যতই বাজারে রোজ রোজ নতুন ফ্যাশন আসুক, মহিলাদের জন্য ভারতীয় কিছু পরিধান এমনও আছে যা কখনও পুরোনো হবে না । উৎসব হোক বা কোনও সমারোহ, শাড়ি, লেহেঙ্গা এবং সালোয়ার স্যুট হল এমনই কিছু পরিধান যা ফিউশন পোশাক হিসেবেও সকলে পরতে পছন্দ করেন আবার সকলেরই ভালো লাগে ।
ভারতীয় মহিলাদের চিরন্তন সুন্দর পরিধান
উৎসবের মরশুম এলেই বাজার উজ্জ্বল হয়ে ওঠে । বিশেষ করে মহিলাদের জন্য ভারতীয়, পশ্চিমী এবং ইন্দো—ওয়েস্টার্ন পোশাকে, বাজার একেবারে সেজে ওঠে । প্রতি বছরের মতো এবারও পরিবর্তিত ফ্যাশন অনুসারে অনেক রকম ডিজ়াইনের পোশাক বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু কিছু এমন পোশাকও রয়েছে যা চিরন্তন সুন্দর অর্থাৎ কখনও ফ্যাশন থেকে চলে যায় না এবং কোনও ফিউশন বা ট্রেন্ডের উপরও এরা নির্ভর করে থাকে না । শুধুমাত্র উৎসবই নয়, জীবনেরও যে কোনও বিশেষ দিন উদযাপনে, এই সব পোশাক যারা পরেন, তাঁদের ব্যক্তিত্ব আরও ঠিকরে বেরোয় । তাই জরুরি এটাই যে, এই সব পরিধান আপনার ওয়ার্ডরোব অর্থাৎ আলমারিতে যেন অবশ্যই থাকে । কিন্তু এই পোশাকগুলি কী কী, এবার জেনে নেওয়া যাক ।
শাড়ি
শাড়ি হল এমন একটি ভারতীয় পারম্পরিক পরিধান যা কখনও ফ্যাশনের বাইরে যাবে না বরং ফ্যাশন বিশ্লেষকরা সবসময় শাড়িকে সব থেকে স্টাইলিশ পোশাকের তালিকায় সবার উপরেই রাখেন । মহিলা যুবতী হোন বা বয়স্ক, শাড়ি এমনই এক পোশাক যা একই সময়ে তাঁদের গরিমাময়ী অথচ স্টাইলিশ লুক দেবে । শাড়ি মোটামুটি প্রতে্যক ভারতীয় মহিলারই আলমারির একটা অংশ । যদিও পরিবর্তিত সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফিউশন এবং ফ্যাশনের কারণে অনেক আলাদা রকম আর স্টাইলিশভাবে শাড়ি পরার চল শুরু হয়েছে । তবুও পারম্পরিকভাবে শাড়ি পড়ার ব্যাপারটাই আলাদা ।
সালোয়ার কামিজ
শাড়ির মতো সালোয়ার কামিজও ভারতীয় মহিলাদের আলমারির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । আগেকার দিনে সালোয়ার কামিজকে পাঞ্জাবি মহিলারা বা মুসলিম মহিলাদেরই পরিধেয় পোশাক বলে মানা হত । কিন্তু, এই পোশাককে খুবই সুবিধাজনক তথা আরামদায়ক বলে মানা হয় তাই বর্তমান সময়ে এটি প্রতে্যক বয়স, শ্রেণি তথা সম্প্রদায়ের মহিলাদের প্রথম পছন্দ বলেই চিহ্নিত । সালোয়ার কামিজ এমনই একটি পরিধান যা অনেক ধরনের স্টাইলে বাজারে পাওয়া যায় যেমন পাতিয়ালা সালোয়ারের সঙ্গে ছোট কুর্তি আর সঙ্গে ভারি কাজের ওড়না, চৌখুপি নকশায় সাজানো কুর্তা যা চুড়িদার, প্যান্ট তথা সালোয়ার, সব কিছুর সঙ্গেই পরা যায় । সালোয়ার কামিজেরই একটি রূপ হল আনারকলি । এটি হাঁটু ছাড়িয়ে লম্বা ঝুলের হয়, আবার কখনও কখনও দৈর্ঘে্য মাটি ছোঁওয়া লম্বা ঝুলেরও হয় । এই ধরনের কুর্তা উৎসব-অনুষ্ঠানে পরার জন্য সবসময়ই ভারতীয় মহিলাদের প্রথম পছন্দ । আনারকলিকে চুড়িদার, পাজামা, সালোয়ার তথা শারারা, সব কিছুর সঙ্গেই পরা যেতে পারে।
লেহেঙ্গা
বিয়ে হোক, পারিবারিক কোনও সমারোহ হোক বা হোক কোনও উৎসব, লেহেঙ্গা সবসময়ই সব বয়সের ভারতীয় স্ত্রীদের পছন্দের পরিধান । বাজারে সব বয়সের মহিলাদের, সব ধরনের অনুষ্ঠানে পরার জন্য বিভিন্ন ধরনের লেহেঙ্গা পাওয়া যায় । কনের জন্য গাঢ় লাল রঙের, জরির কাজ করা, সুতোর কাজ করা ভারি লেহেঙ্গা হয় । আবার যে কোনও অনুষ্ঠানে পরার জন্য ভারি কিংবা হালকা সুতোর কাজ করা সিল্ক, শিফন এমনকী সুতি কাপড়েরও লেহেঙ্গা বাজারে মেলে । বাজারে সকলের পছন্দের এবং সকলের পকেটের রেস্ত অনুযায়ী লেহেঙ্গা পাওয়া যায় ।
এই সমস্ত চিরন্তন পোশাক সবসময়ই ভারতীয় মহিলাদের আলমারিতে মজুত থাকে আর উৎসব-অনুষ্ঠানে পরার জন্য এগুলিই তাঁদের প্রথম পছন্দ হয় । যে মহিলাদের আলমারিতে এই সব পোশাক মজুত থাকে না, তাঁদেরও উচিত, নিজেদের আলমারিতে এই সব পোশাক রাখা। কারণ যে কোনও সময়, যে কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানে, বেশি কিছু চিন্তাভাবনা না করেই এই সব পোশাক পরা যেতে পারে ।