চেন্নাই : 2020 সালটা যেন একটা অভিশাপের মতো এসেছে আমাদের জীবনে । কোরোনার প্রকোপে মৃত্যুমিছিল অব্যাহত । তার সঙ্গে দারিদ্র, যন্ত্রণা, অভাব-অভিযোগেরও কোনও শেষ নেই এই বছরটাতে । একের পর এক শিল্পীর মৃত্যু যেন সময়টাকে আরও বিস্বাদ করে তুলছে । ইরফান খান,ঋষি কাপুর,ওয়াজিদ খান, সুশান্ত সিং রাজপুত, পণ্ডিত যশরাজের পর এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন সংগীতশিল্পী শ্রীপতি পণ্ডিতারাধ্যুলা বালাসুব্রমনিয়ম ।
কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হন বালাসুব্রমনিয়ম । আশা ছিল, ফিরে আসবেন তাড়াতাড়ি । নিজেও ভিডিয়োবার্তায় জানিয়েছিলেন সে কথা । তবে ভাগ্যদেবতা অন্য় কিছুই লিখে রেখেছিলেন । সবাইকে ছেড়ে অন্য দুনিয়ায় পাড়ি দিলেন শিল্পী ।
1946 সালে জন্মগ্রহণ করেন S.P. বালাসুব্রমনিয়ম । তেলুগু, তামিল, কন্নড়, হিন্দি, মালয়লম - সহ প্রায় 16 টি ভাষায় 40 হাজার গান গেয়েছেন তিনি । সর্বাধিক গান গাওয়ার জন্য গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম উঠেছে তাঁর । সঙ্গে মনও কেড়েছেন অজস্র শ্রোতার ।
51 বছরের ক্যারিয়ারে বালাসুব্রমনিয়ম জিতেছেন ছ'টি জাতীয় পুরস্কার । এছাড়াও জিতেছেন 25 টি অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্য নন্দী পুরস্কার । একাধিক ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন, পেয়েছেন নাগরিক সম্মানও । 2001 সালে পদ্মশ্রী, 2011 সালে পদ্মভূষণ, 2012 সালে NTR ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড, 2016 সালে 'ইন্ডিয়ান ফিল্ম পার্সোনালিটি অফ দ্য ইয়ার'...কি নেই তাঁর ঝুলিতে !
তবে শুধু পুরস্কারের তালিকা লম্বা হলেই মানুষ অমর হয় না । তাঁরা অমর থাকেন মানুষের মনের মধ্যে । ঠিক যেমন থাকবেন বালাসুব্রমনিয়ম সাহেব । কিন্তু, একজন কাল্ট তৈরি হওয়ার জার্নিটা শুরু হয় একেবারে ছোটো বয়স থেকে । বালাসুব্রমনিয়মের ক্ষেত্রে সেটা কীরকম ছিল ?
খুব ছোটোবেলা থেকেই সংগীতের দিকে ঝোঁক তৈরি হয় 'বালু'-র । হ্যাঁ, সংগীতশিল্পীর বাড়ির নাম এটাই ছিল । তবে তাঁর এই প্যাশনই যে প্রোফেশন হবে সেটা বোধহয় বুঝতে পারেনি বাড়ির মানুষরা । তাই ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার লক্ষ্যে অনন্তপুরের JNTU কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভরতি হন 'বালু' । কিন্তু, গান শেখাটা ছাড়েননি তিনি । কলেজে পড়াকালীন একাধিক প্রতিযোগিতা জিতে নিজের একটা পরিচয় বানাতে শুরু করেন বালাসুব্রমনিয়ম ।