ওয়াশিংটন, 29 অক্টোবর: যুদ্ধ বিরতির পথে হাঁটতে ইজরায়েলের উপর চাপ বাড়ল। গাজার বাসিন্দাদের মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে রাষ্ট্রসঙ্ঘে প্রস্তাব পাশের পরই লন্ডন থেকে শুরু করে নিউইর্য়ক, বার্লিন এবং রোমের মতো বড় শহরে মিছিল করলেন প্যালেস্তাইনের সমর্থকরা। তাঁদের দাবি, ইজরায়েলকে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। শুধু নিউইর্য়কেই পথে নামেন প্রায় 7 হাজার মানুষ। নিউইর্য়ক পোস্ট জানিয়েছে ব্রুকলিন সেতুর উপরে মিছিল করে নিজেদের দাবিতে সরব হন প্যালেস্তাইনের সমর্থকরা।
প্যালেস্তাইনকে মুক্ত করা থেকে শুরু করে শিশুদের হত্যা বন্ধ করার দাবি জানান সমর্থকরা। তাঁদের হাতে ছিল বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। তার একটিতে লেখা, 'প্যালেস্তাইনকে মুক্ত করো'। এছাড়া গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করার দাবিতেও আলাদা প্ল্যাকার্ড ছিল। লন্ডনের এক প্যালেস্তাইনের সমর্থকের সঙ্গে কথা বলেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
তিনি বলেন,"আমার ভয় হচ্ছে, এবার প্যালেস্তাইন বলে কোনও দেশই হয়তো আর মানচিত্রে থাকবে না। এখন শুধু প্যালেস্তাইনকে মুক্তির দাবি জানালেই হবে না। দেশটির অস্বস্তি রক্ষার দাবি করারও সময় এসে গিয়েছে।" নিউইর্য়কের মিছিলে পা মেলেন বছর চব্বিশের এক যুবক। নিউইর্য়ক টাইমসকে তিনি বলেন,"আমার মনে হয় এবার ইজরায়েলের সংঘর্ষ বিরতি করার সময় এসে গিয়েছে। যে কোনও উপায়ে আমাদের মুক্তি প্রয়োজন।"
আরও পড়ুন:হামাসের উল্লেখ নেই! রাষ্ট্রসঙ্ঘের আনা গাজা-প্রস্তাবে ভোট দিল না ভারত
ইজরায়েল এখনই যুদ্ধ বন্ধ করার কথা ভাবছে এমন কোনও ইঙ্গিত অবশ্য মেলেনি। একদিন আগে রাষ্ট্রসঙ্ঘে গাজা সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে। সেখানে গাজায় অবিলম্বে মানবাধিকার রক্ষার দাবি উঠেছে। এই প্রস্তাবে 7 অক্টোবর হওয়া হামাসের হামলার নিন্দা করা হয়নি। ভারত ভোট না দিলেও বেশিরভাগ সদস্য দেশ প্রস্তাবের পক্ষে থাকায় তা পাশ হয়ে যায়। এই বিষয়টি মানবজাতির পক্ষে লজ্জার বলে ব্যাখ্যা করেছে ইজরায়েল।
শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই গাজায় একাধিকবার স্থলাভিযান করেছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ। আকাশ পথে হামলার পাশাপাশি হামাসকে আরও কোণঠাসা করতেই এমন পদক্ষেপ। এরইমধ্যে ইজরায়েলের দাবি, তাদের হামলায় হামাসের এরিয়াল ইউনিটের প্রধান ইসাম আবু রুকবেহ নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, উত্তর গাজার বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ বার্তা জারি করেছে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। বাহিনীর প্রধান সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে বলেছেন, "হামাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে গাজার উত্তর দিকে যাঁরা আছেন তাঁরা অবিলম্বে দক্ষিণ দিকে চলে যান। হামাস যেভাবে নির্বিচারে হত্যা থেকে শুরু করে ধর্ষণ করছে তার হাত থেকে বাঁচতে এটাই একমাত্র পথ।" এই বিষয়টিকে সাধারণ সতর্ক বার্তা হিসেবে দেখলে ভুল হবে বলেও তিনি জানান। তাঁর কথায়," এখন আর বেশি ভাবার সময় নেই। প্রাণে বাঁচতে গাজার উত্তর দিকে যাঁরা আছেন তাঁরা আর দেরি না করে দক্ষিণে চলে যান।"
আরও পড়ুন:ইজরায়েলি বিমানহানায় নিহত হামাসের এরিয়াল ইউনিটের প্রধান