ঢাকা, 1 জানুয়ারি: শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিল একটি আদালত ৷ ওপার বাংলায় সাধারণ নির্বাচনের আগে এই ঘটনা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর সমর্থকরা ৷
83 বছর বয়সি অর্থনীতিবিদ তাঁর দারিদ্র বিরোধী প্রচারের জন্য 2006 সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিলেন ৷ 1983 সালে তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ক্ষুদ্রঋণের আবাস হিসাবে গড়ে তুলে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি । ইউনূস এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত অন্যতম ফার্ম গ্রামীণ টেলিকমের তিনজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয় ৷ তাঁরা তাঁদের কোম্পানিতে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ ছিল । থার্ড লেবার কোর্টের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে ইউনূসকে এবং সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আরও তিনজন কর্মীকে আইন লঙ্ঘনের দায়ে ছয় মাসের সাধারণ বা শ্রমবিহীন কারাদণ্ডের আদেশ দেন ৷ ইউনূস কাঠগড়ায় থাকাকালীন রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, "তাঁর বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে ।"
বিচারক তাঁদের প্রত্যেককে বাংলাদেশের অর্থে 25,000 টাকা করে জরিমানাও করেছেন ৷ যা না দিলে তাঁদের আরও 10 দিন জেল খাটতে হবে । রায় ঘোষণার পরপরই ইউনূস ও অন্য তিনজন কর্মী জামিনের আবেদন করেন, যা বিচারক তাৎক্ষণিকভাবে পাঁচ হাজার টাকার মুচলেকায় এক মাসের জন্য মঞ্জুর করেন । আইন অনুযায়ী চারজনই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করতে পারেন । বাংলাদেশে 7 জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে এই রায় এল । ইউনূসের সমর্থকরা এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেছেন ।
গত মাসে, শুনানির জন্য আদালতে উপস্থিতির পর ইউনূস গ্রামীণ টেলিকম বা বাংলাদেশে তাঁর প্রতিষ্ঠিত 50 টিরও বেশি সামাজিক ব্যবসায়িক সংস্থার থেকে লাভের দাবি প্রত্যাখ্যান করেন । সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "এগুলো আমার ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য ছিল না ।" তাঁর আইনজীবীরা মামলাটিকে যোগ্যতাহীন, মিথ্যা এবং অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেন এবং দাবি করেন যে, এটি শুধুমাত্র বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে ইউনূসকে হয়রানি ও অপমান করার লক্ষ্যে ছিল ।