- ETV ভারত সিতারা : কী এমন ঘটল, যে দেশের প্রধানকে চিঠি পাঠাতে হল?
- অপর্ণা সেন : তিনি দেশের প্রধান বলেই তাঁকে চিঠি দিয়েছি। চারপাশে যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলিকে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে একমাত্র তিনিই বন্ধ করতে পারেন। আমি এটা মানি, আইন-শৃঙ্খলা, নিয়ম-কানুন নিয়ন্ত্রণ করা রাজ্যের দায়িত্ব। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক রাজ্যকে এই নির্দেশ দেন, যাতে এই ধরনের অন্যায়-অত্যাচার না হয়। এবং যারা এই অন্যায় করবে, তারা যেন জেলে যায়। কিছু ঘটনা নকল বা সাজানো হয়। কিন্তু কিছু অন্যায় সত্যিই ঘটছে। অনেকসময় মানুষ কিছু সাজানো ঘটনা রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। এবং সেই কাজগুলো করে তারা আনন্দ পায়, গর্ব অনুভব করে। এইগুলো দেখে আমাদের খুব ভয় করে। এই জিনিসগুলো অনবরত ঘটছে। সত্যি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর হদিশ আমরা পেয়েছি ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (NCRB) থেকে। সেই সব রেকর্ডে দেখা গিয়েছে, দলিতদের উপর অত্যাচার বেড়েছে। এবং অপরাধীদের শাস্তি আগের চেয়ে কম হচ্ছে। এটা খুবই আতঙ্কের বিষয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু ভালো কাজ করেছেন দেশের জন্য। নোংরা আবর্জনা সরানোর জন্য 'স্বচ্ছ ভারত' অভিযান চালিয়েছেন তিনি। সেটা সফলও হয়েছে। উনি 'লিঞ্চ ফ্রি ভারত'-ও করতে পারেন।
- ETV ভারত সিতারা : তাহলে বলা যেতে পারে আপনি প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা রেখেছেন?
- অপর্ণা সেন : আমি নিশ্চয়ই আশাবাদী। যাঁরা চিঠিতে সম্মতি জানিয়েছেন, তাঁরা কেউ কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নন। তাঁরা অনেকে হয়তো RSSএর মতাদর্শের বিরুদ্ধাচারণ করেন। কিন্তু তাঁরা কেউ অ্যান্টি-ন্যাশনাল নন। তাঁরা সকলেই দেশকে ভালোবাসেন। যেহেতু ভালোবাসেন, সেহেতু সামনে এগিয়ে এসেছেন। না হলে জানেন তো, বিষয়টা খুব সহজ। রবিবার মাটন কারি খেয়ে দিন কাটানো বা সিনেমা দেখা। আমাদেরও তো এগিয়ে আসার কিছু ছিল না। আমি তো আমার সিনেমার জগতে খুশি। এগিয়ে এসেছি, কারণ দেশকে ভালোবাসি।
- ETV ভারত সিতারা : ৪৯জন যাঁরা চিঠিতে সই করেছেন, তাঁরা কি নিজেরাই এগিয়ে এসেছেন? নাকি আপনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন?
- অপর্ণা সেন : অনেক এগিয়ে এসেছে। অনেকে অন্যদের থেকে শুনে এগিয়ে এসেছেন। পুরোটা মিলিয়ে মিশিয়ে ছিল।
প্রধানমন্ত্রীই পারেন দেশজুড়ে গণপিটুনির ঘটনা বন্ধ করতে : অপর্ণা
বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন দেশজুড়ে ৪৯ জন বিদ্বজ্জন। সেই তালিকার অন্যতম হলেন অপর্ণা সেন। কিন্তু, কেন একেবারে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নিতে হল? সেই নিয়ে মুখ খুললেন অপর্ণা সেন। ETV ভারত সিতারাকে একান্তভাবে জানালেন তাঁদের অবস্থানের কথা। সঙ্গে দেশবাসীদের উদ্দেশ্যে দিলেন ভালোবাসা ও সাম্যের বার্তা।
অপর্ণা সেন
শেষে দেশবাসীদের উদ্দেশ্যে অপর্ণার বার্তা, "চারপাশে ঘৃণার পরিমাণ বেড়ে গেছে, আর ঘৃণা নয়, এবার একটু ভালোবাস।"