দ্রসংগীতের সঙ্গে লিপ দিয়েছি । সেই ছোট্টবেলা থেকে প্রচুর নৃত্যনাট্যের ডিরেকশন দিতাম । একদম যখন ছোটো ছিলাম তখন শুধু ঋতুরঙ্গ করতাম, গ্রীষ্ম-বর্ষা-শরৎ-হেমন্ত-শীত-বসন্ত । মায়ের সব রঙিন-রঙিন শাড়ি পরে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠান করতাম । সকলের থেকে খুব প্রশংসা পেতাম । সেই সব শুনেই আত্মবিশ্বাস বেড়েছে, যে আমি পারি । খুব ছোটোবেলায় 'শ্যামা' করেছি । শ্যামা আমার খুব প্রিয় নৃত্যনাট্য । আরেকটু যখন বড় হলাম, তখন 'চিত্রাঙ্গদা' করলাম । 'চিত্রাঙ্গদা' অনেকবার অনেকভাবে আমি করেছি । আমার ডান্স ট্রুপ 'ইন্দ্রানী দত্ত ডান্স ট্রুপ সৃষ্টি'-এরও অনেকগুলি প্রেজ়েন্টেশনের মধ্যে একটি 'চিত্রাঙ্গদা' । 'শাপমোচন' করেছি । রবীন্দ্রজয়ন্তীতে কোনও না কোনও ডান্সড্রামা করতাম । ইনপ্রম্পটু অনেকবার করেছি । আমার রবীন্দ্রনাথ পড়তেও ভালো লাগে । অনেকসময় আমি রবীন্দ্রনাথের গানগুলোই পড়ি । খুব ভালো লাগে ।
ETV : মানুষের জীবনের প্রত্যেক পরিস্থিতির জন্য কিছু না কিছু সৃষ্টি করেছেন কবিগুরু । এতগুলো বছর পরেও রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি আমাদের জীবনে প্রাসঙ্গিক । আপনার কাছে রবীন্দ্রনাথ কীভাবে প্রাসঙ্গিক ?
ইন্দ্রানী : ছোটোবেলায় 'অমল ও দইওয়ালা'র মধ্যে দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে পেতে আরম্ভ করি । এই যে আপনি বললেন জীবনের সব পরিস্থিতির জন্য তিনি কিছু না কিছু সৃষ্টি করেছেন, সেটা আমিও স্বীকার করি । যখন আমার বাবা চলে গেলেন, মনে হল 'আমার প্রাণের পরে চলে গেল' গানটা গাইব । রবীন্দ্রনাথ সৃষ্টি করে গিয়েছিলেন বলেই আমাদের আর কিছু ভাবতে হয় না । ওঁর এত স্মৃতি আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, যে সব পরিস্থিতিতেই কবিগুরুর সৃষ্টি মনে পড়ে । আসলে কি বলুন তো, রবীন্দ্রনাথ আমাদের কাছে ঈশ্বরের মতো । ছোটোবেলায় ওঁর ছবিতে মালা দিয়ে পুজোও করতাম । 'গীতবিতান' সবসময় আমার বেডসাইড টেবিলে থাকে ।
ETV : রবীন্দ্রনাথের কোন গান শুনলেই মনে হয় নেচে উঠি ?