কলকাতা, 31 ডিসেম্বর : হাসপাতালে ছেলেকে বসিয়ে ওষুধ কিনতে গেছিলেন মা ৷ ফিরে এসে আর দেখতে পাননি ৷ তড়িঘড়ি পুলিশে অভিযোগ করেন ৷ শিশু চুরি অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় পুলিশ । নাদিয়াল থানা এলাকার সবকটি এন্ট্রি এবং এক্সিট পয়েন্টে পুলিশ পাহারা শুরু হয় । পাশাপাশি ঘোষণা করা হয় স্থানীয় মসজিদগুলি থেকে । আর তাতেই উদ্ধার হল চুরি যাওয়া শিশু । ঘটনায় 2 জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।
কলকাতায় শিশু চুরি গ্যাং সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ ৷ শিশু চুরির পর বিক্রি করে দেওয়া হয় । অনেক সময়েই নিঃসন্তান দম্পতিরা কেনেন শিশু । বছর কয়েক আগে বেশ কয়েকটি নার্সিংহোমের নাম জড়িয়ে ছিল শিশু বিক্রি চক্রে । জানা যায়, লাখ লাখ টাকায় বিক্রি হয় শিশু । সেই চক্রের পরদা ফাঁস হয়েছিল । অভিযোগ, অনেক সময়ই আবার চুরি করা শিশুদের কোলে নিয়ে রাস্তায় ভিক্ষা করে অনেক মহিলা । তাদের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয় । অভিযোগ, শিশু চোররা ঘুরে বেড়ায় হাসপাতালগুলিতে । গতবছর আর জি কর হাসপাতাল থেকে চুরি যায় এক শিশু । যে মহিলা ওই শিশু চুরি করেছিল তার CCTV ফুটেজও পাওয়া গেছিল । কিন্তু তারপর তার কোন হদিস পাওয়া যায়নি ।
সন্তানকে ফিরে পেয়ে স্বস্তিতে দম্পতি একইরকম ঘটনা ঘটে গতকাল । দুপুর আড়াইটে নাগাদ নাদিয়াল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক দম্পতি । তাঁদের নাম আহমেদ খান এবং শবনম পারভিন । তাঁরা অভিযোগ করেন, সোমবার সকালে শবনম তাঁর তিন বছরের শিশুপুত্র এবং ছয়মাসের শিশুকন্যাকে ডাক্তার দেখাতে গার্ডেনরিচ স্টেট জেনেরাল হাসপাতালে গেছিলেন । এরপর তিনি শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে ওষুধ কিনতে যান । একটা জায়গায় বসিয়ে রেখেছিলেন শিশুপুত্রকে । ফিরে এসে ছেলেকে দেখতে পাননি ৷
এরপরই তিনি দ্রুত ফোন করেন আহমেদকে । দু'জনে চলে আসেন নাদিয়াল থানায় । পুলিশ নাদিয়াল থানা এলাকার সবকটি এন্ট্রি পয়েন্টে শুরু করে তল্লাশি । পাশাপাশি স্থানীয়দের সাহায্য নেওয়ার জন্য মসজিদগুলি থেকে ঘোষণা করা হয় এই শিশু চুরির বিষয়ে । ফলে এগিয়ে আসে স্থানীয় মানুষজনও । তাতেই আসে সাফল্য । সাড়ে তিনটে নাগাদ নাদিয়াল থানা এলাকার সাতঘরা লেন থেকে স্থানীয়দের সাহায্যে উদ্ধার করা হয় ওই শিশুকে । গ্রেপ্তার করা হয় 19 বছরের শাবানা বিবি এবং কুড়ি বছরের সাবিনা বিবিকে । জেরায় দু'জন স্বীকার করেছে, তারা একটি শিশু চুরি চক্রের সদস্য । জানিয়েছে, ওই শিশুকে চুরি করে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল । এই চক্রে আরও কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে । পুলিশের ধারণা, এই দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া যাবে বড়সড় শিশু চুরি চক্রের খোঁজ ।