পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / lifestyle

সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর খাবার, উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্র - খাদ্যের ব্যবস্থার মাধ্যমে  স্বাস্থ্যসঙ্কটের মোকাবিলার উদ্যোগ কেন্দ্র নিয়েছে

ধান, ডাল, সবজিতে প্রয়োগ করা হয়, এমন 27 ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক কীটনাশক নিষিদ্ধ করে একটি খসড়া আইন প্রকাশ করেছে মোদি সরকার । আপত্তি জানানোর জন্য 45 দিন সময় দিয়েছে কেন্দ্র ।

healthy food
healthy food

By

Published : May 27, 2020, 6:01 PM IST

খাদ্য ও স্বাস্থ্য হল পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার, তা সেখানকার ভৌগলিক সীমা যা-ই হোক না কেন । খাদ্যের ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসংকটের মোকাবিলা করার যে উদ্যোগ সম্প্রতি কেন্দ্র নিয়েছে, তা প্রশংসার যোগ্য । ধান, ডাল, সবজিতে প্রয়োগ করা হয়, এমন 27 ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক কীটনাশক নিষিদ্ধ করে একটি খসড়া আইন প্রকাশ করেছে মোদি সরকার । আপত্তি জানানোর জন্য 45 দিন সময় দিয়েছে কেন্দ্র । সেইগুলি পর্যালোচনা করে জুলাইতে চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়া হবে । এই তালিকায় আছে এমন রাসায়নিকগুলি আগেই বাতিল করেছে বহু দেশ । 63টি দেশ এর মধ্যেই কার্বোফুরান নিষিদ্ধ করেছে, যা মৌমাছি ও পাখিদের পক্ষে ক্ষতিকর । 45টি দেশ ডাইক্লোফেনাক বন্ধ করেছে, 35টি দেশে বন্ধ মেথোমিল, 32টি দেশে অ্যাসিফেট এবং 30টি দেশ কুইনালফসকেও নিষিদ্ধ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেছে ।

কৃষকরা ফল, সবজি এবং বিভিন্ন ফসলে পোকামাকড়ের হানা রুখতে যে কীটনাশক স্প্রে করছেন, তার অংশ গ্রাহকদের শরীরে ঢুকছে এবং তাঁদের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে । বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন, খাদ্যদ্রব্যের উপর ছড়ানো বিষ কঠিন অসুখ তৈরি করবে । চমকে দেওয়ার মতো বিষয় হল, এই রাসায়নিকের অবশিষ্টাংশ ক্যানসার বা হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার জন্যও দায়ি । রাষ্ট্রসংঘ কয়েকদিন আগেই ঘোষণা করেছিল, বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত কীটনাশক বছরে প্রায় দুই লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে । প্রশাসনের সঙ্গে সদ্ভাব রেখে ওইসব সংস্থাগুলি বছরের পর বছর ধরে পার পেয়ে যাচ্ছে । এই তিক্ত বিষয়টি থেকে অব্যহতি পেতে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতেই হবে ।

রাজ্যগুলিকে এই নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বলবৎ করতে হবে । কেন্দ্রের তাদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত এবং তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করে এগিয়ে যাওয়া উচিত । বিপুল পরিমাণে সবজি উৎপাদন হয়, ঝাড়খণ্ডের রাঁচির কাছে এমন একটি জায়গায় করা গবেষণায় দেখা হচ্ছে , কীভাবে নির্বিচারে কীটনাশক ব্যবহার করা হয় । কতটা বিষাক্ত না বুঝে বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করতে গিয়ে মধ্য মহারাষ্ট্রের যাভতমল জেলায় 60জনেরও বেশি কৃষকের মৃত্যু হয়েছে ।

এন্ডোসালফানের নির্বিচার ব্যবহারে কেরালায় জীববৈচিত্রে প্রভাব পড়েছে । মাছ, ব্যাঙ, সাপ, বাদুড় থেকে অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা মারা যাচ্ছে । এই দুঃস্বপ্ন ভোলার নয় । মোনোক্রোটোফস বা অক্সিফ্লুওরফেনের মতো কীটনাশক মজুত করা আর পরিবহনই শুধু নিষিদ্ধ করলে হবে না, তাদের উৎপাদনও বন্ধ করতে হবে । 27টি কীটনাশক নিষিদ্ধ করাই যথেষ্ট নয় । বিশেষজ্ঞদের দুশ্চিন্তা, এদেশের এমন 100টিরও বেশি কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, যা বিদেশে নিষিদ্ধ । কৃষকদের বুঝিয়ে বলতে হবে যাতে একটা নির্দিষ্ট কীটনাশক প্রয়োগের পর ফসল তোলার জন্য তাঁরা অপেক্ষা করেন । বলা হয়, ন্যানো-কেমিকেল ভিত্তিক কীটনাশকের ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট সময় পর তার অংশবিশেষ থেকে বিপদ হয় না । এইব্যাপারে গণচেতনা বাড়িয়ে তুলতে হবে । কৃষি শ্রমিকের ঘাটতির জন্য, গ্লিফোসেটের মতো পণ্য ব্যাপকভাবে আগাছা মারার জন্য ব্যবহার হয় । এটা পুরো ফলনের উপর ছড়িয়ে শস্যকে বিষাক্ত করে শুধু স্বাস্থ্যবিপর্যয়ই ডেকে আনা হয় না, পাশাপাশি মাটিকে ব্যবহারের অযোগ্য করে তুলে জলদূষণ সৃষ্টি করা হয় । নিরাপদ কৃষি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে একটা আইনগত কাঠামো তৈরি করে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে । বিষাক্ত কীটনাশকের ব্যবহার সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে । যাতে দূষণ না হয় । প্রকৃতি ও মাটির পুনরুজ্জীবন হয় এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে ।

For All Latest Updates

TAGGED:

Healthy food

ABOUT THE AUTHOR

...view details