কলকাতা : প্রয়াত কিংবদন্তি আলোকচিত্রী নিমাই ঘোষ । আজ সকালে নিজের ভবানীপুরের বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি । বয়স হয়েছিল 86 বছর । সত্যজিৎ রায়ের ফোটোগ্রাফার হিসেবেই সবাই চিনতেন নিমাইবাবুকে । তবে শুধু সত্যজিৎই নন, অনেক পরিচালকের সঙ্গেই কাজ করেছেন তিনি । তাঁদের মধ্যে অন্যতম পরিচালক গৌতম ঘোষ । নিমাইবাবুর প্রয়াণে ETV ভারতের কাছে শোকপ্রকাশ করেন তিনি ।
নিমাইবাবুর প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত গৌতম ঘোষ । বলেন, "আমার খুব খারাপ লাগছে নিমাইদা চলে গেলেন । কথা হলেই আমাকে তাঁর কাছ থেকে ছবির নেগেটিভ নিয়ে যেতে বলতেন । আমার যাওয়ারও কথা ছিল । কিন্তু সময় করে উঠতে পারিনি..."।
নিমাই ঘোষকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বললেন, "নিমাইদা সত্যজিৎ রায়ের অনেক ছবিতে কাজ করেছিলেন । পাশাপাশি আরও অনেকের সঙ্গে কাজ করেছিলেন । আমার সৌভাগ্য তিনি আমার ছ'টি ছবি, যেমন তিনটি ফিচার ফিল্ম 'পার', 'অন্তর্জলী যাত্রা', 'পদ্মানদীর মাঝি' এবং তিনটি ডকুমেন্টারিতে কাজ করেছেন । শুধু তাই নয় প্রচুর থিয়েটারের ছবিও তুলেছেন । ওই রকম সিনসিয়ারিটি অনেক কম মানুষের মধ্যে আমি পেয়েছি । কাজের পারফেকশনও ছিল তাঁর । মাঝে মাঝে আমি ধমকও দিতাম । বলতাম আমার কাছে আসবেন না, আমার অপারেশনে অসুবিধা হয়ে যাবে । কিন্তু, সেই অ্যাঙ্গেলটারই ছবি তুলতেন ।"
তিনি আরও বলেন, "ওই রকম পারফেকশনিস্ট খুব কম দেখেছি । ডিজিটাল ক্যামেরা আসার পরও ফিল্ম ক্যামেরাতেই কাজ করতেন । সেলুলয়েডকেই ভালোবাসতেন । আমার সঙ্গে এই কয়েক মাস আগে দেখা হল একটা এগজ়িবিশনে । আমাকে বাড়িতে যেতে বলেছিলেন । ওঁর কাছে আমার অনেক নেগেটিভ ছিল । আমার যে ছবিগুলিতে তিনি কাজ করেছেন, তার নেগেটিভ প্রযোজককে দিতাম না । নিমাইবাবুর কাছেই থাকত । যে পদ্ধতিতে তিনি সংরক্ষণ করতেন, সেটা একটা অবিস্মরণীয় বিষয় । নিজের সন্তানের চেয়েও বেশি যত্ন করতেন নেগেটিভগুলোকে । বিখ্যাত নাটকগুলির ছবিও তুলেছেন । যেগুলি একেবারে রেয়ার । কিছুদিন আগে কোমরে চোট পেয়েছিলেন । ইট্যালিতে শুটিং করছিলাম বলে আর দেখা করতে পারিনি । আমার খুব খারাপ লাগছে, নিমাইদা চলে গেলেন । দেখা করতে পারলাম না...!"