পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / opinion

Anubrata Mondal বল্লু থেকে কেষ্ট, পর্দা আর বাস্তব 29 বছর পর মিলেমিশে একাকার

1993 সালে সঞ্জয় দত্তের (Sanjay Dutt) খলনায়ক রিলিজ করেছিল ৷ সেই সিনেমায় খলনায়ক বল্লুকে ধিক্কার জানিয়েছিল জনতা ৷ 29 বছর পর সেই ছবিই ফিরল বাস্তবের মাটিতে ৷ সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেফতার হয়ে একই ধিক্কার পেলেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) কেষ্ট ৷ লিখেছেন ইটিভি ভারতের সঞ্জীব গুহ ৷

Khalnayak Sanjay Dutt Reel Repeated through TMCs Anubrata Mondal Reality after 29 Years
Anubrata Mondal বল্লু থেকে কেষ্ট, পর্দা আর বাস্তব 29 বছর পর মিলেমিশে একাকার

By

Published : Aug 12, 2022, 9:09 PM IST

কলকাতা, 12 অগস্ট : খলনায়ক৷ গত শতাব্দীর শেষ দশকে সুভাষ ঘাইয়ের তৈরি করা ব্লকবাস্টার সিনেমা ৷ 1993 সালে মুক্তি পাওয়া ওই সিনেমা সঞ্জয় দত্তের (Sanjay Dutt) ভক্তদের মধ্যে কার্যত গণহিস্টিরিয়া তৈরি করেছিল ৷ তার কারণ অবশ্য সুনীল-পুত্র নিজেই ৷ সিনেমাতেও তাঁকে জেলে যেতে হয়েছিল আর বাস্তবেও ৷

সঞ্জয় 1993 সালের এপ্রিলে টেররিস্ট অ্যান্ড ডিসরাক্টিভ অ্যাক্টিভিটিস (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট বা টাডা আইনে (TADA Act) গ্রেফতার হয়েছিলেন ৷ তার মাসখানেক পরই রিলিজ করে খলনায়ক ৷ পর্দা থেকে বাস্তব, সেই সময় সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল ৷ মিডিয়ায় প্রচারও হয়েছিল মারাত্মকভাবে ৷

29 বছর পর সেই দৃশ্যই ফিরে এল বাস্তবের মাটিতে ৷ চূড়ান্ত নাটকীয় ভাবে, টানটান উত্তেজনার মধ্যে গ্রেফতার করা হল দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে (Trinamool Congress Leader Anubrata Mondal) ৷ বীরভূমে নাকি যাঁর কথায় কার্যত বাঘে-গরুতে একঘাটে জল খায় ৷ আবার তৃণমূল কংগ্রেসে তিনি নাকি নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ছাড়া কাউকেই গুরুত্ব দেন না ৷

বৃহস্পতিবার বোলপুরে তাঁর বাড়ির ঠাকুরঘর থেকে নিশ্ছিন্দ্র নিরাপত্তার মধ্যে বের করে নিয়ে গেল সিবিআই (CBI) ৷ চারিদিকে তখন ভিড় জমে গিয়েছেন ৷ কারও চোখে-মুখে উদ্বেগ, কেউ বা আনন্দিত ৷ সিবিআই অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য ওইদিন সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে যে অপারেশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা কোনও বলিউডি চিত্রনাট্যের চেয়ে কম নয় ৷

সুভাষ ঘাই পর্দায় দেখিয়েছিলেন যে বল্লু (সঞ্জয় দত্তের চরিত্রের নাম)-র প্রতি মানুষের রাগ-ক্ষোভকে ৷ বৃহস্পতিবার কখনও বীরভূমে, কখনও আসানসোল আদালতের সামনে সেই ছবিই বারবার দেখা গেল ৷ কেউ গরু চোর বলে কটাক্ষ করলেন ৷ কেউ আবার জুতো দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন ৷

এই ক্ষোভের আঁচ অবশ্য আগেই পাওয়া গিয়েছিল ৷ সোমবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital) চিকিৎসা করাতে আসেন অনুব্রত ৷ ভেবেছিলেন তাঁকে ভর্তি করে নেওয়া হবে ৷ কিন্তু তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করেই ছেড়ে দেন ডাক্তাররা ৷ সেদিন হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময়ও অনেকে তাঁকে গরু চোর বলে কটাক্ষ করেছিলেন ৷

সেদিনই স্পষ্ট হয়েছিল যে অনুব্রতর ভাগ্যে ঠিক কী হতে চলেছে ৷ কারণ, সেদিন তিনি সিবিআইয়ের হাজিরা এড়িয়ে এসএসকেএমে গিয়েছিলেন ৷ তৃণমূল যে তাঁর পাশে নেই, সেটা সেদিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ৷

সুভাষ ঘাইয়ের সিনেমায় বল্লুর 20 বছরের জেল হয়েছিল ৷ অনুব্রতর এখনও তা হয়নি ৷ সবে গ্রেফতার হয়েছেন ৷ এখনও তিনি গরুপাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত ৷ আদালতে তাঁর অভিযোগের বিচার হয়নি ৷ কিন্তু তার আগেই বল্লুর সঙ্গে কেষ্টর (এই নামে অনুব্রতকে চেনে রাজ্য রাজনীতি) ভাগ্য মিলে গিয়েছে ৷ বল্লু জেলে যাওয়ার উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন অত্যাচারিতরা ৷ আর অনুব্রত গ্রেফতার হতেই বাংলাজুড়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীরা উৎসবে মেতে উঠেছেন ৷ যা আগে কোনও নেতার ক্ষেত্রে দেখা যায়নি ৷ স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে, এত রাগ-ক্ষোভ সাধারণের মনে অনুব্রতর জন্য ছিল !

তবে বল্লু ও কেষ্টর মধ্যে অমিলও অনেক ৷ পর্দায় বল্লুর প্রেমিকা গঙ্গা (মাধুরী দীক্ষিত) ছিল ৷ পুলিশ বন্ধুও (জ্যাকি শ্রফ) ছিল ৷ কেষ্টর সেসব আছে বলে এখনও পর্যন্ত শোনা যায়নি ৷ আর সিনেমার সঞ্জয় চেয়েছিলেন ভালোর পথ ধরতে ৷ কিন্তু অনুব্রতও কি তাই চাইবেন ? উত্তর লুকিয়ে সময়ের গর্ভে ৷

আরও পড়ুন :সাধারণের এত রাগ-ক্ষোভ জমা ছিল অনুব্রতর বিরুদ্ধে !

ABOUT THE AUTHOR

...view details