যেখানে ইতিমধ্যেই 9 কোটিরও বেশি ভোটার ইতিমধ্যেই সরাসরি এবং পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়ে দিয়েছেন, তাই বহু দশকের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ ভোটদানের সাক্ষী থাকতে চলেছে অ্যামেরিকা । কিন্তু পাশাপাশি এই ভোট মেরুকরণের মধ্যে দিয়ে তিক্তভাবে লড়া হচ্ছে, যেখানে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ সহ বহু সংস্থা পথেঘাটে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে ।
ভয়েজ অফ আমেরিকার (VOA) হোয়াইট হাউস বিউরো চিফ স্টিভেন হার্মান বলেন, “সবাই খুবই দুশ্চিন্তা রয়েছে । বিশেষ করে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ভোটার বা সেই নির্দলদের যাঁরা জো বিডেনকে সমর্থন করছেন । এমনকী সেইসব বিশিষ্ট রিপাবলিকানদের মধ্যেও, যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বীকে সমর্থন করতে এগিয়ে এসেছেন ।” তিনি আরও যোগ করেন, “মিশিগানের মতো স্টেটগুলিকে নিয়ে উদ্বেগ আছে, যেখানে লোকজন বন্দুক নিয়ে হাজির হতে পারে এবং তার ফলে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হতে পারে । কিন্তু এর ফলে মানুষের বাইরে বেরিয়ে ভোটদানের উৎসাহে খামতি হতে পারে, এমন কোনও ইঙ্গিত নেই ।”
গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের আগে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে হোয়াইট হাউসের চারপাশে এমনভাবে বেড়া দেওয়া হচ্ছে যাতে তার ওপর ওঠা না যায়, পাশাপাশি ওয়াশিংটন ডিসির বাণিজ্যিক বেসরকারি ভবনগুলোও যে কোনও ক্ষতির মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে । ডিসি থেকে সাংবাদিক স্মিতা শর্মার সঙ্গে আলাপচারিতায় হার্মান বলেন, “এমনও উদ্বেগ রয়েছে যে কিছু ঘটনা ঘটতে পারে । সেটা মঙ্গলবার রাতে নয়, বরং বুধবার রাতে, যখন স্পষ্ট হয়ে যাবে যে কী হতে চলেছে । মানুষ রাস্তায় নামতে পারেন । মাত্র কয়েকজন মানুষই ইন্ধন জোগাতে পারে, যেমনটা আমরা এই বছরের বিক্ষোভগুলোয় দেখেছি । যা অতি বাম ও অতি দক্ষিণ – দুই দিক থেকেই বিপত্তির কারণ হতে পারে ।”
হার্মান বলেন, “হোয়াইট হাউসের চারপাশের রাস্তায় আমরা দেখতে পাচ্ছি, এমন বেড়া দেওয়া হচ্ছে, যাতে জানলা ভাঙা ও আগুন লাগানোর মতো ঘটনা এড়ানো যায় । যেমনটা আমরা এবছরের গোড়ার দিকে দেখেছি । অনেক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে । কিন্তু সামনের দিনগুলোতে বিপুল গণবিক্ষোভ দেখা যাবে, এমন কোনও ইঙ্গিত নেই । কিন্তু যে কোনও জায়গার ঘটনাই নজরে আসবে ।” পাশাপাশি হার্মান এও বলেন যে, ভোটের ফল এবং জয়ী প্রার্থী কত ব্যবধানে জিতলেন, তার ওপরেও অনেক কিছু নির্ভর করবে ।
হার্মান বহু বছর ধরে অ্যামেরিকার ভোট ও রাজনীতিকে পর্যবেক্ষণ করেছেন । তিনি জানালেন,“ভোটপর্ব কতটা নিখুঁত হল, তার ওপরে পুরো ফলাফল নির্ভর করবে । যদি পেনসিলভেনিয়া বাদ দিয়েই জো বিডেন 270টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়ে যান, তাহলে নাটকের বেশিরভাগটাই শেষ হয়ে যাবে । যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি তৎক্ষণাৎ ভোটের ফল চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাবেন । তিনি মনে করেন যে, ভোটের দিনের সন্ধেবেলাই আমাদের হাতে ফলাফল চলে আসা উচিত, যদিও অ্যামেরিকার নির্বাচনের ইতিহাসে এটা সবসময়ই ব্যতিক্রমী ঘটনা ।” ভোটের ফল অথবা স্পষ্ট ইঙ্গিত মার্কিন সময় অনুযায়ী 4 নভেম্বর সকালে জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে । কিন্তু এতে তিক্ত আইনি লড়াই শুরু হতে পারে, যেমন 2000 সালে জর্জ বুশ ও আল গোরের মধ্যে হয়েছিল । যদিও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের মতো সংস্থার বিজয়ীর নাম ঘোষণার দিকে নজর রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ । এবং তারপরেই বেশিরভাগ সংবাদ চ্যানেল সেটা ঘোষণা করবে ।