কলকাতা : দূর থেকে দেখলে মনে হয় তারকাদের জীবন রঙিন আর খুশিতে ভরতি । তবে ক্যামেরার ফ্ল্যাশের বাইরে তাঁরা আসলে রক্তমাংসে গড়া একটা মানুষ । তাই আর পাঁচটা মানুষের মতো দুঃখ, কষ্ট, বেদনা সবই রয়েছে তাঁদেরও । মন খুলে কারও সঙ্গে কষ্ট শেয়ার করতে চান তাঁরাও । আর সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর আরও জোরালো হয়ে উঠেছে এই বিষয়গুলো । কারণ তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, কয়েক মাস ধরে অবসাদে ভুগছিলেন তিনি । সেটাই তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । এবার সেই প্রসঙ্গ টেনে এনেই 'মানসিক স্বাস্থ্য' নিয়ে কথা বললেন অভিনেত্রী পার্নো মিত্র ।
একটা সময় ছিল যখন অবসাদ গ্রাস করেছিল পার্নোকে । একাধিক আত্মহত্যার কথাও চিন্তা করেছেন তিনি । কিন্তু, সেখান থেকে এখন নিজেকে বের করে নিয়ে এসেছেন অভিনেত্রী । সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় এই কথা পোস্ট করেন তিনি ।
লেখেন, "মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ ! আমি বহুবার আত্মঘাতী হওয়ার কথা ভেবেছি । কষ্টটা কিছুতেই যায় না । ধীরে ধীরে আমরা একটা আস্তরণের মধ্যে ঢুকে পড়ি, আর সেটা ভাঙা যায় না । এটা কারও কাছে বলা বা প্রকাশ করা সহজ নয় । এটা আপনার সত্তার একটি অংশে হয়ে যায় ।"
পার্নো আরও লেখেন, "আমি সকলকে বলতে চাই, যদি এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন তাহলে কারও সাহায্য চাইতে পারেন । আমিও এটার মোকাবিলা করেছি । যদিও এটা সহজ ছিল না । তবে পরিবার ও বন্ধুদের সব সময় পাশে পেয়েছি । আমার চিৎসকের কাছ থেকেও অনেক সাহায্য পেয়েছি । দয়া করে এটি সোশাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড হতে দেবেন না ।"
তবে শুধু পার্নোই নন । এ প্রসঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন অভিনেতা ভাস্বর চ্যাটার্জি । তিনি লেখেনে, "আমি সুশান্তের ফ্যান ছিলাম না । কিন্তু, 'ছিছোরে' ছবিতে আমার তাঁর অভিনয় ভালো লেগেছিল । তবে অবসাদ যে কী জিনিস যে তার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে একমাত্র সেই জানে । আমি জানি । কারণ গত বছর এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমিও গিয়েছিলাম । খুব কষ্ট হয়েছিল । ওই সময় শুটিংয়ে যেতাম, গোটা দিন কাজের মধ্যে থাকতাম । সেখানে অন্যদের সঙ্গে ইয়ার্কি মারতাম (সেটাই আমাকে অক্সিজেন জোগাত) । তারপর বাড়ি ফিরলেই আবার অন্ধকার ও একাকিত্বে ভরে উঠত । একা অন্ধকার ঘরে বসে থাকতাম । কিছু করতে বা কারও সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগত না । সেই সময় কাজ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল । একবার মনে হয়েছিল 14তলা থেকে ঝঁপ দিই । এইভাবেই 9 মাস কাটে । তারপর একদিন বুঝতে পারি যে আমি নিজেকে শেষ করতে পারব না । তারপর সাইকোলজিস্টের সঙ্গে কথা বললাম । সব ঝেড়ে ফেলে আবার উঠে দাঁড়ালাম ।"