সালটা ১৯৪৩। সময়টা হিন্দি সিনেমার ক্ষেত্রে খুব একটা ভালো ছিল না। খানিকটা ক্ষয়ের পথেই হাঁটছিল হিন্দি ছবি। আর ঠিক এইসময়টাকেই ছবি বানানোর জন্য় বেছে নিলেন প্রযোজক-পরিচালক মেহবুব খান। ছবির নাম ঠিক হল 'তকদির'। ছবির নায়িকা হিসাবে চোখ পরল এক কিশোরীর দিকে। তবে মেহবুব খান উঠতি তারকাদের নতুন নাম দেওয়ার ব্য়াপারে বেশ পারদর্শী ছিলেন। তাই ফতিমা রশিদের ক্ষেত্রেও তাঁর ব্য়তিক্রম হল না। ফতিমার নাম পরিবর্তিত হয়ে হল নার্গিস। এবং এই ফতিমা ওরফে নার্গিসই দীর্ঘদিন ধরে শাসন করেছিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।
খান পরিচালিত 'তকদির' যদিও নার্গিসের প্রথম ছবি ছিল না। তার আগেই তালাশে হক নামে একটি ছবিতে বেবি রানি হিসাবে কাজ করেছিলেন তিনি। 'তালাশে হক' পরিচালনা করেছিলেন নার্গিসের মা জদ্দন বাঈ। গায়িকা হিসাবে পরিচিত ছিলেন জদ্দন বাঈ। ১৯৫০ সাল থেকে ভারতীয় সিনেমায় মুখ্য চরিত্র হিসাবে নিজের জায়গা বানাতে শুরু করে দিয়েছিলেন নার্গিস। চিরাচরিত একই চরিত্র নয়, বরং বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে নিজের ভার্সেটিলিটির পরিচয় রেখেছেন অনেকবার। হিন্দি সিনেমায় তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে 'ফার্স্ট লেডি অফ ইন্ডিয়ান সিনেমা' হিসাবে ডাকা হয়।
'আন্দাজ়' ও 'জোগান' ছবিতে তাঁর চরিত্রের মধ্য়ে দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল অন্তর্দ্বন্দ্ব। ছবি দুটিতে তাঁর মসৃণ পারফরমেন্স অভিনেত্রী হিসাবে তাঁকে আরও সমৃদ্ধ করেছিল। তবে 'আন্দাজ়'-র মতো কমার্শিয়াল সাফল্য় 'জোগান' না পেলেও এই ছবিটি 'মাদার ইন্ডিয়া'-র পর তাঁর অন্য়তম সেরা ছবি। নার্গিসের পেশাগত ক্ষেত্রে ও ব্য়ক্তিগত জীবনে আর কে ফিল্মসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। রাজ কাপুরের সঙ্গে একাধিক ছবিতে রোমান্স করতে দেখা গেছে তাঁকে। 'আঁগ', 'বরসাত', 'আওয়ারা', 'শ্রী ৪২০' ছবিতে নার্গিস-রাজ কাপুরের কেমিস্ট্রি আজও দর্শকের মনে সমানভাবে উজ্জ্বল। হিন্দি সিনেমায় আইকোনিক জুটি হিসাবে পরিচিত ছিলেন তাঁরা।