মুম্বই : রবিবার বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, গলায় ফাঁস দেওয়ায় শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর । মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে তিনটে দিন । তবে এখনও পর্যন্ত কাটেনি তাঁর মৃত্যু রহস্যের জট । আর সেই জট কাটাতেই সব দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ । ইতিমধ্যেই তাঁর ফোন ও ল্যাপটপের পাশাপাশি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচটি ডায়েরি । সেগুলিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা ।
রবিবার সকালে বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ । পুলিশের বক্তব্য, আত্মহত্যা করেছেন তিনি । তবে কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি তাঁর ফ্ল্যাট থেকে । ঠিক কী কারণে তিনি আত্মঘাতী হন, তা জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত ।
এদিকে সুশান্তের মৃত্যুর কারণ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে । অভিযোগ তোলা হয়েছে, যে ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন তিনি । বাদ পড়েছিলেন একাধিক ছবি থেকেও । এই সব কারণেই ধীরে ধীরে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি । তার থেকে বাঁচতেই বেছে নেন আত্মহননের পথ ।
এই সব অভিযোগের ভিত্তিতেই সুশান্তের পেশাগত দিকটি খতিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ । অভিনেতার আত্মীয় ও বন্ধুদের ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে । সুশান্তের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপের ফরেনসিক তদন্ত চলছে । সেই সূত্র ধরেই জানা গিয়েছে, এক কাছের বন্ধুর সঙ্গে অভিনেতার অনেক বিষয় নিয়েই কথা হত । জেরা করা হবে তাঁকেও । এছাড়া ওই মোবাইল এবং ল্যাপটপ থেকে কোনও নথি সরিয়ে ফেলা হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ । শেষ 10 দিন অভিনেতা যাঁদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তাঁদের তালিকাও বানানো হচ্ছে । খুব শীঘ্রই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে । ইতিমধ্যে পরিচালক মুকেশ ছাবড়া ও অভিনেতার রিউমর্ড গার্লফ্রেন্ড রিয়া চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ । তাঁদের বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে । তারই মধ্যে অভিনেতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় পাঁচটি ডায়েরি । জীবনের শেষদিনগুলিতে কতটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সুশান্ত গিয়েছিলেন তা ওই ডায়েরিগুলো পড়ে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা ।
অন্যদিকে, মৃত্যুর আগে রিয়ার সঙ্গে নাকি ডেট করছিলেন সুশান্ত । প্রকাশ্যে সেই কথা স্বীকার না করে নিজেদের 'ভালো বন্ধু' বলেই দাবি করতেন তাঁরা । সুশান্তের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের নভেম্বরেই নাকি বিয়ে করার কথা ছিল অভিনেতার । সেই মতো চলছিল প্রস্তুতিও । কিন্তু, শোনা যাচ্ছে, মৃত্যুর বেশ কিছু দিন আগে থেকেই চিড় ধরেছিল সুশান্ত-রিয়ার সম্পর্কে । নিজের আশপাশে নাকি ছায়ামূর্তি দেখতে পেতেন অভিনেতা । এমনকী, খুন হয়ে যাওয়ার ভয়ও গ্রাস করেছিল তাঁকে । সুশান্তের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিনেতার এই ভয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছিলেন না রিয়া । তাই মহেশ ভট্টর উপদেশেই রিয়া সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । যাতে আরও একা হয়ে পড়েছিলেন তিনি ।
