হায়দরাবাদ, 15 জানুয়ারি: 2014 সালে এস এস রাজামৌলির 'বাহুবলী'-র অসামান্য সাফল্য রীতিমত বড় স্বপ্ন দেখতে অনুপ্রাণিত করেছিল ভারতব্য়াপী অন্য়ান্য পরিচালকদের ৷ তারপর থেকেই ভারতব্যাপী ছবি তৈরির ক্ষেত্রে যে নতুন ঢেউ এসেছে তাতেই সওয়ার হয়েছেন অন্যান্য পরিচালকরাও ৷ 2016 সালে সুকুমারের 'রঙ্গস্থলম'-এর অসাধারণ সাফল্য়ের তাঁর পরের ছবি নিয়েও জল্পনা ছিল তুঙ্গে ৷ কিন্তু নতুন ছবি পুস্পা: দ্য রাইজ-এর ক্ষেত্রেও একইভাবে সাফল্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন তিনি ৷
এই ছবি যে শুধু কমার্শিয়াল সাফল্য় এনে দিয়েছে তাই নয়, একইসঙ্গে সারা ভারত জুড়ে পরিচিত করে তুলেছে পরিচালকের নামটিকেও ৷ গল্পের প্রধান চরিত্র আলু অর্জুন এবং পরিচালক সুকুমার ভালই বুঝিয়ে দিয়েছেন যদি গল্পের মধ্যে সেই দম থাকে এবং তা সঠিকভাবে পরিবেশন করা যায় তাহলে তা এই প্য়ান্ডেমিকের দিনেও মানুষকে একইভাবে আকর্ষণ করতে পারে ৷
ওটিটি প্লার্টফর্মগুলি যেভাবে বাজার তৈরি করতে শুরু করেছে, তাতে বর্তমানে ভাল আঞ্চলিক গল্পের চাহিদা বর্তমানে যথেষ্ট বেশি এবং এই চাহিদা আগামীদিনেও একইভাবে বজায় থাকবে ৷ ভিডিও কন্টেন্ট শুধুমাত্র স্ট্রিমিং প্লাটফর্মগুলিতেই সীমাবদ্ধ নয়, এমতাবস্থায় হিসাব করে দেখতে গেলে, বর্তমানে যে কোনও একটি দুরন্ত কন্টেন্ট থেকে মাত্র একটা ক্লিকই দূরে রয়েছেন একজন দর্শক যা পরিচালকদের ওপরেও যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করেছে একেবারে অন্যরকম আঞ্চলিক কোন গল্প তুলে আনার জন্য ৷
গল্পের আদানপ্রদান অবশ্য ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও নতুন কথা নয়, জীতেন্দ্র, ভেঙ্কটেশদের মত অভিনেতারা নিজেদের কেরিয়ার তৈরি করেছেন রিমেক ছবির ওপর ভিত্তি করে, একইভাবে বাংলাতেও তৈরি হয়েছে প্রচুর রিমেক ছবি ৷ অন্য়দিকে ভাইজান সালমান খানের রেড্ডি, ওয়ান্টেড-এর মত ছবিগুলি দক্ষিণি ছবি থেকে অনুপ্রাণিত, আবার তার দাবাং আকর্ষণ করেছে পবন কল্যাণকে ৷ বহুদিন ধরে তামিল এবং তেলগু ছবি থেকে গল্প নেওয়ার পর বর্তমানে নতুন আইডিয়ার জন্য মালায়ালাম ছবির প্রতি বেশ কিছুটা অনুরক্ত হয়ে পরেছেন হিন্দি চিত্রপরিচালকরা (hindi movies inspired by regional movies) ৷
জন আব্রাহাম অভিনীত আয়াপ্পানুম কোশিয়ুম-এর রিমেক থেকে শুরু করে জাতীয় পুরস্কার জয়ী হেলেন ছবির রিমেক মিলি, যেখানে মূল চরিত্রে ছিলেন জাহ্ণবী কাপুর , কিম্বা সানি দেওলকে মুখ্য ভূমিকায় রেখে তৈরি হওয়া জোসেফ-এর রিমেক এরই আদর্শ দৃষ্টান্ত ৷ এছাড়া 2022 সালেও এমন অনেকগুলি সিনেমা বাজারে আসতে চলেছে, যার শিকড় প্রোথিত মালায়াালাম ছবিতে ৷ হিন্দি অনুবাদে যাতে মূল গল্পের রস না হারিয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে হিন্দিতেও হেলেন এবং জোসেফ-এর পরিচালক মাথুকুট্টি জেভিয়ার এবং এম. পদ্মকুমারকে সঙ্গে রেখেছিলেন ছবির নির্মাতারা ৷
বিগত প্রায় কয়েক দশক ধরে একই ধরনের সংস্কৃতির গল্প বলে আসছে হিন্দি সিনেমা, যার আধার মূলত উত্তর ভারত ৷ একদিকে যেমন সঞ্জয় লীলা বনশালি তুলে এনেছিলেন এক রঙিন গুজরাটকে ৷ তেমনি অন্য়দিকে সুজিত সরকার পিকু-তে তুলে ধরেন আত্মকেন্দ্রিক ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রটিকে ৷ কিন্তু পরিবর্তন হচ্ছিল প্রচলিত সীমানা, ভাষা ৷ স্টারডামের গণ্ডিকে পেরিয়ে প্রতিভাকে অন্যভাবে দেখতে শুরু করেছিলেন পরিচালকরা ৷