পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / sitara

96তম জন্মবার্ষিকীতে মৃণাল সেন, স্মৃতিচারণায় প্রসেনজিৎ

বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগে যে সব পরিচালকদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে, তার মধ্যে অন্য়তম মৃণাল সেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সিনেমাজগতের মায়া ত্যাগ করে মারা যান বিশ্ববিখ্যাত এই পরিচালক। আজ তাঁর 96তম জন্মবার্ষিকী।

মৃণাল সেন

By

Published : May 14, 2019, 2:00 PM IST

মৃণাল সেনের 96তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করেন। তিনি একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন, "আজ বিশ্ববিখ্যাত চিত্রপরিচালক মৃণাল সেনের ৯৬ তম জন্মবার্ষিকী। বাংলা চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তিকে স্মরণ করে জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা ও প্রণাম।"

শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করেছেন অর্পিতা চ্যাটার্জিও।

১৯২৩ সালের ১৪ মে ওপার বাংলার ফরিদপুরে জন্ম মৃণাল সেনের। স্কুলের লেখাপড়া শেষ করার পর কলকাতায় আসেন তিনি। স্কটিশ চার্চ কলেজে ফিজিক্স পড়বেন বলে ভরতি হন। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্টগ্র্যাজুয়েশন শেষ করে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক বিষয়গুলি দেখভাল করা শুরু করেন। যদিও সক্রিয়ভাবে কোনওদিনই রাজনীতি করেননি। যুক্ত ছিলেন IPTA, অর্থাৎ ইন্ডিয়ান পিপলস্ থিয়েটার এসোসিয়েশনের সঙ্গেও। জীবিকা নির্বাহের জন্য মেডিকেল রিপ্রেজ়েন্টেটিভের কাজ করেছেন। কলকাতা ফিল্ম স্টুডিওতে অডিও টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ শুরু করেন মৃণাল সেন। সেটি ছিল তাঁর সঙ্গে সিনেমার প্রথম যোগসূত্র।

কিন্তু চলচ্চিত্র পরিচালনায় আসাটা এতটাও সহজ ছিল না। মৃণাল সেনের পরিচালনার নেপথ্যে ছিল একটি বই। চলচ্চিত্রের নান্দনিক বিশ্লেষণ ছিল সেই বইতে। সেই বইটি পড়ে মৃণাল ঠিক করেন, ছবি পরিচালনা করবেন। এবং তারপরই বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ পায় মৃণাল সেনকে। প্রথম ছবি মুক্তি পায় ১৯৫৫ সালে। ছবির নাম 'রাতভোর'। উত্তমকুমার অভিনয় করেছিলেন সেই ছবিতে। সে সময় অবশ্য বাংলার চলচ্চিত্র জগতে আইকন হয়ে ওঠেননি উত্তমকুমার। 'রাতভোর' তেমন সাফল্য পায়নি। পরের ছবি 'নীল আকাশের নীচে' কলকাতায় তাঁকে যথেষ্ট সাফল্য এনে দেয়। তবে যে ছবির হাত ধরে মৃণাল সেনের উত্থান, তা হল 'বাইশে শ্রাবণ', রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুদিন। ছবিটি আন্তর্জাতিক দরবারে দরজা খুলে দেয় মৃণাল সেনকে। ছবিটি জাতীয় পুরস্কারও এনে দেয় তাঁকে।

আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তারপর। একে একে তৈরি করেন 'কোরাস', 'মৃগয়া', 'অকালের সন্ধানে', 'আকাশ কুসুম', 'অন্তরীন', 'একদিন প্রতিদিন', 'আকাশের সন্ধানে', 'খাণ্ডার'-এর মতো ছবি। তৈরি করেন অসংখ্য স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি এবং তথ্যচিত্র। এক সময় ভারতের সরকার নিজেই এগিয়ে আসে মৃণাল সেনকে ছবি বানানোর কাজে সাহায্য করার জন্য। সেই ছবির নাম 'ভুবন সোম'। ছবিটি চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে পাকাপাকি জায়গা করে দেয় মৃণাল সেনকে।

বারবার তাঁর ছবিতে উঠে এসেছে রাজনৈতিক বিষয়। যাঁর মধ্যে অন্যতম ছবি 'কলকাতা ৭১'। সে সময় কলকাতায় টালমাটাল অবস্থা। সমসাময়িক অস্থিরতাকে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন কিংবদন্তি এই পরিচালক। ছবি নিয়ে গবেষণা করে গেছেন বরাবর। আরও ছবি উপহার দেবেন বলে। দিয়েছেনও। তবে শেষ বয়সে এসে তাঁকে কিন্তু দেখা গেছে সিনেমার থেকে দূরে থাকতে। অনেকেই এই প্রশ্ন তুলেছেন কেন শেষ বয়সে মৃণাল সেন ছবির প্রতি কোনও আগ্রহ দেখাননি। বদলে যাওয়া সময়ের জন্য নাকি সিনেমার বিষয়বস্তুর অভাবের জন্য ? তিনি থাকলে হয়ত এই উত্তর দিতে পারতেন। আজ তাঁর জন্মদিনে ETV Bharat-এর পক্ষ থেকে জানাই শ্রদ্ধা।

ABOUT THE AUTHOR

...view details