কলকাতা : তথাগত বলেন, "এটা ফিচার ছবি নয়। ৬টি ভাগে ছবিটা করব। এটা ছবিটির প্রথম ভাগ। সময় ৩০ মিনিট। সিরিজ়ের মতো করার পরিকল্পনা আছে। এটা প্রথম ভাগ - চাপ্টার ১। চ্যাপ্টার ১-এর শুটিং হয়ে গিয়েছে। একটা এপিসোড একটা ছবির মতো। চার্লস ডারউইনের 'অরিজিন অফ স্পিসিস'এর ৬টি চ্যাপ্টারের নামে 'হাউ টু বিকাম আ রেপিস্ট'এর ৬টি চ্যাপ্টার। আমি ফ্রাঙ্কলি বলি, প্রথমে ভেবেছিলাম, ৬টি চ্যাপ্টার একসঙ্গে রিলিজ় করব। যেধরনের নৃশংসতার উপর কাজ হচ্ছে, তাতে আমার টেকনিশিয়ানদের কাজ করতে অসুবিধে হচ্ছে। সেটা প্রডিউসার ফিন্যান্স করতে রাজি নয়। তাই প্রথম পার্টটা আমি নিজেই ফিন্যান্স করি। দ্বিতীয় পার্টটিকেও আমাকেই ফিন্যান্স করতে হবে। আমার আর দেবলীনার প্রোডাকশন আর বন্ধু-বান্ধবদের সাহায্য নিয়ে বানাতে হচ্ছে। আমি বাকি ৫টি চ্যাপ্টার করতে চাই। সেপ্টেম্বরে আমার অন্য ছবির শুটিং আছে। সেটা হওয়ার পর আমি দ্বিতীয় চ্যাপ্টারে হাত দেব। প্রথম চ্যাপ্টারের ট্রেলার পরের মাসে বেরোবে।"
কী আছে হাউ টু বিকাম রেপিস্টের প্রথম চ্যাপ্টারে? উত্তরে তথাগত বললেন, "একটা ছেলের কথা বলব। সেই ছেলেটি ৬টি মেয়েকে রেপ করে খুন করে। ছেলেটি বিশ্বাস করে সে যেটা করেছে ঠিক করেছে। আসলে এটা একটা সাইকোলজি, যেটা ছোটোবেলা থেকে কিছু বাচ্চাদের মধ্যে চলে আসে। ছোটোবেলা থেকেই তাকে ক্রুয়েলটি প্র্যাকটিস করানো হয়। একটা বাচ্চা যখন তার বাবার সঙ্গে মুরগির দোকানে যায়, তখন সেখানে মুরগিটি তার চোখের সামনেই কাটা হয়। সেখানে কারো কোনও আপত্তি থাকে না। একটা শুয়োরকে যখন মারা হয়, সেই শুয়োরের পিছনে গরম শিক ঢুকিয়ে মারা হয়। যদি সেটা অপরাধ না হয়, তা হলে একজন মেয়ের পিছনে কিংবা মানুষের পিছনে রড ঢোকানো কেন অপরাধ হবে? এটা হচ্ছে সেই ছেলেটির বক্তব্য। গোটা পৃথিবীর স্লটার হাউজ়ের ভিডিও আছে এই ছবিতে। সেখানে দেখানো হয়েছে কীভাবে অত্যাচার করে মেরে ফেলা হয় পশুদের। এবং মানুষ সেটা কেবলমাত্র বিনোদনের জন্য করে। এর মধ্যে এমন কিছু সত্যি ভিডিয়ো আছে, অবশ্যই আমার শুট করা নয়, ভালো মতো ইন্টারনেট ঘাটলে পাওয়া যাবে, সেগুলোর বিরুদ্ধে কেউ কোন প্রতিবাদ করে না। ছেলেটি বলছে, একটা মানুষ যখন মুরগিগুলোকে ঝুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, কেউ কোনও প্রটেস্ট করছে না। তাহলে যদি কোনও মেয়েকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়, কেন এত প্রতিবাদ হচ্ছে। ছেলেটি ভাবছে, মেয়েটি আর এই পশুরা একই স্তরে রয়েছে। সেটাই সেই ছেলেটির কাছে লজিক্যাল বলে মনে হয়।"
তথাগত বললেন, "আমার ছবিতে চার্লস ডারউইনের একটা সূত্র আছে। ডারউইন অরিজিন অফ স্পিসিসে বলেছিলেন, ক্ষমতার উপর সেই থাকবে, যার কাছে সবচেয়ে বেশি পাওয়ার আছে। তাই এই ছবির ট্যাগলাইন 'অরিজিন অফ স্পিসিস'। সম্প্রতি দিল্লিতে চারটে ছেলে মিলে একটি পুরুষ কুকুরকে রেপ করেছে। কুকুরটি মারা গেছে। ছবিতে এই বিষয়বস্তুগুলোকেই তুলে এনেছি। এরকম ধরনের ঘটনা রোজ ঘটছে। কোনওটা আমরা জানতে পারি, কোনওটা পারি না। এই কয়েকদিন আগের ঘটনা, মেডিকেল কলেজের বাইরে একটা স্পিচের বাচ্চাকে প্লাস্টিকে মুড়ে ফেলে রেখে গিয়েছে। এটার কোনও কারণ নেই। আমি বলতে চাইছি, যারা ভবিষ্যতের ক্রিমিনাল, তারা পশুপাখিদের উপর নির্মম অত্যাচার করেই এই নৃশংসতার শুরু করে। এই ছেলেটি সেখান থেকেই উঠে আসা একটি চরিত্র। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন সত্রাবিৎ। তিনি কেন্দ্রীয় চরিত্র। আর একটি মূল চরিত্রে রয়েছেন উষসী ভৌমিক। ছবিতে ধর্ষণের দৃশ্য দেখানো হবে না, যেরকম ভাবে অন্যান্য ছবিতে দেখানো হয়। অ্যানিম্যাল রেপের উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।"
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর জোর দিয়ে তথাগত বললেন, " আমি কোনওভাবেই ফুডচেইনের বিরুদ্ধে নই। আমি অ্যানিমাল ক্রুয়েলটির বিরুদ্ধে কথা বলছি। বিনোদনের জন্য পশুদের উপর যে অত্যাচার হয়, তার বিরুদ্ধে কথা বলছি। এই ছবিটি বানাতে গিয়ে দেবলীনা ভেজিটেরিয়ান হয়ে গিয়েছে। গত একবছর ধরে ও মাছ-মাংস কিছুই খাচ্ছে না। আর আমিও আগে যেভাবে মাংস খেতাম, এখন সেটা করতে আমারও অসুবিধা হচ্ছে।