স্বাধীন ভারতের প্রথম সাধারণ নির্বাচনের পর দেশের সব থেকে বড় আইন প্রণয়নকারী সংস্থার আত্মপ্রকাশ ঘটে । আজ ভারতের সংসদ 70তম বর্ষে প্রবেশ করেছে । ভারতের সংসদের পথ চলার শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ড. রাজেন্দ্র প্রসাদের নেতৃত্বে ভারতের পথ চলা শুরু হয়েছিল । যাঁর কথা আজও স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে । তিনি বলেছিলেন, "আমি আশা করি সংসদ দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য সর্বোত্তম সুবিধা প্রদান করবে । সংসদের কার্যকলাপ একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে ।"
পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু সংসদকে বিশ্বের এক সপ্তামাংশ জনগণের ইতিহাস তৈরির একটি অসাধারণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন । লোকসভার প্রথম অধ্যক্ষ গণেশ বাসুদেব মাভলঙ্কার সংসদীয় ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে উঁচুতে তুলে ধরার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন । বিশ্বখ্যাত গার্ডিয়ান 1954 সালে ভারতীয় সংসদের প্রশংসা করে লিখেছিল, পণ্ডিত নেহরু একে গোটা এশিয়ার একটি স্কুল হিসেবে দাবি করতে পারেন । একটা কথা স্পষ্ট ভাবে বলা চলে, এই বাড়ির প্রতিটি জনগণ সে সময় পুরোপুরি জনসেবায় নিবেদিত ছিলেন ।
সেই সময় সংসদ এক অনন্য দূরদর্শিতার পরিচয় বহন করেছিল । সংসদের সদস্যরা অনুভব করতেন, আইনসভার কোনও রূপ অবক্ষয় গোটা গণতন্ত্রের পতন ডেকে আনবে । নিজেদের রাজনৈতিক চিন্তা ধারাকে সরিয়ে রেখে প্রতিটি সংসদ সদস্য একত্রিত হয়ে দোষী সদস্যদের অপসারিত করতে এগিয়ে আসতেন । কংগ্রেস সাংসদ ফিরোজ গান্ধি সংসদে উত্থাপত করেছিলেন মুদগাল নামে এক সাংসদের দুই হাজার টাকা নেওয়ার প্রসঙ্গ । ছুড়ে দিয়েছিলেন প্রশ্ন । মুদগালকে কংগ্রেস থেকেও ভর্ৎসনা করা হয়েছিল । শেষ পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেহরু 1951 সালের সেপ্টেম্বর তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করেন । এভাবেই নেহরু সংসদের পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন ।
আরও পড়ুন :নির্বাচনের সময় মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ যথাযথ ছিল না : রাজ্যপাল
কিন্তু, মহান নেতাদের দ্বারা তৈরি সেই মূল্যবোধগুলি 17 টা সাধারণ নির্বাচনের পর কোথায় যেন অদৃশ্য হয়ে গেল । সংসদ থেকে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা সর্বত্র আইনত অপরাধীদের উপস্থিতিতে ভরে গিয়েছে । একাধিক সাংসদ বিধায়কের নামে রয়েছে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ।